সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১

সৈয়দপুরে রেলওয়ের জমি দখল ও বহুতল ব্যবসা প্রতিষ্ঠান নির্মাণের হিড়িক

সৈয়দপুর (নীলফামারী) প্রতিনিধি
  ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০০:০০

নীলফামারীর সৈয়দপুরে রেলওয়ের জমি দখল, বহুতল ভবন, মার্কেট, গুদাম নির্মাণ করে কোটিপতি হওয়ার হিড়িক পড়েছে। ইতোমধ্যে শতাধিক ব্যক্তিই রেলওয়ের জমিকে পুঁজি করে ব্যাংকে এসব ভবনই মর্টগেজ রেখে কোটি-কোটি টাকার ব্যবসা করাসহ বিপুল সম্পত্তির মালিক সেজে বসে আছেন। আবার এদেরই বেশ ক'জন বিশিষ্ট ব্যবসায়ী, গুণীজন, সমাজসেবীসহ বহুগুণের তকমা লাগিয়ে সমাজের উঁচু স্থানে আসীন হয়েছেন। আবার তাদের কাছেই বিভিন্ন ধর্মীয় শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানসহ উপাসনালয় নির্মাণ এবং সংস্কার কাজের ও বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক কাজে সহায়তা নিতেও সংশ্লিষ্টরা দ্বারস্থ হচ্ছেন।

জানা যায়, সৈয়দপুর পৌর এলাকার ২৫.৭৫ একর রেলওয়ের জমি নিয়ে দীর্ঘদিন থেকেই দ্বন্দ্বের জেরকে কাজে লাগিয়ে এসব জমির মালিক বনে যাওয়া ব্যক্তিরা সুবিধা ভোগ করছেন। কিছু সংখ্যক ব্যক্তির রেলওয়ের কাছ থেকে লিজ নেওয়ার কাগজ থাকলেও অধিকাংশের কাছে তা নেই। তারপরও পৌর কর্তৃপক্ষের সহযোগিতায় এসব ব্যক্তি রেলওয়ের জমিতে বহুতল ভবন নির্মাণ করে ব্যাংক-বীমা, মার্কেট, গুদাম, বাসাবাড়ি নির্মাণ করে বসবাসসহ মোটা অংকের বিনিময়ে ভাড়া দিয়ে কোটি-কোটি টাকার মালিক হচ্ছেন। প্রায় প্রতিদিনই লক্ষ্য করা যায়, প্রকাশ্যে শহরের বিভিন্ন সড়কসহ বিভিন্ন পাড়া-মহলস্নায় দিনের বেলা ইট, বালু, রড, সিমেন্ট পালা করে রেখে ভবন নির্মাণের কাজ চলছে। অথচ, এসব দেখার যেন কেউই নেই।

জানা যায়, পৌর কর্তৃপক্ষের লোকজনের সহায়তায় ও রেলওয়ের এস্টেট বিভাগের কতিপয় স্থানীয় কর্মকর্তা-কর্মচারীর সহযোগিতায় এসব ভবন নির্মাণের কাজ চলছে। এসব বিষয়ে একাধিকবার অনেক সচেতন ব্যক্তি রেলওয়ের এস্টেট বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অবগত করলেও তারা আদালতে এ নিয়ে পৌরসভার সঙ্গে মামলা রয়েছে বলে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া যাচ্ছে না।

মাঝেমধ্যে রেলওয়ে এস্টেট বিভাগ থেকে এসব দখলদারদের উচ্ছেদে অভিযান চালানোসহ মামলা দিলেও একই অবস্থা বিরাজ করছে। তাছাড়া অনেক সময় অভিযানে এসে পৌরসভার কর্তৃপক্ষের বাধার কারণে অভিযান বন্ধ রাখতে দেখা গেছে। পৌরসভার ভেতরে ২৫.৭৫ একর জমি ছাড়াও সৈয়দপুরের বিভিন্ন এলাকায় শত-শত একর জমি থাকলেও এগুলোও দখল হয়ে গেছে। এসবের মধ্যে কিছু কৃষিজমি, জলাশয় ও জমি লিজ দিয়ে রেলওয়ের বিভাগ রাজস্ব পেলেও বিপুল পরিমাণ এসব অবৈধ দখলদারদের কাছে কোনো প্রকার রাজস্ব না পাওয়ায় রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ বিপুল পরিমাণ রাজস্ব থেকে বঞ্চিত রয়েছে। এসব রাজস্ব পেলে রেলওয়ের উন্নয়নে ব্যাপক কাজে আসত বলে এলাকার অনেকেই মত পোষণ করেছেন।

এ বিষয়ে রেলওয়ের (পশ্চিম) চিফ এস্টেট অফিসার রেজাউল করিম জানান, যত বড় ভবনই হোক সেগুলো ভেঙে ফেলা হবে। যারা রেলের জমিতে এসব বহুতল ভবন নির্মাণ করে ব্যাংকে মর্টগেজ রেখে টাকা নিয়ে ব্যবসা-বাণিজ্য করছেন, সেগুলোর ব্যাপারেও খোঁজ-খবর নেওয়া হচ্ছে। এলাকার যারা সচেতন মানুষ তারাও যেন ব্যাংকগুলোকে এসব বিষয়ে সতর্ক করেন এবং আমাদের তথ্য-প্রমাণসহ এসব বিষয়ে অবগত করে তিনি সবার প্রতি আহ্বান জানান। কিছু সহায়তাকারী এস্টেট বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারী জড়িতের ব্যাপারে জানান, এদের বিরুদ্ধে তথ্য-প্রমাণ থাকলে আমাদের জানালে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে