বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪, ১৯ বৈশাখ ১৪৩১
চলতি বছর ভারতের লোকসভা নির্বাচনে কংগ্রেস গোটা দেশে ২৯০টি আসনে নিজের পুরো শক্তি দিয়ে একা লড়তে তৈরি। পাশাপাশি আরও ১০০টির মতো আসনে বিরোধী মঞ্চ 'ইনডিয়া'র শরিক দলগুলোর সমর্থন নিয়ে লড়তে চাইছে কংগ্রেস। দলীয় সূত্রের খবর, এর মধ্যে পশ্চিমবঙ্গের তিন থেকে পাঁচটি আসন রয়েছে। এই আসনগুলোতে ইনডিয়া'র শরিক দল তৃণমূল ও বামেদের সমর্থন পেলে কংগ্রেস জিততে পারে বলে দলের নেতাদের মত। এখন সবটাই নির্ভর করছে শরিক দলগুলো কোথায় কতগুলো আসন কংগ্রেসকে ছাড়তে রাজি হচ্ছে, তার ওপরে।
যে সব রাজ্যে কংগ্রেস ইনডিয়া'র শরিক দলগুলোকে সঙ্গে নিয়ে লড়তে চায়, গত সপ্তাহে দুই দিন ধরে কংগ্রেসের জাতীয় জোট কমিটি সেই সব রাজ্যের প্রদেশ কংগ্রেস নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেছে। তার আগে কংগ্রেস সভাপতি মলিস্নকার্জন খড়্গে ও রাহুল গান্ধী লোকসভা নির্বাচনের প্রস্তুতি নিয়ে প্রতিটি রাজ্যের সঙ্গে আলাদাভাবে বৈঠক করেছেন। এই দুই দফা বৈঠকের ভিত্তিতে কংগ্রেস নেতৃত্ব এবার রাজ্য ধরে ধরে আসন সমঝোতা নিয়ে আলোচনা শুরু করবেন।
কংগ্রেস নেতারা বলছেন, পশ্চিমবঙ্গ, মহারাষ্ট্র, বিহার, দিলিস্ন, পাঞ্জাব, তামিলনাড়ু, উত্তরপ্রদেশ, ঝাড়খন্ড, জম্মু-কাশ্মীরে ইনডিয়া'র শরিক দলগুলোর সমর্থনে কংগ্রেস ১০০টি আসনে লড়তে চাইছে। এর মধ্যে পশ্চিমবঙ্গে তিন থেকে পাঁচটি আসন রয়েছে। তৃণমূল নেতৃত্ব আগেই বলেছে, তারা এই মুহূর্তে কংগ্রেসের দখলে থাকা দু'টি আসন ছাড়তে রাজি। দিলিস্নতে আম আদমি পার্টির (আপ) সমর্থন নিয়ে পাঁচটি, পাঞ্জাবে ৮-৯টি আসনেও কংগ্রেস লড়তে তৈরি। অরবিন্দ কেজরিওয়াল এতগুলো আসন ছাড়তে রাজি হবেন কি-না, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। এর সঙ্গে তামিলনাড়ুতে ডিএমকে'র সমর্থন নিয়ে ৯-১১টি, উত্তরপ্রদেশে ১০-১৫টি, বিহারে ৯-১০টি, মহারাষ্ট্রে ২৪-২৬টি, ঝাড়খন্ডে ৯টি, জম্মু-কাশ্মীরে তিনটি আসনে কংগ্রেস আসন সমঝোতা করে শরিক দলের সমর্থনে লড়তে চাইছে। কংগ্রেস নেতারা মানছেন, এই ১০০টি আসনে শেষ পর্যন্ত কতগুলো জোট হবে, তা আসন সমঝোতা নিয়ে আলোচনার পরেই স্পষ্ট হবে।
প্রাথমিক পর্যালোচনা অনুযায়ী কংগ্রেস নেতৃত্ব মনে করছেন, গোটা দেশে ২৯০টির মতো আসনে কংগ্রেস নিজেই লড়বে। সেখানে কোনো আসন সমঝোতা হবে না বা তার সুযোগও নেই। এই ২৯০টির মধ্যে আবার ১৯০টির মতো আসনে কংগ্রেসের কাছে লড়াই করার মতো যথেষ্ট ভালো প্রার্থী ও আর্থিক রসদ দলের কাছে রয়েছে বলে কংগ্রেস শীর্ষ নেতৃত্বের ধারণা। এই তালিকায় মূলত ১০টি রাজ্য রয়েছে। এর মধ্যে কর্ণাটকের ২৮টি, তেলেঙ্গানার ১৭টি, গুজরাটের ২৬টি, হরিয়ানার ১০টি, আসামের ১৪টি, অন্ধ্রের ২৫টি, ছত্তিশগড়ের ১১টি, মধ্যপ্রদেশের ২৯টি, রাজস্থানের ২৫টি, হিমাচলের চারটি লোকসভা আসন রয়েছে। এর বাইরে উত্তর-পূর্বের বিভিন্ন রাজ্য, কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল, ওড়িশা, গোয়া, উত্তরাখন্ডের মতো রাজ্যেও কংগ্রেস একাই লড়বে। কেরালায় ইনডিয়া'র শরিক বাম দলগুলো থাকলেও সেখানেও কংগ্রেসকে একাই লড়তে হবে। এই ২৯০টি নিজের শক্তিতে ও ১০০টি আসনে শরিকদের সমর্থনে লড়াইয়ের পরে বাকি আসনে মূলত আঞ্চলিক দলগুলোর সঙ্গে বিজেপি বা এনডিএ'র শরিক দলগুলোর লড়াই হবে।
কংগ্রেস সূত্রের খবর, ১৪ জানুয়ারি থেকে রাহুল গান্ধীর 'ভারত ন্যায় যাত্রা' শুরু হচ্ছে। তার আগেই আসন সমঝোতা সেরে ফেলা হবে। মহারাষ্ট্র, বিহারের মতো রাজ্যে কথাবার্তা শুরু হয়েছে। এনসিপি নেত্রী সুপ্রিয়া সুলে বলেছেন, 'মহারাষ্ট্রে এনসিপি, কংগ্রেস, শিবসেনা কে কোন্ আসনে লড়বে, তা আগামী ১৪-১৫ জানুয়ারির মধ্যে আমরা ঘোষণা করে দেব।' তথ্যসূত্র : এবিপি নিউজ
Google News ফিড অনসরণ করুন
