বুধবার, ১৪ মে ২০২৫, ৩১ বৈশাখ ১৪৩২
সর্বনিম্ন তাপমাত্রা তেঁতুলিয়ায়

১০ জেলায় বইছে শৈত্যপ্রবাহ

যাযাদি ডেস্ক
  ১১ জানুয়ারি ২০২৫, ০০:০০
১০ জেলায় বইছে শৈত্যপ্রবাহ
তীব্র শীতে আগুন পোহাচ্ছে শীতার্তরা -ফাইল ছবি

একদিন আগের রেকর্ড ভেঙে এই শীতে পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। শুক্রবার ভোর ৬টা পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় তেঁতুলিয়ায় তাপমাত্রার পারদ নেমেছে ৭ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসে; যা চলতি মৌসুমের সর্বনিম্ন। এই জেলায় মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। এদিকে, আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, শুক্রবার দেশের ১০টি জেলায় মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। জেলাগুলো হল-রাজশাহী, পাবনা, নওগাঁ, দিনাজপুর, পঞ্চগড়, যশোর, কুষ্টিয়া, চুয়াডাঙ্গা, গোপালগঞ্জ, মৌলভীবাজার।

আবহাওয়াবিদ মো. শাহীনুল ইসলাম শুক্রবার বলেন, 'তেঁতুলিয়ায় এই মৌসুমে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। তাপমাত্রা আপাতত আর কমার সম্ভাবনা নেই সেখানে। বৃহস্পতিবার তেঁতুলিয়ায় ৯ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছিল।'

1

তিনি জানান, আগামী দুইদিন দেশজুড়ে দিন-রাতের তাপমাত্রা বাড়তে পারে, এরপর আবার তাপমাত্রা কমে আসতে পারে।

আবহাওয়াবিদদের মতে, কোনো অঞ্চলে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৬ দশমিক ১ থেকে ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকলে, সেই স্থানে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ ধরা হয়; আর ৮ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস হলে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে বলে ধরা হয়।

তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জিতেন্দ্র নাথ রায় বলেন, 'উত্তরের হিমেল হাওয়া বেড়ে যাওয়ার কারণে তাপমাত্রার পারদ নেমেছে। তাই বেড়েছে শীতের দাপটও। জেলার উপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ।'

এদিকে, হাড় কাঁপানো শীতে ভোগান্তিতে পড়েছেন জেলার মানুষ। রাত বাড়তে থাকলে কুয়াশা ঘন হতে থাকে। সকাল হলেও কুয়াশাচ্ছন্ন থাকে পরিবেশ। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তাপমাত্রা কিছুটা বাড়লেও বিকালের পর থেকে ফের বাড়ছে শীত।'

শুক্রবার সকালে দেখা গেছে, কনকনে শীতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন। বেশি দুর্ভোগে পড়েছেন খেটে খাওয়া নিম্ন আয়ের মানুষেরা। শীত থেকে বাঁচতে অনেককেই সড়কের পাশে খড়কুটো জ্বালাতে দেখা গেছে। ঘনকুয়াশার কারণে দিনেও সড়কে গাড়ি চলছে হেডলাইট জ্বালিয়ে।

শহরের ব্যবসায়ী মতি মিয়া বলেন, 'আজকে ভাই ঠান্ডাটা বেশি মনে হচ্ছে। আমরা তো তাপমাত্রা কত তা জানি না। কিন্তু সারারাত এতো ঠান্ডা পড়ছে যে লেপ আর কম্বল একসঙ্গে নিলেও শীত কমাতে পারিনি। মনে হয় তাপমাত্রা জিরো ডিগ্রিতে নামছে।'

জেলার বোদা পৌর এলাকার সাতখামার গ্রামের মজিনা বেগম বলেন, 'প্রচন্ড ঠান্ডায় রাতে বিছানা থেকে সব জিনিসপত্র বরফ হয়ে ওঠে। ঘরের মেঝেতে খালি পায়ে পা দেওয়া যায় না। ঘরে রাখা পানি বরফের মত হয়ে থাকে। পানি ধরলে হাত যেন অবশ হয়ে যায়। ঠান্ডা বাতাসে কাবু করে তুলেছে আমাদের। সন্ধ্যার পর বাড়ির উঠানে খড়কুটো জ্বালায় শীত তাড়াই।'

এদিকে শীতজনিত বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে হাসপাতালগুলোতে শিশু ও বয়স্কদের ভিড় বাড়ছে।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের নিয়মিত বুলেটিনে বলা হয়েছে, ১০ জেলার ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া শৈত্যপ্রবাহ কিছুদিন অব্যাহত থাকতে পারে। এছাড়া, রংপুর ও রাজশাহী বিভাগে রাতের তাপমাত্রা সামান্য বাড়তে পারে। আর, অন্যান্য স্থানে প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।

শুক্রবার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশে অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারাদেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত সারদেশের কোথাও-কোথাও মাঝারি থেকে হালকা কুয়াশা পড়তে পারে।

এই সময়ে সারাদেশে দিনের তাপমাত্রা সামান্য বাড়তে পারে। গেল ২৪ ঘণ্টায় দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল টেকনাফে; ২৮ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে