শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

বিজ্ঞানের যত কথা ফ্যাক্স

শিক্ষা জগৎ ডেস্ক য়
  ০৩ এপ্রিল ২০২০, ০০:০০
ফ্যাক্স মেশিন

ফ্যাক্স শব্দটি ইংরেজি ফ্যাকসিমিলি (ভধপংরসরষব) শব্দের সংক্ষপ্তি রূপ। এটি এমন একটি ইলেক্ট্রনিক যন্ত্র যা কোনো কাগজ বা দলিলের ছবি ডিজিটাল পদ্ধতির টেলিফোন তারের সহায়তায় দূরমুদ্রণে সক্ষম। টেলিফোনে যেমন শব্দ প্রেরণ করা হয়, ফ্যাক্সের মাধ্যমেও তেমনি ইলেক্ট্রনিক ছবি প্রেরণ করা হয়। কার্যত ফ্যাক্স মেশিন ছবি বা দলিলের ইলেক্ট্রনিক প্রতিচিত্র তৈরি, প্রেরণ, গ্রহণ ও মুদ্রণে সক্ষম একটি যন্ত্র।

\হকোনো কাগজে লিখিত তথ্য অবিকৃত অবস্থায় দ্রম্নততম সময়ে দূরদূরান্তে পাঠানোর পদ্ধতি। টেলিফোন লাইনে এ ফ্যাক্স যন্ত্র বসানোর মাধ্যমে এটি ব্যবহার হয়। টেলিফোন লাইনই এর তথ্য পরিবাহক। এটি টেলেক্সের উত্তরকালে উদ্ভাবিত একটি বিশেষ উপযোগী যন্ত্র। বিংশ শতাব্দীর শেষভাগে টেলেক্স ও টেলিগ্রাম ব্যবহার প্রায় বন্ধ হয়ে যায়। পরিবর্তে ফ্যাক্সের ব্যবহার দ্রম্নত বৃদ্ধি পায়। ইমেইলে এটাচমেন্ট হিসেবে দলিলের প্রতিলিপি প্রেরণ একটি জনপ্রিয় মাধ্যম হয়ে উঠলে একবিংশ শতকের দ্বিতীয় দশকে ফ্যাক্সের ব্যবহার ক্রমাগত হ্রাস পেতে থাকে।

আবিষ্কার: ১৮৪২ সালে স্কটল্যান্ডের বিজ্ঞানী আলেকজান্ডার বেইন ফ্যাক্স আবিষ্কার করেন। ১৮৫০ সালে ইংল্যান্ডের বিজ্ঞানী ফেডরিক বস্ন্যাকওয়েল এবং ১৯০৭ সালে জার্মান বিজ্ঞানী আর্থার কর্ন (কড়ৎহ)-এর উন্নত রূপ দান করেন।

লিখিত বক্তব্য প্রেরক যন্ত্রে স্থাপন করলে তা ফ্যাক্সের ইলেক্ট্রনিক যন্ত্রের মাধ্যমে ডিজিটাল প্রতিচ্ছবিতে পরিণত হয় এবং এক স্থান থেকে অন্যস্থানে পাঠানো হয়। গ্রাহকযন্ত্রে এ বক্তব্য পূর্ববত করে প্রিন্টারের সাহায্যে অবিকলভাবে প্রকাশ করে। মাইক্রোওয়েভ ও স্যাটেলাইটের মাধ্যমে এ সংবাদ আদান-প্রদান করা হয়।

ফ্যাক্স মেশিন যেভাবে কাজ করে :যে মেশিন থেকে ফ্যাক্স পাঠানো হবে সেটি একটি টেলিফোন লাইনের সঙ্গে সংযুক্ত থাকে যেটি অপর পাশের কোনো ফ্যাক্স মেশিনে তথ্য আদান-প্রদানের মাধ্যম হিসেবে কাজ করে। প্রেরক মেশিনটি টেলিফোন লাইনের মাধ্যমে কল করে প্রাপক মেশিনটিকে। এরপর প্রাপক মেশিনটির ফ্যাক্সটি গ্রহণ করে এবং এর সঙ্গে সংযুক্ত প্রিন্টারের সাহায্যে প্রিন্ট করে নেয়। উন্নত দেশগুলোতে ব্রিটিশ বিজ্ঞানী টিমোথি বার্নার্স লি ইন্টারনেট আবিষ্কারের পূর্বে এই পদ্ধতিতেই তথ্য বিশেষত ডকুমেন্ট আদান-প্রদান হতো। এ জন্য প্রেরক প্রথমে ডকুমেন্টটিকে টাইপ করত এরপর ফ্যাক্স মেশিনে স্ক্যান করে প্রাপকের ঠিকানায় পাঠাত। প্রাপকের ফ্যাক্স মেশিন প্রাপ্ত ফ্যাক্সটিকে প্রিন্ট করত এবং প্রাপক ডকুমেন্টটিকে নিজের কম্পিউটারে সংরক্ষণের জন্য হয়তো আবারো স্ক্যান করে কম্পিউটারে সংরক্ষণ করতেন। এ পদ্ধতিতে অনেক সময় লাগত এবং বারবার একটি ডকুমেন্টকে স্ক্যান এবং প্রিন্ট করা লাগত বিধায় ডিজিটাল কপির কোয়ালিটি নষ্ট হতো। আজকাল অবশ্য আমরা চাইলে ইমেইলের মাধ্যমে খুব সহজেই কোনো ডিজিটাল ডকুমেন্টকে এটাচমেন্ট হিসেবে পাঠাতে পারি। অনেকে ফ্যাক্সকে সুরক্ষিত যোগাযোগ পদ্ধতি মনে করেন। কিন্তু, আসলে টেলিফোন লাইনে আড়ি পাতলে গোপনীয় ফ্যাক্সকেও চুরি করা যায়। এ ক্ষেত্রে ইমেইল অনেক বেশি সুরক্ষিত মাধ্যম। যেহেতু ফ্যাক্স মেশিনকে শুধুমাত্র টেলিফোন লাইনের সঙ্গে সংযুক্ত করা যায়, তাই একে ইন্টারনেটের সঙ্গে সংযুক্ত করার কোনো মাধ্যম নেই। সুতরাং, অনলাইনের মাধ্যমে ফ্যাক্স করতে আমাদের এক ধরনের গেটওয়ের প্রয়োজন পড়বে যেটা ইন্টারনেটের মাধ্যমে ডকুমেন্ট গ্রহণ করতে পারবে এবং ফ্যাক্স মেশিনে এটি প্রেরণে সক্ষম হবে। এ ক্ষেত্রে আমাদের শুধু একে ডকুমেন্টটা দিতে হবে, বাকি ডায়ালিং এবং তথ্য প্রেরণের কাজগুলো এই গেটওয়েই করে নেবে। লঁহশ-ংপধহহবৎ-ধহফ-ভধী-সধপযরহব আপনি চাইলে আপনার কম্পিউটারের মাধ্যমেও ফ্যাক্স করতে পারেন। উইন্ডোজের সঙ্গেই বাই ডিফল্ট ফ্যাক্স এবং স্ক্যান প্রোগ্রাম আছে। তবে এ জন্য আপনার কম্পিউটারটি টেলিফোন লাইনের সঙ্গে সংযুক্ত থাকতে হবে এবং আপনার প্রয়োজন হবে একটি ডায়াল-আপ ফ্যাক্স মডেম। আপনার একটা ল্যান্ডলাইন টেলিফোন লাইনও প্রয়োজন পড়বে এবং ফ্যাক্স পাঠানোর সময় অন্য কেউ এই ফোনটি ব্যবহার করতে পারবে না। যদি আপনি অনেক বেশি পরিমাণে ফ্যাক্সের মাধ্যমে তথ্য আদান-প্রদান করে থাকেন তবেই আলাদা কোনো ফোন লাইন ব্যবহার করা যুক্তিসংগত হবে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<95026 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1