বুধবার, ০৮ মে ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১

ভাঙন আতঙ্কে নির্ঘুম তিস্তা পাড়ের মানুষ

কাউনিয়া (রংপুর) প্রতিনিধি
  ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২১, ০০:০০
ভাঙন আতঙ্কে নির্ঘুম তিস্তা পাড়ের মানুষ

রংপুরের কাউনিয়ায় চরগনাই গ্রামের সালেহা বেগমের (৫৫) জমিজমা বলতে ছয় শতাংশের বসতভিটা ছাড়া আর কিছুই নেই। কিন্তু সেই বসতভিটার কোল ঘেঁষে এসে পড়েছে কড়ালগ্রাসী তিস্তা নদী। বসতভিটা ভাঙন আতঙ্কে গত দুই মাস ধরে ছালেহা বেগম রাতে ঘুমাতে পারেন না। যদিও কখনো ঘুমিয়ে পড়েন তবে নদীর পাড় ভাঙার আওয়াজে ঘুম ভেঙে যায় তার।

সালেহা বেগমের মতো রংপুরের কাউনিয়ায় উপজেলার টেপামধুপুর ইউনিয়নে তিস্তা নদীর তীরবর্তী চরগনাই গ্রামসহ বালাপাড়া ইউনিয়নে দুই শতাধিক পরিবার ভাঙন-আতঙ্কে নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছে। ইতোমধ্যে নদীগর্ভে ঘরবাড়ি হারিয়ে আশ্রয়হীন হয়ে পড়েছে অনেক পরিবার। ভাঙনের কবলে রয়েছে বাড়িঘর, ফসলি জমি। প্রায় আট কিলোমিটার এলাকাজুড়ে প্রতিদিন ধসে পড়ছে মাটি।

চরগনাই গ্রামের বাসিন্দা আজিজার রহমান (৬১) জানায়, তিস্তার পানি কমার সঙ্গে সঙ্গে নদীর ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করেছে। গত কয়েকদিনে ভাঙনে বেশ কয়েকজনের বসতবাড়ি, ফসলি জমি নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। হুমকিতে রয়েছে অনেক বসতবাড়ি, আবাদি জমি ও ফলজ-বনজ গাছপালা।

টেপামধুপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম জানান, ভাঙনে তার ইউনিয়নের অনেকের বসতভিটা ও আবাদি জমি নদীতে তলিয়ে গেছে। প্রতিদিনই নদীর পাড় ভাঙছে। এতে করে তীরবর্তী গ্রামের কয়েকশ ঘরবাড়ি ভাঙনের মুখে রয়েছে। তিনি বলেন, জরুরি ভিত্তিতে নদী শাসন ও বেড়িবাঁধ নির্মাণ করা প্রয়োজন। তা না হলে অনেকের ভিটেমাটি ও আবাদি জমি মানচিত্র থেকে হারিয়ে যাবে।

বালাপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আনছার আলী জানান, 'উপজেলা চেয়ারম্যানের ব্যক্তিগত তহবিল ও টিআর প্রকল্পের অর্থায়নে বাঁশ পুঁতে নদীর তীরবর্তী ভাঙন রোধের চেষ্টা করা হয়েছিল। তবে এগুলো সাময়িক।'

রংপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আহসান হাবিব জানায়, 'কাউনিয়া উপজেলার নদীর তীরবর্তী গ্রামে ভাঙনের বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। ইতোমধ্যে আমরা খালি জিও ব্যাগ সরবরাহ করেছি। স্থানীয় লোকজন স্বেচ্ছাশ্রমে ভাঙন রোধের চেষ্টা করছে।'

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে