বৃহস্পতিবার, ১০ অক্টোবর ২০২৪, ২৬ আশ্বিন ১৪৩১

আমন ধানের সবুজ পাতায় দুলছে কৃষকের স্বপ্ন

নওগাঁ প্রতিনিধি
  ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০০:০০
নওগাঁর আত্রাই উপজেলার শাহাগোলা গ্রামের বিস্তৃীর্ণ ধান ক্ষেত -যাযাদি

উত্তর জনপদের শস্য ভান্ডার খ্যাত নওগাঁর আত্রাই উপজেলার বিভিন্ন মাঠ থেকে বন্যার পানি কমে যাওয়ায় শঙ্কিত কৃষকরা আমন ধানের নতুন স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছেন। মাঠজুড়ে শুধু সবুজ আর সবুজ ধানের ক্ষেত। যে দিকেই চোখ যায় শুধু সবুজের সমারোহ। ফসলের মাঠ যেন সবুজ চাদরে ঢাকা। আত্রাইয়ের বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে যেন সবার নজর কাড়ছে আমন ক্ষেত। চারিদিকে এক নয়নাভিরাম দৃশ্য। কৃষকের আগামীর সোনালী স্বপ্ন লুকিয়ে আছে সবুজ ধানক্ষেতের মাঝে। প্রখর রোদ-বৃষ্টির খেলায় সবুজের আভা ছড়িয়ে পড়েছে চারিদিকে।

মাঠে মাঠে হাওয়ায় দুলছে আমন ধানের সবুজপাতা, আর আনন্দে দুলছে কৃষকদের মন। কৃষকের মনে উঁকি দিচ্ছে এক ভিন্ন আমেজ। সবুজঘেরা রোপা আমনের মাঠ দেখে বারবার ফিরে তাকায় কৃষক, থমকে দাঁড়ায় পথিক। আর কয়েক দিনের মধ্যেই সোনালী ধানের শীষে ঝলমল করবে মাঠের পর মাঠ। রাশি রাশি সোনালি ধানে ভরে উঠবে কৃষকের শূন্য গোলা। পাশাপাশি কৃষকের মুখে ফুটে উঠবে হাসি।

জানা যায়, এবারে উপজেলার ৮ ইউনিয়নে ৬ হাজার ৯৭০ হেক্টর জমিতে আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। ইতোমধ্যেই লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়েছে। বন্যা আতঙ্কের কারণে আমন চাষে কিছুটা বিলম্ব হচ্ছে বলেও উপজেলার কৃষকরা জানিয়েছেন। কৃষি বিভাগের তথ্য মতে উপজেলার ৮ ইউনিয়নের মধ্যে শাহাগোলা, মনিয়ারী ও ভোঁপাড়া ইউনিয়নে সর্বাধিক পরিমাণ জমিতে আমন ধানের চাষ হয়ে থাকে। এ ছাড়াও অন্যান্য ইউনিয়নের উঁচু জমিগুলোতে আমন ধানের চাষ করেন কৃষকরা। এসব এলাকার মাঠগুলোতে চাষকৃত আমন ধানের মধ্যে পাইজাম, জিরাসাইল, ব্রি-২৯সহ উচ্চ ফলনশীল অনেক জাতের হাইব্রিড ধানেরও চাষ হয়ে থাকে। এর সঙ্গে গত কয়েক বছর থেকে যোগ হয়েছে সু-ঘ্র্যাণের চিনিআতপ ধানের চাষ।

এদিকে মৌসুমের শুরুর দিকে অতি বর্ষণ ও রক্তদহ বিলের পানিতে শাহাগোলা, মনিয়ারী ও ভোঁপাড়া ইউনিয়নে বিভিন্ন মাঠ পানির নিচে তলিয়ে যায়। ফলে হাজার হাজার কৃষকের মাঝে আমন চাষ নিয়ে শঙ্কা দেখা দেয়। সম্প্রতি এসব মাঠ থেকে বন্যার পানি নেমে যাওয়ায় ওই কৃষকদের মাঝে বইছে আনন্দের ঢেউ। তারা পুরোদমে আমন চাষে মাঠে নেমেছেন। প্রতিকূল পরিস্থিতি সৃষ্টি না হলে এবারে এ উপজেলায় আমনে বাম্পার ফলন হবে বলে কৃষকরা আশা করছেন। উপজেলার শাহাগোলা গ্রামের কৃষক আজাদ আলী সরদার বলেন, মাঠ থেকে বন্যার পানি নেমে যাওয়ায় তারা পুরোদমে আমন ধানের চাষে মাঠে নেমেছেন। অনেকের আমন ধান রোপণ শেষ হয়েছে।

সাহেবগঞ্জ উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. জাহিদ হাসান জানান, 'বিশেষ করে অধিক ফলেন জন্য পরিমিত সার ব্যবহার, পানি সাশ্রয় এবং সার্বিক পরিচর্যায় কৃষকদের সচেষ্ট হতে আমরা সব সময়ই পরামর্শ দিয়ে আসছি। এবার আত্রাই উপজেলার কোথাও পোকার আক্রমণ নেই।

এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ প্রসেনজিৎ

তালুকদার বলেন, চলতি মৌসুমে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অধিক জমিতে আমন ধানের আবাদ হয়েছে। কৃষকদের আমন চাষে উদ্বুদ্ধ করতে বিভিন্ন সময় কৃষকদের প্রশিক্ষণ ও সরকারিভাবে প্রণোদণা দেওয়া হয়েছে। অল্প খরচে অধিক ফলন যাতে কৃষকরা করতে পারেন এজন্য আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারে তারা উদ্বুদ্ধ করেছেন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে