বৃহস্পতিবার, ১৫ মে ২০২৫, ১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২
সরকার নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে বাজারে মূল্য বেশি

দুপচাঁচিয়ায় চলতি মৌসুমে ধান-চাল সংগ্রহে সংশয়

দুপচাঁচিয়া (বগুড়া) প্রতিনিধি
  ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ০০:০০
দুপচাঁচিয়ায় চলতি মৌসুমে ধান-চাল সংগ্রহে সংশয়

আমন মৌসুমে চাল সংগ্রহের শুরু থেকেই ধান ও চালের বাজার বেশি হওয়ায় চালকল মালিকেরা গুদামে চাল সরবরাহে গড়িমসি করছেন। এতে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ধান ও চাল সংগ্রহ নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে।

সরেজমিনে কয়েকজন মিলারদের সঙ্গে কথা বললে তারা জানান, 'দুই থেকে তিন টাকা ভর্তুকি দিয়েও আমরা চাল পাচ্ছি না। এবার সরকার ধানের দাম কেজি প্রতি ৩৩ টাকা এবং চালের দাম কেজি প্রতি ৪৭ টাকা নির্ধারণ করেছে। মৌসুমের শুরুতে ধানের যে দর ছিল তাতেও চালকল মালিকেরা গুদামে চাল দিতে পারত। বর্তমানে বাজারে ধানের যে দাম তাতে চাল উৎপাদন করে সরকারি বেধে দেওয়া মূল্যে চাল গুদানে সরবরাহ করলে বিপুল পরিমান অর্থ খোয়া যাবে।

1

বর্তমানে মোটা ধান বাজারে ১হাজার ৩৫০টাকা থেকে ১হাজার ৩৮০টাকা মণ বেচা কেনা হচ্ছে। এই দামে ধান ক্রয় করে চাল উৎপাদন করলে সরকার নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে ৩-৪টাকা বেশি খরচ হবে।'

উপজেলা খাদ্যনিয়ন্ত্রক কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, এবার এ উপজেলায় আমন ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ৮০৪ মে. টন এবং চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ৪ হাজার ৯৮৮ মে. টন নির্ধারণ করা হয়েছে। ২২ ডিসেম্বর বিকেল পর্যন্ত চাল সংগ্রহ হয়েছে ১হাজার ৯৫১মে.টন। এ উপজেলায় ১৫১টি চাল কলের মধ্যে ১১১টি চালকল মালিক সরকারি খাদ্যগুদামে চাল দেওয়ার জন্য চুক্তিবদ্ধ হয়েছে। এর মধ্যে ১৩টি অটোমেটিক রাইচ মিল রয়েছে। ২০২৫সালের ২৮ফেব্রম্নয়ারি পর্যন্ত এ সংগ্রহ অভিযান চলবে।

কৃষক আব্দুল মান্নান বলেন, 'সরকারি নির্ধারিত ধানের দামের চেয়ে বাজারে ধানের দাম অনেক বেশি। বর্তমানে রনজিৎ জাতের ধান বাজারে ১হাজার ৫৪০ থেকে ১হাজার ৫৬০ টাকা মণ পর্যন্ত চলছে। তাই গুদামে ধান দেইনি।'

হোসেন চাউল কলের স্বত্বাধিকারী আব্দুল কুদ্দুস বলেন, 'আমার মিলের নামে বরাদ্দকৃত চাল সরকারকে দেওয়ার জন্য চুক্তিপত্র করেছি। বর্তমান বাজার দরে চাল দিলে প্রতি কেজিতে তিন থেকে চার টাকা লোকসান হবে।'

উপজেলা চাউল কল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক জান্নাতুল ফেরদৌস বলেন, 'কয়েক বছর হলো ধানের দরের সঙ্গে উৎপাদিত চালের দরের কোনো মিল নেই। বিগত বছরের তুলনায় উৎপাদিত চালের দাম বেশি হওয়ায় মিল মালিকরা সরকারকে চাল দিতে আগ্রহ হারাচ্ছে।'

উপজেলা খাদ্যনিয়ন্ত্রক মনিরুল হক বলেন, ধান ও চালের দর বেড়ে যাওয়ায় চলতি মৌসুমে ধান সংগ্রহ নিয়ে কিছুটা শংকিত। চাল সংগ্রহের জন্য চুক্তিবদ্ধ মিলারদের নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে গুদামে চাল দেয়ার জন্য অনুরোধ করেছি। এরপরও যেসব মিলাররা চাল দিবে না তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে