শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
চট্টগ্রাম

পাইকারিতে দাম কমলেও প্রভাব নেই খুচরা বাজারে

নুরউদ্দীন খান সাগর
  ০১ এপ্রিল ২০২৩, ০০:০০

চট্টগ্রাম পাইকারি বাজারে কিছু পণ্যের দাম কমলেও এর প্রভাব পড়েনি খুচরা বাজারে। মজুদ এবং সরবরাহ পর্যাপ্ত হওয়া এবং ভোক্তাদের চাহিদা তেমন না থাকায় আমদানিকারকরা ভোগ্যপণ্যের দাম কমিয়ে দিতে বাধ্য হয়েছেন। রমজানে

বেশি চাহিদার ভোগ্যপণ্য ছোলা, খেজুর, পাম তেল, সয়াবিন তেলসহ বেশকিছু ভোগ্যপণ্যের দাম কমেছে পাইকারি বাজার চাক্তাই-খাতুনগঞ্জ ও পাহাড়তলীতে। গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে এসব পণ্যের দাম মণপ্রতি সর্বোচ্চ ৪শ' থেকে ৫শ' টাকা পর্যন্ত কমেছে। এক সপ্তাহ আগে পেঁয়াজের দাম কিছুটা বাড়ার পর এখন কিছুটা কমছে। চিনির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। তবে পাইকারি বাজারে দাম কমার প্রভাব খুচরা বাজারে পড়েনি উলটো খুচরা বাজারে কিছু পণ্যের দাম বেড়েছে।

বাজার অনুসন্ধানে জানা যায়, চাহিদার শীর্ষ থাকা অস্ট্রেলিয়া ও ভারতের ছোলার দাম মণপ্রতি কমেছে ৫শ' টাকা। একইভাবে চাহিদা কমে যাওয়ায় চিনির দামও কিছুটা কমেছে। পাইকারি বাজারগুলোয় একইভাবে সপ্তাহের ব্যবধানে সয়াবিনের দাম মণপ্রতি ৩০০ টাকা ও পাম তেলের দাম মণপ্রতি কমেছে ২৫০ টাকা। ডালজাতীয় পণ্যের দামও কমেছে। ৬২ টাকার মটর ডাল বিক্রি হচ্ছে ৫৯ টাকায়। ৮০ টাকায় বিক্রি হওয়া খেসারির ডাল এখন বিক্রি হচ্ছে ৭২ টাকা। শুক্রবার ভারতীয় পেঁয়াজ প্রতিকেজি বিক্রি হয় ৩২ থেকে ৩৩ টাকা। আর দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হয় ২৯ থেকে ৩০ টাকা।

পাহাড়তলী বাজারে ব্যবসায়ীরা বলেন, রমজানে ভোজ্যতেল, চিনি, ছোলা, ডালজাতীয় পণ্য এবং পেঁয়াজের চাহিদা বেশি থাকে। তাই রমজানের আগেই পাইকারি বাজারে এসব পণ্য বিক্রির চাপ বাড়ে। কিন্তু এবারে রমজানের পণ্যের চাহিদা কমে যাওয়ায় দামও কমেছে। এ ছাড়া আন্তর্জাতিক বাজারে দাম কমলে স্থানীয় বাজারের দাম আরও কমবে। বাজারে পর্যাপ্ত পণ্য আছে। চাহিদা কমে যাওয়ায় দিন দিন পণ্যের দাম কমছে।

পাইকারি বাজারে ভোগ্যপণ্যের দাম কমতে থাকলেও খুচরা বাজারে এর প্রভাব তেমন নেই। খুচরায় অনেক পণ্য এখনো আগের মতো বাড়তি দামেই বিক্রি হচ্ছে। চট্টগ্রাম নগরীর বেশিরভাগ খুচরা বাজারে এখনো ছোলা বিক্রি হচ্ছে ৯০ থেকে ৯৫ টাকা কেজি দরে। চিনি বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকা, দেশি পেঁয়াজ ৩৮ আর ভারতীয় ৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। প্যাকেটজাত সয়াবিন তেল ১৮৫ আর পাম তেল ১৩০ টাকা লিটার দরে বিক্রি করা হচ্ছে। অর্থাৎ পাইকারি বাজারে দাম কমার প্রভাব খুচরা বাজারে বিন্দুমাত্রও নেই। সাধারণ মানুষকে আগের মতোই বেশি দামে ভোগ্যপণ্য কিনতে হচ্ছে।

সরেজমিন পাহাড়তলী কাঁচা বাজারে গিয়ে দেখা যায়, রমজান মাসে সবজি ও মাছ, মাংসের দামও চড়া। তবে সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে ৭০ টাকা কমে ব্রয়লার মুরগি এখন ২০০ টাকা, কমেনি সোনালি মুরগির দাম প্রতি কেজি ৪০০ টাকা, দেশি মুরগি ৫০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। পাশাপাশি ডিমের ডজন বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকায়।

এক সপ্তাহে আগে মাঝারি ও ছোট মানের লেবু হালিপ্রতি ৪০ টাকায় বিক্রি হলেও বর্তমানে তা বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকায়। টমেটো প্রতিকেজি ২৫ টাকা থেকে বেড়ে এখন ৩৫ টাকা। প্রতিকেজি গাজর ৪০ টাকায় বিক্রি হলেও বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকায়। গত সপ্তাহে ৪০ টাকা কেজিতে বিক্রি হওয়া শসার দাম এখন ৫০ টাকা। গোল বেগুন বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৪০-৫০ টাকায়। তাছাড়া ৬০ টাকার নিচে কোনো সবজি পাওয়া কঠিন। সজিনা প্রতিকেজি ১০০ টাকা। প্রতিকেজি বরবটি ৮০, শিম ৭০, পটোল ৮০, মুলা ৭০, মিষ্টি কুমড়া ৪০, ফুলকপি ৫০, ঢেঁড়শ ও তিত করলা ৯০, লতি ৮০, চিচিঙ্গা ৬০, ঝিঙা ৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

নগরীর ভোক্তা এবং ভোক্তা অধিকার নিয়ে কাজ করা ব্যক্তিদের মতে, ঠিকমতো বাজার তদারকি না হওয়ায় পণ্যের দামে সমন্বয় নেই।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে