সোমবার, ২৬ মে ২০২৫, ১১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

কেশবপুরে অবৈধ ১৩ ভাটায় ইট উৎপাদন শুরু

কেশবপুর (যশোর) প্রতিনিধি
  ৩১ ডিসেম্বর ২০২৪, ০০:০০
কেশবপুরে অবৈধ ১৩ ভাটায় ইট উৎপাদন শুরু
যশোরের কেশবপুরে বেগমপুর বাজারে পাশে কৃষি জমিতে অবৈধভাবে গড়ে ওঠা ইটভাটা -যাযাদি

যশোরের কেশবপুরে অবৈধভাবে গড়ে উঠেছে ১৩টি ইটভাটা। অধিকাংশ ইটভাটা জনবসতিপূর্ণ এলাকাসহ জনবহুল রাস্তার পাশে কৃষি জমি দখল করে গড়ে উঠেছে। অধিকাংশ ভাটাকে ইতোমধ্যে ১৪ থেকে ১৫ লাখ ইট কেটে পোড়ানোর জন্যে প্রস্তুত করা হয়েছে। এরমধ্যে বারুইহাটির চৌরাস্তা মোড়ের রোমান ব্রিকস ইটভাটা পরিবেশ অধিদপ্তর অভিযান চালিয়ে বুলডোজার দিয়ে গুড়িয়ে দেয়। পরের দিন ওই ভাটা মালিক পুণরায় ভাটার কার্যক্রম শুরু করেন। এ যেন দেখার কেউ নেই।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, কেশবপুর-চিংড়া সড়কের শ্রীরামপুর বাজারের ১০০ গজের ভেতর রাস্তার গা ঘেষে গোল্ড ব্রিকস ও গাজী ব্রিকস, এ সড়কের বারুইহাটির চৌরাস্তা মোড়ে রোমান ব্রিকস, কেশবপুর-ত্রিমোহিনী সড়কের দোরমুটিয়া গ্রামের কৃষি জমিতে কেশবপুর ব্রিকস, সাতবাড়িয়া গ্রামের বাজারের পাশে রহমান ব্রিকস ও আলম ব্রিকস, বেগমপুর বাজারের পাশে সাতবাড়িয়া সড়কের গায়ে রিপন ব্রিকস, বগা শাহা কারারিয়া ফাজিল মাদ্রাসার পাশে বিএসবি ব্রিকস, সন্ন্যাসগাছা রাস্তার পাশে বিউটি ব্রিকস, রয়নাবাজ এলাকায় এসএসবি ব্রিকস ও হরিনদীর অববাহিকায় প্রাণ ব্রিকসসহ ১৩টি অবৈধ ইটভাটা গড়ে উঠেছে।

1

এ দিকে, গত ২৭ নভেম্বর যশোরের উপপরিচালক ইমদাদুল হক ও খুলনা বিভাগীয় কার্যালয়ের নির্বাহী ম্যজিস্ট্রেট শরিফুল ইসলামের নেতৃত্বে অভিযান চালিয়ে অবৈধ বারুইহাটির চৌরাস্তা মোড়ে রোমান ব্রিকস বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। পরের দিন থেকে ভাটা মালিক আবুবকর সিদ্দিক পুরোদমে ভাটার কার্যক্রম শুরু করেন। ইতোপূর্বে তিনবার ভাটাটি গুঁড়িয়ে দিয়েছিল পরিবেশ দপ্তর। এ নিয়ে এলাকায় চরম অসন্তোষ বিরাজ করছে।

ইট প্রস্তুত ও ভাটা নিয়ন্ত্রণ আইন ২০১৩-এর ৮(১) তে বলা আছে কৃষি জমিতে কোনো ইটভাটা স্থাপন করা যাবে না। শুধু তাই নয়, ওই আইনের ৩(ক) তে বলা হয়েছে, নির্ধারিত সীমারেখার (ফসলি জমি) এক কিলোমিটারের মধ্যেও কোনো ইটভাটা করা যাবে না। এ আইনের কোনো তোয়াক্কা না করেই কেশবপুরে অবৈধ ইটভাটা গড়ে উঠেছে। বিস্বস্ত একটি সূত্র জানায়, চলতি বছর এসব ভাটা পরিবেশ দপ্তরের ছাড়পত্র না পেলেও প্রায় সব ইটভাটায় ১৪ থেকে ১৫ লাখ ইট কেটে পোড়ানোর জন্যে প্রস্তুত করা হয়েছে। কিছুদিন গেলেই ভাটাগুলো পুরোদমে ইট উৎপাদনে যাবে বলে ভাটা মালিকরা জানান।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, প্রতিটি ভাটা স্থাপনের সময় জনগণ বাধা দিয়েছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত প্রশাসনকে ম্যানেজ করেই স্থাপন করা হয় অবৈধ ইটভাটা। প্রতিটি ভাটার পাশে কৃষি জমির টপ সয়েল কেটে বিশাল স্তূপ করে রাখা হয়েছে। ভাটার ট্রাক্টরে করে প্রতিনিয়ত কৃষি জমির টপ সয়েল বহনের কারণে নষ্ট হচ্ছে কৃষি জমি, গ্রামীণ রাস্তাঘাট। এতে কমছে চার ফসলি জমি। ভাটার কালো ধোয়ার প্রভাবে দিন দিন কমে যাচ্ছে ফসলের উৎপাদন। ঘটছে পরিবেশের বিপর্যয়। প্রশাসনের নীরাবতায় ভাটা মালিকরা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে।

এ বিষয়ে বক্তব্য নিতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাকির হোসেনের সরকারি মোবাইল ফোনে কল করেও তাকে পাওয়া যায়নি।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে