রোববার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১

মহাসড়কে ছিনতাই আতঙ্ক কার্যকর উদ্যোগ নিন

নতুনধারা
  ২৯ এপ্রিল ২০২৩, ০০:০০

ছিনতাই, খুন, ধর্ষণ, চাঁদাবাজিসহ যে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটতে থাকলে তা সামগ্রিক উন্নয়ন ও মানুষের স্বাভাবিক জীবনের জন্য পরিপন্থি। এ ক্ষেত্রে কঠোর পদক্ষেপ নিশ্চিত করে হলেও এ ধরনের অপকর্মকে প্রতিহত করার বিকল্প থাকতে পারে না। কেননা, তা না হলে সর্বস্তরে যে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে তা অত্যন্ত আতঙ্কজনক- যা কোনোভাবেই কাম্য নয়। বর্তমান সময়ের দিকে দৃষ্টি দিলে যে চিত্র পরিলক্ষিত হয় তা অত্যন্ত উদ্বেগের। পত্রপত্রিকার পাতা উল্টালেই দেখা যায়, একের পর এক অপরাধমূলক ঘটনা ঘটছেই। আর নিত্যনতুন উপায়ে অপরাধপ্রবণতা দিনকে দিন যেন বেড়েই চলেছে। ফলে তা যেমন জনজীবনের স্বাভাবিক গতিধারার জন্য হয়ে উঠছে বিপজ্জনক-তেমনিভাবে ঘটনার ধারাবাহিকতায় সৃষ্ট পরিস্থিতি রোধ করাও জরুরি বলেই প্রতীয়মান হয়।

প্রসঙ্গত, সম্প্রতি পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবরে জানা গেল, মহাসড়কে আবারও পণ্যবাহী যানবাহন ছিনতাই বা ডাকাতির শঙ্কায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। তথ্যমতে, ছিনতাইকারীদের টার্গেট গার্মেন্ট পণ্যবোঝাই যানবাহন। পেশাদার ছিনতাইকারী বা ডাকাতরা এমন ঘটনার সঙ্গে জড়িত বলেও জানা গেছে। এ ছাড়া পরিকল্পিতভাবে এসব অপরাধীকে ব্যবহার করে একটি চক্র দেশকে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের সুযোগ থেকে বঞ্চিত করতে পারে বলেও অভিযোগ রয়েছে। এমন তথ্যের সূত্র ধরে মহাসড়কে পণ্যবোঝাই মালামাল আনা-নেওয়ার কাজে নিয়োজিত কার্গো সার্ভিসের তালিকা করেছে হাইওয়ে পুলিশ। পণ্যবোঝাই কার্গোভ্যানকে নির্ধারিত জায়গা ছাড়া থামতে দেওয়া হচ্ছে না।

আমরা মনে করি, যখন মহাসড়কে ফের ছিনতাই আতঙ্কর বিষয়টি সামনে আসছে তখন তা গুরুত্বসহকারে আমলে নিতে হবে এবং এর পরিপ্রেক্ষিতে সব ধরনের পদক্ষেপ নিশ্চিত করতে হবে। একইসঙ্গে যেসব উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে তারও যথাযথ বাস্তবায়ন করতে হবে। তথ্যমতে, দেশে ১১ হাজার ৮০৬ কিলোমিটার মহাসড়ক রয়েছে। এর মধ্যে অপরাধপ্রবণ স্পটের সংখ্যা শতাধিক। আর এসব স্পটে নিরাপত্তাও জোরদার করা হয়েছে যা ইতিবাচক। তদপুরি আমলে নেওয়া দরকার, তারপরেও ডাকাতি ও ছিনতাইকারী এবং চোরাকারবারিদের রোধ করা কঠিন হতে পারেও আলোচনায় আসছে। এটাও জানা যাচ্ছে যে, মহাসড়কের সঙ্গে যুক্ত থাকা ছোট ছোট লিংক রোড দিয়ে ছিনতাইকারীরা এসে আচমকা ছিনতাই করে পালিয়ে যায়। আর এ জন্য প্রতিটি লিংক রোডে পাহারা বসানোর পাশাপাশি সিসি ক্যামেরা এবং স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে কমিটিও গঠন করা হয়েছে। জানা যায়, অপরাধীরা রাতের আঁধারে রাস্তায় গাছ ফেলে মহাসড়কে ব্যারিকেড দিয়ে পণ্যবাহী যানবাহন ছিনতাই করত। ডাকাতি বা ছিনতাই হওয়ার খবর পাওয়ার পর পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছার আগেই অপরাধীরা মালামাল বোঝাই যানবাহন নিয়ে পালিয়ে যেতে সক্ষম হতো।

আমরা মনে করি, যে বিষয়গুলো উঠে আসছে তা অত্যন্ত ভীতিপ্রদ। আর ছিনতাই বা ডাকাতি হলে তার ভয়াবহতা কীরূপ সেটা এড়ানোর কোনো সুযোগ নেই। সঙ্গত কারণেই পরিস্থিতি আমলে নিয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণও অপরিহার্য। এটাও জানা যাচ্ছে যে, গত প্রায় ৫ বছরে মহাসড়কে ঘটে যাওয়া ছিনতাই ও ডাকাতির ঘটনাগুলোর নতুন করে তদন্ত করছে হাইওয়ে পুলিশ। বেশ কয়েকটি মামলার তদন্তে দেখা গেছে, এসব ছিনতাইয়ের সঙ্গে পণ্যবাহী যানবাহনের চালক, হেলপার ও একশ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ীরা জড়িত। তাদের শনাক্ত করা হয়েছে। এ ছাড়া সংশ্লিষ্টদের এটা আমলে নেওয়া দরকার, হাইওয়ে পুলিশ সূত্র বলছে, রাতে বা দিনে নিরাপত্তা টহল দেওয়ার জন্য হাইওয়ে পুলিশের বেশির ভাগ থানায় প্রয়োজনীয় গতিসম্পন্ন যানবাহন নেই। ফলে অপরাধীদের দ্রম্নতগতির যানবাহনকে ধাওয়া করেও অনেক সময়ই তাদের ধরা সম্ভব হচ্ছে না। আমরা মনে করি, এই বিষয়টিকে সামনে রেখেও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে।

সর্বোপরি বলতে চাই, যখন খবরের মাধ্যমে জানা যাচ্ছে, সারা দেশে মহাসড়কে বেশ কয়েকটি ছিনতাইকারী গ্রম্নপ সক্রিয়। আর ছিনতাইকারী গ্রম্নপগুলোর প্রধান টার্গেট ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক। সেই সঙ্গে তাদের টার্গেট গার্মেন্ট পণ্যবোঝাই যানবাহন- তখন সামগ্রিক এ পরিস্থিতি এড়ানোর কোনো সুযোগ নেই। পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ সাপেক্ষে ছিনতাইকারীদের দৌরাত্ম্য রোধে সর্বাত্মক পদক্ষেপ গ্রহণ ও বাস্তবায়ন নিশ্চিত হবে এমনটি কাম্য।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে