আমেরিকায় সরকার অচল বা শাটডাউন ঠেকাতে শেষ মুহূর্তে একটি অস্থায়ী তহবিল বিল মার্কিন কংগ্রেসে পাস হলেও তাতে ইউক্রেনের জন্য কোনো সহায়তার কথা উলেস্নখ নেই। বিষয়টিকে ভালোভাবে না নিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, 'প্রতিশ্রম্নতি অনুযায়ী ইউক্রেনকে প্রয়োজনীয় সব ধরনের সহায়তা দিয়ে যাবে আমেরিকা।' এমনকি মার্কিন মিত্ররা তার এই প্রতিশ্রম্নতির ওপর ভরসা রাখতে পারে বলেও জানিয়েছেন বাইডেন। সংবাদসূত্র : বিবিসি
মার্কিন কংগ্রেসে শেষ মুহূর্তের বাজেট চুক্তি থেকে কিয়েভের জন্য আরও সামরিক তহবিল বরাদ্দের বিষয়টি বাদ দেওয়ার পরও ইউক্রেনে মার্কিন সহায়তা অব্যাহত রাখার এই প্রতিশ্রম্নতি দেন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।
দিন দু'য়েক আগে মার্কিন সরকারের কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলোর কার্যক্রম আরও ৪৫ দিনের জন্য চালু রাখতে ও শাটডাউন এড়াতে একেবারে শেষ মুহূর্তে মার্কিন কংগ্রেসের উভয় কক্ষে তহবিল বিল পাস হয়। তবে সেখানে কিয়েভের জন্য সামরিক সহায়তার ৬০০ কোটি মার্কিন ডলার অন্তর্ভুক্ত ছিল না। যদিও এটিই ছিল হোয়াইট হাউসের অন্যতম শীর্ষ অগ্রাধিকার।
কট্টরপন্থি রিপাবলিকানরা ইউক্রেনে আরও সামরিক সহায়তা দেওয়ার বিরোধিতা করে আসছেন। অনেকে আবার এ বিষয়ে প্রকাশ্যে প্রেসিডেন্ট বাইডেনের বিরোধিতাও করছেন। এই পরিস্থিতিতেই রোববার ইউক্রেনে মার্কিন সহায়তা অব্যাহত রাখার অঙ্গীকার করেন বাইডেন। এদিন প্রেসিডেন্ট বাইডেন বলেন, ইউক্রেন মার্কিন সহায়তার ওপর 'বিশ্বাস রাখতে পারে'। তার ভাষায়, 'আমরা কোনো অবস্থাতেই ইউক্রেনে মার্কিন সহায়তাকে বাধাগ্রস্ত হতে দিতে পারি না।'
ইউক্রেন যুদ্ধের তহবিল পুনরুদ্ধারের বিষয়ে মার্কিন ডেমোক্রেটিক এই প্রেসিডেন্ট বলেন, 'আমি (ইউক্রেনকে) আশ্বস্ত করতে পারি, আমরা তাদের পাশে থাকব। আমরা সেখানে আমাদের কাজ সম্পন্ন করব। আমি আমাদের আমেরিকান মিত্রদের আশ্বস্ত করতে চাই... আপনারা আমাদের সহায়তার ওপর ভরসা করতে পারেন, আমরা সরে যাব না।'
টানা দেড় বছরের বেশি সময় ধরে ইউক্রেনে সামরিক অভিযান চালাচ্ছে রাশিয়া। রুশ এই অভিযান শুরু থেকেই পূর্ব ইউরোপের এই দেশটিকে অস্ত্রসহ সামরিক সহায়তা দিয়ে আসছে আমেরিকাসহ পশ্চিমা দেশগুলো। অপরদিকে, ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযানে সহায়তা না করতে চীনসহ প্রতিদ্বন্দ্বী ও প্রতিপক্ষ দেশগুলোকে সতর্ক করে আসছে আমেরিকা।
২০২২ সালের ২৪ ফেব্রম্নয়ারি রাশিয়া পূর্ণ মাত্রায় সামরিক অভিযান শুরু করার পর থেকে আমেরিকা এরই মধ্যে ইউক্রেনে প্রায় চার হাজার ৬০০ কোটি মার্কিন ডলারের সামরিক সহায়তা দিয়েছে। তবে প্রেসিডেন্ট বাইডেন ইউক্রেনের জন্য আরও দুই হাজার ৪০০ কোটি ডলার ছাড় করার অনুরোধ করেছেন। এছাড়া সাম্প্রতিক মাসগুলোতে ইউক্রেনে অত্যাধুনিক সামরিক সরঞ্জাম পাঠিয়েছে আমেরিকা। যার মধ্যে রয়েছে দূরপালস্নার ক্ষেপণাস্ত্র ও আব্রামস ট্যাংক। বর্তমানে এসব সরঞ্জাম দিয়েই রাশিয়ার দখলে চলে যাওয়া ইউক্রেনের দক্ষিণের বিভিন্ন অঞ্চলে ধীরগতিতে পাল্টা আক্রমণ চালিয়ে যাচ্ছে ইউক্রেনীয় বাহিনী।
ইউক্রেনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, ইউক্রেনের জন্য 'মার্কিন সহায়তার প্রবাহ পরিবর্তন হবে না' এবং ৩০০ কোটি ডলারের মানবিক ও সামরিক সহায়তা শিগগিরই আসতে চলেছে। তবে কংগ্রেসের সিদ্ধান্তে 'চলমান কর্মসূচি' প্রভাবিত হতে পারে বলে ইউক্রেনীয় এই মন্ত্রণালয় স্বীকার করে নিয়েছে। এছাড়া ইউক্রেনের এমপি ওলেক্সি গনচারেঙ্কো স্বীকার করেছেন, স্থগিত তহবিল কিয়েভের জন্য উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।