সোমবার, ২৬ মে ২০২৫, ১১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

দুর্গাপুরে ভুল চিকিৎসায় প্রসূতি ও নবজাতকের মৃতু্যর অভিযোগ হাসপাতাল ঘেরাও

দুর্গাপুর (রাজশাহী) প্রতিনিধি
  ০১ জানুয়ারি ২০২৫, ০০:০০
দুর্গাপুরে ভুল চিকিৎসায় প্রসূতি ও নবজাতকের মৃতু্যর অভিযোগ হাসপাতাল ঘেরাও

রাজশাহীর দুর্গাপুরে বেসরকারি মালিকানায় পরিচালিত মা ও শিশু হাসপাতালে ভুল চিকিৎসায় এক প্রসূতি ও নবজাতকের মৃতু্যর অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় হাসপাতালে ঘেরাও করে বিক্ষোভ চালিয়েছে স্বজনরা। খবর পেয়ে টহলরত সেনাবাহিনীর একটি টিম ও পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।

গত রোববার মধ্যরাতে উপজেলা সদরের শালঘরিয়া রোডে অবস্থিত মা ও শিশু হাসপাতালে এ ঘটনা ঘটেছে। ভুল চিকিৎসায় মারা যাওয়া ওই প্রসূতির নাম রোকসানা বেগম (২২)। তিনি উপজেলার দেবীপুর গ্রামের আবু হানিফের স্ত্রী।

1

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ঘটনার পর প্রসূতির স্বজনরা হাসপাতালের চিকিৎসক ও কর্মচারীদের কয়েক ঘন্টা অবরোধ করে রাখে। এ সময় প্রসূতির মরদেহ বহনকারী গাড়ি হাসপাতালের মূল ফটকে রেখে অবস্থান নেয় স্বজনরা। খবর পেয়ে পুলিশ ও টহলরত সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

প্রসূতি রোকসানার স্বামী আবু হানিফ জানান, গত রোববার রাত ১১ টার দিকে তার অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে মা ও শিশু হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেস্নক্সের আবাসিক চিকিৎসক (আরএমও) ডা. মিল্টনসহ কয়েকজন ছিলেন। তাদের দেখানোর পরপরই চিকিৎসকরা স্ত্রী রোকসানাকে দ্রম্নত সিজারিয়ান অপারেশন করতে হবে বলে জানান। চিকিৎসকের কথামতো তিনি স্ত্রীকে ওই হাসপাতালে ভর্তি করান। হঠাৎ করে রাত ১২টার দিকে হাসপাতালের ব্যবস্থাপক জানান তার স্ত্রীকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিতে হবে। পরে মাইক্রোবাসে রাজশাহীর পথে রওনা হন। তবে হাসপাতাল থেকে বের হওয়ার আগেই অর্থাৎ ওটি রুমে তার স্ত্রীর শরীরে একটি ইনজেকশন দেওয়া হয়েছিল। তার স্ত্রীর নড়াচড়াও ছিল না। ওটি রুমেই তার স্ত্রী মারা গেছে। আবু হানিফের অভিযোগ, মা ও শিশু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ নিজেরা বাঁচতে তার মৃত স্ত্রীকে রাজশাহীতে পাঠানোর পরামর্শ দেয়।

এ বিষয়ে জানতে মা ও শিশু হাসপাতালের ব্যবস্থাপককে কর্মস্থলে পাওয়া যায়নি। মোবাইল ফোনে কল দিলেও তিনি কল ধরেননি।

হাসপাতালের সহকারী ব্যবস্থাপনা পরিচালক জাকির হোসেন জানান, 'প্রসূতি রোগীটি এই হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে আসার পর ওনার শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। পরে তাৎক্ষণিক রাজশাহী হাসপাতালে রেফার করা হয়। পরে শুনেছি মারা গেছেন। হঠাৎ রাতে এসে মাইক্রোবাসে করে লাশ নিয়ে হাজির হয়ে হাসপাতালে অবরোধ করেন স্বজনরা। আমাদের হাসপাতাল কোনোভাবেই এই মৃতু্যর জন্য দায়ী নয়।' অভিযোগের বিষয়ে ডা. মিল্টন এর মোবাইল ফোনে কল করা হলেও তিনি কল ধরেননি।

উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা (টিএইচও) ডা. রুহুল আমিন বলেন, 'বিষয়টি রাতেই শুনেছি। স্বজনদের লিখিত অভিযোগ পেলে বিধি মোতাবেক আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'

দুর্গাপুর থানার ওসি দুরুল হোদা বলেন, 'ঘটনা শুনেছি। তবে এখন পর্যন্ত কেউ অভিযোগ নিয়ে থানায় আসেননি।'

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে