হবিগঞ্জের বানিয়াচং উপজেলার একটি সড়ক স্বাধীনতার অর্ধশত বছরেও উন্নয়নবঞ্চিত রয়েছে। ফলে কাদামাটিতে একাকার ওই সড়কটি যাতায়াতকারীদের গলার কাঁটা হিসেবে পরিণত হয়েছে। উপজেলার নাপিতপাড়ার মুক্তিযোদ্ধা ওয়ারিশ উলস্নার বাড়ির সামনে থেকে দক্ষিণ যাত্রাপাশা বড় বাড়ি সুজাত উলস্না-নেজাবত উলস্না জামে মসজিদ সংলগ্ন উত্তর পাশের সড়ক পর্যন্ত প্রায় আধা কিলোমিটার সড়কটিতে স্বাধীনতার অর্ধশত বছরেও উন্নয়নের কোনো ছোঁয়া লাগেনি। এতে এলাকার নানা শ্রেণিপেশার মানুষকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
কাঁচা এই সড়কটির সংস্কার বা উন্নয়নের জন্য বছরের পর বছর স্থানীয় জনপ্রতিনিধির কাছ থেকে আশার বাণী শুনে আসছেন জনসাধারণ। বানিয়াচং উপজেলা সদরের চার নম্বর দক্ষিণ-পশ্চিম ইউপির অন্তর্গত দুই নম্বর ওয়ার্ডে সড়কটির অবস্থান। এই সড়ক দিয়ে অটোরিকশা, সিএনজি, ইজিবাইক, লাইটেস, ছোট অনেক যানবাহন, শ্রমজীবী, ব্যবসায়ী, শিক্ষার্থী ও রোগীসহ শত শত লোকজন চলাচল করে থাকেন। এখানকার কৃষকরা তাদের উৎপাদিত মৌসুমি কৃষিপণ্য সংগ্রহে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়। বৃষ্টি-বাদল হলে সবসময়ই কর্দমাক্ত লেগেই থাকে। এ সময় ডেলিভারি রোগী নিয়ে হাসপাতালে যেতে হলে অতিরিক্ত ভাড়া দিলেও কোনো যানবাহন আসতে চায় না। এ ছাড়াও এলাকায় দুটি জামে মসজিদ রয়েছে। মুসলিস্নদের জুমার নামাজসহ পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করতে অনেক কষ্ট করে মসজিদে যেতে হয়।
সরেজমিন দেখা যায়, সড়কটি বর্ষা মৌসুমে ব্যবহারের পুরোপুরি অনুপযোগী হওয়ায় প্রতিদিন অবর্ণনীয় দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। এ সময় স্থানীয় লোকজন চলাচলের জন্য ছোট ছোট যানবাহন একেবারেই বন্ধ হয়ে যায়। এতে পায়ে হেঁটে যাতায়াত করতে হয় স্থানীয় জনসাধারণকে।
স্থানীয় ভুক্তভোগী হাসিদ মিয়া জানান, এলাকার অধিকাংশ বাসিন্দা কৃষি কাজ করেই জীবিকা নির্বাহ করে। কৃষকরা প্রধান উৎপাদিত পণ্য ধান, গমসহ মৌসুমি ফসল সংগ্রহ করতে অনেক ব্যাঘাত ঘটে। এ ছাড়া সড়কটি চলাচলের অনুপযোগী থাকায় এলাকার মিশুক চালকরা রাতে নিজের বাড়িতে গাড়ি নিয়ে আসতে পারে না। অন্যত্র অতিরিক্ত ভাড়ায় গাড়ি রেখে আসতে হয়। রাতে গাড়ি চুরি হওয়ার ভয়ে চিন্তার ভাঁজ কপালে রেখে ঘুমাতে হয় তাদের।
কৃষক সাহেদ মিয়া জানান, সড়কটিতে যান চলাচলের অসুবিধার কারণে আমাদের উৎপাদিত প্রধান ফসল ধান হাওড় থেকে বাড়িতে নিয়ে আসতে অতিরিক্ত ভাড়া গুণতে হয়। আমরা স্বাভাবিকভাবে বাজার-হাটে যেতে পারি না। আমাদের এলাকার পকেটের টাকা দিয়ে প্রতিবছরই সড়কটি কিছু সংস্কার করে ধান বাড়িতে আনতে হয়। এ সময় কোনো সাধারণ গাড়িও চলাচল করে না। ফলে ক্ষতির সম্মুখীন হতে হচ্ছে কৃষক ও জনসাধারণকে।
স্থানীয় বাসিন্দা হাসিবুল হক সেজু জানান, বর্ষার পুরো সময়ই সড়কটি অনুপযোগী থাকায় রোগী, বয়স্ক লোকজন কিংবা অসুস্থ গর্ভবতী মহিলাদেরও অবর্ণনীয় দুর্ভোগ পোহাতে হয়। কখনো জরুরি প্রয়োজনে রিকশা, সিএনজি, অটোরিকশা নিয়ে রোগীদের বহনে অতিরিক্ত ভাড়া গুণতে হয়।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন জানান, সড়কটি সংস্কার করতে অনেক টাকার প্রয়োজন। ইউনিয়নে বরাদ্দ কম থাকায় এই সড়কটির সংস্কার করতে পারছেন না। তিনি সংসদ সদস্যের সহযোগিতা কামনা করেন।
স্থানীয় এমপি ময়েজ উদ্দিন রুয়েলসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে উলেস্নখিত সড়কটি যত দ্রম্নত সম্ভব মাটি ভরাটসহ পাকাকরণ করে জনদুর্ভোগ লাঘব করার জন্য এলাকার জনসাধারণ দাবি জানিয়েছেন।