শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

ভারত গুরুত্ব দেয় বলেই বাংলাদেশকে জি-২০ সম্মেলনে আমন্ত্রণ সেমিনারে প্রণয় ভার্মা

যাযাদি ডেস্ক
  ০১ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০০:০০

ঢাকায় নিযুক্ত ভারতের হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা জানিয়েছেন, আগামী ৯ সেপ্টেম্বর ভারতের নয়া দিলিস্নতে দুই দিনব্যাপী জি-২০ শীর্ষ সম্মেলন শুরু হতে যাচ্ছে। সম্মেলনে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে শুধুমাত্র বাংলাদেশকে আমন্ত্রণ করেছে ভারত। ভারত বাংলাদেশকে গুরুত্ব দেয় বলে এ অঞ্চল থেকে শুধুমাত্র বাংলাদেশকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।

বৃহস্পতিবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে 'জি-২০ সম্মেলন: ঢাকা থেকে নয়া দিলিস্ন' শীর্ষক এক সেমিনারে দেওয়া বক্তব্যে এ কথা জানান ভারতীয় হাইকমিশনার।

ভারতীয় হাইকমিশনার বলেন, বাংলাদেশের বিশ্বকে বলার অনেক কিছু আছে। বাংলাদেশের অনেক উন্নয়ন সাফল্য রয়েছে। ভারত বাংলাদেশকে জি-২০ সম্মেলনে আমন্ত্রণ করেছে। কারণ বাংলাদেশকে গুরুত্ব দেয় ভারত।

তিনি আরও বলেন, এমন এক সময়ে সম্মেলন হতে যাচ্ছে যখন ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে বিশ্বব্যাপী সাপস্নাই চেইন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সম্মেলনে গেস্নাবাল সাউথেরও কথা শুনতে চায় ভারত। আমরা বাংলাদেশের সহযোগিতা চাই। আফ্রিকার দেশগুলো কী বলে, ইউরোপীয় ইউনিয়ন কী বলে, শুনতে চায় ভারত।

সেমিনারে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, নয়া দিলিস্নতে জি-২০ শীর্ষ সম্মেলনে আমাদের প্রধানমন্ত্রীর অংশগ্রহণ বাংলাদেশ-ভারতের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের সোনালি আধ্যায়ে আরও একটি পালক যোগ করবে। আমরা আশা করি, বাংলাদেশ সরকার এবং আমাদের স্টেকহোল্ডারদের অংশগ্রহণ জি-২০ সম্মেলনে অর্থবহ অবদান রাখতে পারবে।

চলমান বৈশ্বিক সংকটের বহুমাত্রিক সমাধানে জি-২০ অংশীদারদের হসঙ্গে বাংলাদেশ কাজ করতে উন্মুখ বলে জানান ডক্টর মোমেন। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এখন শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান, অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধি, উন্নয়নের অধিকার, নারীর ক্ষমতায়ন, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত কণ্ঠস্বর। তিনি প্রায় ১৭০ মিলিয়ন মানুষের প্রতিনিধিত্ব করেন। তিনি গণতান্ত্রিক রাজনীতির পক্ষে কথা বলেন।

মোমেন বলেন, জি-২০ প্রেসিডেন্সির একটা গুরত্বপূর্ণ অংশ হচ্ছে, গেস্নাবাল সাউথের সমস্যা নিয়ে আসা। বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ এবং জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর একটি মুখপাত্র। বাংলাদেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে গেস্নাবাল সাউথের জন্য কণ্ঠস্বর হিসেবে ভূমিকা রাখতে প্রস্তুত।

সোমনারে পররাষ্ট্র সচিব বলেন, 'বিভিন্ন দেশে চলমান সহিংসতা ও সামরিক বাহিনীর ক্ষমতা গ্রহণের বিষয়ে বাংলাদেশ উদ্বিগ্ন। এসডিজি লক্ষ্য, জলবায়ু পরিবর্তন ও মানবিক অগ্রাধিকার ইসু্যগুলোকে পেছনে ফেলে বৈশ্বিক পরিমন্ডলে ওই সমস্যাগুলো সামনে চলে আসতে পারে।'

\হবৈশ্বিক অনিশ্চিত পরিস্থিতির মধ্যে সামনের বহুপাক্ষিক ফোরাম বৈঠকগুলোতে বাংলাদেশ তার অবস্থান তুলে ধরবে। কারণ, বৈশ্বিক অনিশ্চয়তা বাংলাদেশের স্বার্থের ওপর প্রভাব ফেলে বলে তিনি জানান।

মাসুদ বিন মোমেন বলেন, 'আমরা আশা করি সেপ্টেম্বরের জি-২০ সম্মেলন বৈশ্বিক অগ্রাধিকার ইসু্যগুলোকে সামনে নিয়ে আসবে এবং আমাদের সবার জন্য অগ্রাধিকার বিষয়গুলো অর্জনে ভূমিকা রাখবে।'

পররাষ্ট্র সচিব বলেন, '১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধের সময়ে ভারত আমাদের সবচেয়ে বড় কৌশলগত অংশীদার ছিল এবং সেটির ধারাবাহিকতা অব্যাহত আছে। এ কারণে ভারতে জি-২০ শীর্ষ সম্মেলনে আমাদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।'

বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে চমৎকার সম্পর্ককে অন্যরা 'প্রতিবেশী কূটনীতির' মডেল হিসেবে অভিহিত করে জানিয়ে তিনি বলেন, 'গেস্নাবাল সাউথের দেশগুলোকে আমন্ত্রণ জানিয়ে জি-২০ সম্মেলনে ভারত একটি বিরাট পরিবর্তন এনেছে। একই ধরনের মনোভাব সম্প্রতি জোহানেসবার্গে ব্রিকস সম্মেলনে ছিল, যেখানে মূল আলোচ্য বিষয় ছিল আফ্রিকা।' সেমিনারে অ্যাম্বাসেডর-অ্যাট-লার্জ মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিনও বক্তব্য দেন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে