পার্বত্য জেলা গুলোর পাহাড়ে পাহাড়ে এবার জেঁকে বসেছে শীত। তাপমাত্রা কমতে থাকায় বেড়েছে শীতের তীব্রতা। সমতল কি পাহাড়ি অঞ্চল, সর্বত্র এখন শীতের ডাক। রাতের কুয়াশার আবরণ আর সকালের শিশিরবিন্দু দেখে আপস্নুত হন অনেকে। দিনে কিছুটা গরম অনুভূত হলেও সন্ধ্যার পর থেকে সকাল পর্যন্ত দেখা দিচ্ছে ঘন কুয়াশা।
পাহাড়ি জেলা রাঙামাটির লংগদুতে শীতের তীব্রতায় কাঁপছে উপজেলার সব শ্রেণি-পেশার মানুষ। শীতবস্ত্রের অভাবে চরম কষ্ট পাচ্ছে পাহাড়ের শ্রমজীবী, দিনমজুর, দরিদ্র শ্রেণির অসহায় মানুষগুলো।
প্রচন্ড শীতে দৈনন্দিন কাজকর্মে দুর্ভোগ পোহাচ্ছে শীতার্ত মানুষগুলো। শীতের তীব্রতায় স্বাস্থ্য কমপেস্নক্স ও হাসপাতাল গুলোতে সর্দি-কাশিসহ ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত নারী, পুরুষ এবং শিশু রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
এ দিকে লংগদুর প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর শীত নিবারণের লক্ষ্যে প্রত্যন্ত জনপদে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী লংগদু জোন, বিজিবি শীতবস্ত্র বিতরণের মাধ্যমে শীতার্তদের পাশে দাঁড়ালেও স্থানীয়ভাবে কোনো জনপ্রতিনিধি এখন পর্যন্ত শীতার্ত মানুষদের পাশে দাঁড়াননি বলে অভিযোগ শীতার্তদের।
স্থানীয়রা বলেন, শীতের তীব্রতায় কাঁপছে পাহাড়ের শীতার্ত গরিব মানুষ। শীত নিবারণের জন্য খরকুটো দিয়ে আগুন জ্বালিয়ে উত্তাপ নিচ্ছেন সাধারণ মানুষ; কিন্তু শীতার্ত মানুষদের পাশে নেই জনপ্রতিনিধিরা। তারা এখনো কোনো শীতবস্ত্র বিতরণ করেননি।
লংগদুর দুর্গম ধনপুতি এলাকার বাসিন্দা রমেন চাকমা বলেন, তীব্র শৈত্য প্রবাহে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। কনকনে ঠান্ডার চরম অসহায় হয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছে গোটা পাহাড়ের মানুষ। তীব্র শীতে কাজে যেতে পারছে না নিম্নবিত্ত ও দিনমজুর শ্রেণির মানুষ। হতদরিদ্র মানুষ শীত মোকাবেলায় চরমভাবে হিমশিম খেলেও কেউ এগিয়ে আসছেন না।
রাঙামাটি আঞ্চলিক আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের তথ্যমতে, রাঙামাটিতে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ২৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর মধ্যে লংগদুতে শীতের আধিক্য তুলনামূলক বেশি।
আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের সিনিয়র অবজারভার ক্যা চি নু মারমা জানান, রাঙামাটিতে শীতের তীব্রতা ধীরে ধীরে বাড়ছে।
ভোর রাত থেকে সকাল পর্যন্ত তাপমাত্রা সবচেয়ে কম থাকে। এসময় বিভিন্ন স্থানে হালকা থেকে মাঝারি কুয়াশা দেখা যায়। তবে কুয়াশার স্থায়িত্ব বেশি নয়।
রাঙামাটি সিভিল সার্জন নূয়েন খীসা জানান, শীতে ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে মানুষ। সদর হাসপাতাল এবং স্বাস্থ্য কমপেস্নক্স গুলোতে ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত রোগীদের সংখ্যাও বাড়ছে ক্রমশ। তবে পরিস্থিতি মোকাবেলায় প্রস্তুতি রয়েছে স্বাস্থ্য বিভাগ; কিন্তু এ সময়ে মানুষকে আরও বেশি সতর্ক এবং সচেতন থাকার পরামর্শ দেন তিনি।