উইনস্টন চার্চিল (৩০ নভেম্বর, ১৮৭৪-২৪ জানুয়ারি, ১৯৬৫) ইংরেজ রাজনীতিবিদ ও লেখক। তিনি যুক্তরাজ্যের দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধকালীন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে অধিক পরিচিত। চার্চিলকে যুক্তরাজ্য ও বিশ্বের ইতিহাসের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ নেতা হিসেবে গণ্য করা হয়। ১৯৫৩ সালে উইনস্টন চার্চিল সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন। ২০০২ সালে বিবিসির এক জরিপে তিনি সর্বকালের সেরা ব্রিটেনবাসী হিসেবে মনোনীত হন। প্রায় ৫০ বছর তিনি রাজনীতির প্রথম সারিতে ছিলেন। বিভিন্ন সময়ে ক্যাবিনেটের বিভিন্ন দায়িত্ব পালন করেন। ১৯০০ সালে তিনি হাউস অব কমন্সে নির্বাচিত হন। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের আগে তিনি 'প্রেসিডেন্ট অব দ্য বোর্ড অব দ্য ট্রেড, হোম সেক্রেটারি ও যুদ্ধকালে আসকুইথ লিবারেল গর্ভমেন্টের ফার্স্ট লর্ড অব দ্য অ্যাডমিরালটি'র দায়িত্ব পালন করেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় তিনি আবার ফার্স্ট লর্ড অব দ্য অ্যাডমিরালটি নিযুক্ত হন। যুদ্ধকালেই ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী হন। ১৯৪৫ সালের নির্বাচনে কনজারভেটিভ পার্টি হারলে তিনি বিরোধী দলীয় নেতা হন। ১৯৫১ সালে আবার তিনি প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন। অবসর নেন ১৯৫৫ সালে। স্যার উইনস্টন চার্চিলের পুরো নাম উইনস্টন লিওনার্ড স্পেন্সার চার্চিল। রাজনৈতিক পরিবারের সন্তান চার্চিল ১৮৭৪ সালের ৩০ নভেম্বর অক্সফোর্ডশায়ারে দাদার বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। চার্চিলের শৈশব, কৈশোর দুই-ই কাটে আয়ারল্যান্ডের ডাবলিন শহরে। ছোটবেলা থেকে তিনি স্বাধীনচেতা ও বিদ্রোহী স্বভাবের ছিলেন। একাডেমিক রেকর্ড খুব একটা ভালো ছিল না। ১৮৮৮ সালে লন্ডনের হ্যারোও আবাসিক স্কুলে ভর্তি হন। কিন্তু এর কয়েক সপ্তাহ পরই তিনি যোগদান করেন হ্যারোও রাইফেল কর্পোরেশনে এবং কর্মক্ষেত্র হিসেবে বেছে নেন সেনাবাহিনীকে। রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব হিসেবে অধিক সমাদৃত স্যার উইনস্টন চার্চিল সাহিত্যকর্মে ছিলেন জগৎখ্যাত। ১৮৯৯ সালে চার্চিল সেনাবাহিনী ত্যাগ করে মর্নিং পোস্টের একটি রক্ষণশীল দৈনিক পত্রিকায় যোগদান করেন। দক্ষিণ আফ্রিকায় বোয়ার যুদ্ধ চলাকালে একটি স্কাউটিং অভিযানে তিনি আটক হন। মোজাম্বিকের পর্তুগিজ অঞ্চল থেকে ৩০০ মাইল ভ্রমণ করে তিনি আবার ব্রিটেনে ফিরে আসেন। এই অভিজ্ঞতা তিনি তুলে ধরেছেন তার বই 'লেডিস্মিথ'-এ। চার্চিল শুধু রাজনীতিবিদ বা সুবক্তাই ছিলেন না তার লেখার প্রভূত সম্ভার ইংরেজি ভাষাকে সমৃদ্ধ করেছে। আত্মজৈবনিক রচনার জন্য সাহিত্যে নোবেল পান ১৯৫৩-তে। ১৯৫৩ সালে ২য় রাণী এলিজাবেথ স্যার উইনস্টন স্পেন্সার চার্চিলকে 'নাইট' উপাধিতে ভূষিত করেন। একই সালে তিনি সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন। ১৯৬৫ সালের ১৫ জানুয়ারি গুরুতর স্ট্রোকে আক্রান্ত হন চার্চিল, এর ঠিক ন'দিন পর ১৯৬৫ সালের ২৪ জানুয়ারি তার লন্ডনের বাড়িতে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।