শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

'সিস্টেম লস' কমাতে উদ্যোগ গ্যাসের সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত হোক

নতুনধারা
  ২৮ মার্চ ২০২৩, ০০:০০

অপচয়সহ যে কোনো ধরনের অনিয়ম পরিলক্ষিত হলে তা উদ্বেগের। ফলে এই ধরনের বিষয় আমলে নিয়ে যথাযথ পরিকল্পনা গ্রহণ ও তার বাস্তবায়ন জরুরি। সম্প্রতি পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবরে জানা গেল, ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকার আবাসিক খাতে গ্রাহক পর্যায়ে বিতরণের জন্য আরও ৪ লাখ ২০ হাজার প্রি-পেইড গ্যাস মিটার কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। জানা যাচ্ছে, প্রাকৃতিক গ্যাসের 'সিস্টেম লস' কমিয়ে গ্যাসের সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করতে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

আমরা মনে করি, যদি এই উদ্যোগের মধ্য দিয়ে গ্যাসের অপচয় রোধ হয় এবং সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত হয় তবে তা ইতিবাচক। ফলে সামগ্রিক বিষয় আমলে নিয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিশ্চিত করতে হবে সংশ্লিষ্টদেরই। এ বিষয়ও সামনে আসছে যে, রাজধানীতে লাইন-গ্যাস ব্যবহারকারীরা অনেক সময় গ্যাসের অপচয় করেন। এমনকি, কেউ কেউ দীর্ঘ সময় চুলা জ্বালিয়ে পানি গরমসহ অপ্রয়োজনীয় কাজও সারেন। এতে প্রাকৃতিক গ্যাসের প্রচুর অপচয় ঘটে। ফলে তা রোধে যথাযথ বাস্তবায়ন হোক এমনটি কাম্য।

লক্ষণীয়, সংশ্লিষ্টরা বলছেন, গ্যাসের সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত এবং ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকার আবাসিক খাতে গ্রাহক পর্যায়ে 'সিস্টেম লস' কমানোর উদ্দেশ্যে কেনা হচ্ছে প্রি-পেইড গ্যাস মিটার। জানা যাচ্ছে, ২০২৪ সালের মধ্যে এসব গ্যাস মিটার রাজধানীসহ ঢাকা জেলার ৪১টি থানা এলাকায় আবাসিক খাতের গ্রাহকদের মধ্যে বিতরণ করা হবে। এর মাধ্যমে সার্বিকভাবে প্রাকৃতিক গ্যাস ব্যবস্থাপনা ও তদারকি সংক্রান্ত ব্যয় কমিয়ে আনা সম্ভব হবে। সরকারের জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি একনেকে 'প্রি-পেইড গ্যাস মিটার স্থাপন (৩য় সংশোধিত)' প্রকল্পও সম্প্রতি অনুমোদন পেয়েছে। আমরা বলতে চাই, যে কোনো প্রকল্প অনুমোদনের পর তার যথাযথ বাস্তবায়ন নিশ্চিত করা দরকার। এর আগে বিভিন্ন সময়ে প্রকল্প বাস্তবায়নে অনিয়ম, ব্যয় বৃদ্ধিসহ নানা ধরনের অব্যবস্থাপনার অভিযোগ এসেছে। ফলে এই প্রকল্পের যথাযথ বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্টরা তৎপর হবে এমনটি কাম্য।

উলেস্নখ্য, পরিকল্পনা কমিশন সূত্রে জানা গেছে, প্রি-পেইড মিটারিং সিস্টেমে গ্যাস অপচয় রোধ, দক্ষ, সাশ্রয়ী, নিরাপদ ও টেকসই গ্যাস ব্যবহার নিশ্চিত করা এবং গ্যাসের সিস্টেম লস কমিয়ে ক্রমবর্ধমান চাহিদা পূরণ করা সম্ভব হবে। আর এসব কারণেই জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিভাগ এ প্রকল্পটি গ্রহণ করে ২০১৫ সালে। পরবর্তী সময়ে এ প্রকল্পটিতে এ পর্যন্ত তিনবার সংশোধনী প্রস্তাব আনা হয়েছে। আর প্রকল্পটির সবশেষ সংশোধনী প্রস্তাবে বলা হয়েছে, প্রকল্পের কাজের পরিধির পরিবর্তন, ১ হাজারটি পিওএস সাপোর্ট সার্ভিস অন্তর্ভুক্ত করা, প্রকল্পের বিভিন্ন অংশের ব্যয় বাড়ানো এবং সর্বশেষ প্রকল্প বাস্তবায়নে সময় বাড়ানোর জন্যই প্রকল্পটি বাস্তবায়নে সংশোধনী প্রস্তাব আনা হয়েছে। জানা গেছে, শুরুতে প্রকল্পটি বাস্তবায়নে ব্যয় ধরা হয়েছিল ৪৯৮ কোটি ৯৪ লাখ ৩২ হাজার টাকা। প্রকল্পের ২য় সংশোধিত প্রস্তাবে ৭৫৩ কোটি ৮৩ লাখ ৯৫ হাজার টাকা এবং সর্বশেষ তৃতীয় সংশোধিত প্রস্তাবে ব্যয় বাড়িয়ে ধরা হয়েছে ৯২৮ কোটি ২৩ লাখ ৩১ হাজার।

আমরা বলতে চাই, প্রাকৃতিক গ্যাসের 'সিস্টেম লস' কমানো এবং গ্যাসের সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করা গেলে তা অবশ্যই ইতিবাচক। এছাড়া গ্যাস অপচয় রোধ করাও জরুরি। নিরাপদ ও টেকসই গ্যাস ব্যবহার নিশ্চিত করাও আবশ্যক। ফলে এই প্রকল্পের যথার্থ বাস্তবায়নে যথাযথ উদ্যোগ অব্যাহত রাখতে হবে। এটাও জানা যায়, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিভাগের উদ্যোগে নেওয়া প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে বাংলাদেশ তৈল, গ্যাস ও খনিজসম্পদ করপোরেশনের (পেট্রোবাংলা) আওতাধীন তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড (টিজিটিডিসিএল)।

সর্বোপরি আমরা বলতে চাই, গ্যাসের অপচয় হবে, কিংবা যত্রতত্র ব্যবহার হবে এটা কাম্য হতে পারে না। ফলে সংশ্লিষ্টদের কর্তব্য হওয়া দরকার প্রকল্পটির যথাযথ বাস্তবায়নে কাজ করা। এমন বিষয় আলোচনায় এসেছে যে, প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে প্রি-পেইড মিটারিং সিস্টেমে গ্যাস অপচয় রোধ, সাশ্রয়ী, নিরাপদ ও টেকসই গ্যাস ব্যবহার নিশ্চিত করা সম্ভব হবে এবং গ্যাসের সিস্টেম লস কমিয়ে ক্রমবর্ধমান চাহিদা পূরণ করা সম্ভব হবে। ফলে সার্বিক বিষয় সামনে রেখে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিশ্চিত হোক এমনটি কাম্য।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে