নানা দাবি নিয়ে তিন জেলায় মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। ফরিদপুরে চিকিৎসকের ওপর হামলার বিচার দাবি, বগুড়ার শাজাহানপুরে হত্যা মামলার আসামিকে গ্রেপ্তার ও ব্রাহ্মবািড়য়ার আখাউড়ায় স্কুল শিক্ষকের অপসারণসহ ৫ দফা দাবিতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। প্রতিনিধিদের পাঠানো বিস্তারিত খবর-
ফরিদপুর প্রতিনিধি জানান, ফরিদপুরের অর্থোপেডিক চিকিৎসক শাহিন আক্তার জোদ্দারের ওপর হামলার বিচারের দাবিতে ফরিদপুরের সর্বস্তরের চিকিৎসকবৃন্দের মানববন্ধন ও সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
মঙ্গলবার শহরের মুজিব সড়কে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। পরে একই দাবিতে ফরিদপুর প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে চিকিৎসকদের সংগঠন।
প্রেস ক্লাবের সভাপতি কবিরুল ইসলাম সিদ্দিকীর সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক মাহবুব হোসেন পিয়ালের সঞ্চালনায় সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোর্শেদ মোরসালিন। বক্তব্য রাখেন স্বাচিবের সভাপতি ডাক্তার অসম জাহাঙ্গীর চৌধুরী টিটো, মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পরিচালক হুমায়ুন কবির, মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ডাক্তার দিলরুবা জেবা।
শাজাহানপুর (বগুড়া) প্রতিনিধি জানান, বগুড়ার শাজাহানপুরে কামার পাড়া গ্রামে মনজিলা খাতুন নামে এক গর্ভবতী নারীকে হত্যার প্রতিবাদ এবং আসামিদের গ্রেপ্তার করার দাবিতে মানববন্ধন করেছে এলাকাবাসী। গত সোমবার এ মানববন্ধন হয়।
এলাকাবাসী জানায়, দীর্ঘদিন ধরে মনজিলার স্বামী তুহিন এবং তার শশুর আজিজ মিয়া একটি ইজিবাইক কেনার জন্য যৌতুক দাবি করে আসছিলেন। কিন্তু মনজিলার রিকশা চালক বাবা সেই টাকা দিতে না পারায় মনজিলার উপর শারীরিক ও অমানুষিক নির্যাতন চালান তারা। এরই ধারাবাহিকতায় গত ১৪ ডিসেম্বর মনজিলাকে স্বামী শশুড় মিলে গলাটিপে হত্যা করে আত্মহত্যার নাটক সাজান। এ বিষয়ে শাজাহানপুর থানায় অভিযোগ করলেও আসামিরা রয়েছে ধরাছোয়ার বাইরে। তাই অবিলম্বে আসামিদের গ্রেপ্তার ও আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছে এলাকাবাসী।
আখাউড়া (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি জানান, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় ছয়ঘড়িয়া শাহ আলম উচ্চ বিদ্যালয়ের বহিষ্কৃত (ভারপ্রাপ্ত) প্রধান শিক্ষক সেলিনা বেগমের অপসারণসহ ৫ দফা দাবিতে মানববন্ধন করা হয়েছে। এলাকাবাসী, অভিভাবক ও ছাত্র-ছাত্রীদের উদ্যোগে মঙ্গলবার সকালে উপজেলা পরিষদের সামনে এ মানববন্ধন হয়। মানববন্ধন থেকে তিন দিনের মধ্যে ৫ দফা দাবি আদায় না হলে ইউএনও অফিস এবং শিক্ষা অফিস ঘেরাও করার হুশিয়ারি দেওয়া হয়।
মোগড়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মো. নান্নু মিয়ার সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন সাবেক ইউপি সদস্য মুরশিদ মিয়া, ডা. হান্নান মিয়া, আনু মিয়া মেম্বার, সাবেক মেম্বার সহিদ মিয়া, প্রাক্তন ছাত্র শিমুল মিয়া প্রমুখ।
পঞ্চগড় প্রতিনিধি জানান, পঞ্চগড়ে পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট নির্মাণের জন্য ৫ লাখ টাকা শতক মূল্যের কৃষিজমি মাত্র ৯ থেকে ১২ হাজার টাকায় অধিগ্রহণ চেষ্টার প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে ভুক্তভোগী জমি মালিকরা। মঙ্গলবার সদর উপজেলার খোলাপাড়া এলাকায় কর্মসূচি পালন করেন তারা।
এ সময় ভুক্তভোগিরা জানান, আরাজি শিকারপুর মৌজার খোলাপাড়া এলাকায় মহাসড়কের পাশের ১৫ বিঘা জমিতে তারা হাসপাতাল করার পরিকল্পনা করেছিলেন। কিন্তু বছর দুইয়েক আগে ওই জমিতে পঞ্চগড় পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট করতে জমি অধিগ্রহণের জন্য জমি মালিকদের নোটিশ করা হয়। এমনকি জমি মালিকদের না জানিয়ে ৫ লাখ টাকা শতকের জমি মাত্র ৯ থেকে ১২ হাজারে মূল্য নির্ধারণ করে অধিগ্রহণের জন্য চূড়ান্ত করেন তৎকালীন জেলা প্রশাসনের কিছু অসাধু কর্মকর্তা। ফসলি জমিকে পতিত ও ছনবাড়ি দেখানো হয়েছে। ওই মৌজার একেবারে প্রত্যন্ত এলাকার নিম্ন দরের জমির মূল্য গড় করে উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে এই দর নির্ধারণ করা হয়েছে বলে দাবি করেন জমি মালিকরা।
স্থানীয় বাসিন্দা শরিফুল ইসলাম সুমন বলেন, বর্তমানে এখানে প্রতি শতক জমি বিক্রি হচ্ছে ৫ লাখ টাকার উপরে। কিন্তু এখানে যে দর নির্ধারণ করা হয়েছে তা মানা যায় না।
পঞ্চগড় জেলা প্রশাসনের ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তা শায়লা সাঈদ তন্বী বলেন, পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটের জন্য আইন মেনেই জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। ১২ মাসে ৪০টি জমি কেনাবেচার দলিল যাচাই করে মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে।