বৃহস্পতিবার, ১৫ মে ২০২৫, ১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন

গুলিবিদ্ধ কসবার আল আমিনের টাকার অভাবে চিকিৎসা বন্ধ

শাহপরান, কসবা (ব্রাহ্মণবাড়িয়া)
  ১৬ জানুয়ারি ২০২৫, ০০:০০
গুলিবিদ্ধ কসবার আল আমিনের টাকার অভাবে চিকিৎসা বন্ধ

ঢাকার রায়েরবাগের কদমতলী থানার সামনে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে পুলিশে গুলিতে গুরুতর আহত ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবার আল আমিন। কাজ করার ক্ষমতা হারিয়ে বয়ে বেড়াচ্ছেন ক্ষতের যন্ত্রনা। টাকার অভাবে চিকিৎসা করতে না পেরে করছেন মানবেতর জীবন যাপন। আহত আল-আমিন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলার মুলগ্রাম ইউনিয়নের রাইতলা গ্রামে মৃত একিন আলী ছেলে। ছয় ভাই আর এক বোনের মধ্যে সবার ছোট। আল-আমিন চার সন্তানের জনক।

পরিবার ও স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে, আল আমিনের পেশা সেলুনের কাজ। অভাবের তাড়নায় ১৫ জুলাই ঢাকায় গিয়েছিলেন কাজের সন্ধানে। রায়েরবাগ এলাকায় একটি পরিচিত দোকানে কাজে যোগ দেন। ১৬ জুলাই তার চোখের সামনে একটি শিশুসহ শিশুর পিতাকে গুলি করে পুলিশ। এ ঘটনায় তার মনে দাগ কাটে। ওইদিনই যোগ দেন আন্দোলনে। ১৮ জুলাই সন্ধ্যায় রায়েরবাগ কদমতলী এলকায় আল আমিনসহ তার সঙ্গে থাকা বেশ কয়েকজন আন্দোলনকারীকে গুলি করে পুলিশ। সঙ্গে থাকা দুইজন ঘটনাস্থলেই মারা গেলেও কোনো মতে বেঁচে যান আল আমিন।

1

পুলিশ চলে গেলে ওই এলাকার ছাত্রদের সহযোগিতায় এক ভ্যানচালক হাসপাতালে নিয়ে যায় তাকে। সেখানেও কোনো মুল্যায়ন নেই। ফ্লোরে শুয়ে কাতরাচ্ছিলেন। ওই হাসপাতালের এক চিকিৎসক ঘটনা শুনে তাকে চিকিৎসার ব্যবস্থা করে দেন। পরিবার প্রায় ২ লাখ টাকা ধার দেনা করে প্রাথমিক চিকিৎসা করালেও অর্থাভাবে হাসপাতাল থেকে চলে আসতে হয়। বাহির থেকে ক্ষত শুকালেও পেটের ভেতর অসহ্য যন্ত্রনা নিয়ে কাতরাচ্ছেন। প্রতি মাসে ১৫ হাজার টাকার ওষুধ লাগে। এ পর্যন্ত কেউই নেয়নি তার খবর। গ্রামের মানুষের সাহায্যে চলছে পরিবার। সরকারি সহযোগিতায় তার চিকিৎসাসহ তাকে আর্থিক সহায়তার আবেদন করে গ্রামবাসী।

টাকার অভাবে ছেলে-মেয়েদের স্কুলে ভর্তি করাতে পারছেন না। নতুন করে দেখা দিয়েছে আল-আমিনের হার্নিয়া নামক একটি রোগ। চিকিৎসক জানিয়েছেন অপারেশন করতে হবে। টাকার অভাবে অপারেশনও করতে পারছেন না। গ্রামের বাড়িতে শুয়ে থাকেন আল-আমিন। মাঝে-মধ্যে ঘরের বাহিরে গিয়ে বসেন। কাজ করার ক্ষমতা হারিয়ে বয়ে বেড়াচ্ছেন ক্ষতের যন্ত্রণা। আহত আল-আমিনের স্ত্রী সোহেদা আক্তার বলেন, কিছু টাকা পয়সা ছিল। স্বামীর চিকিৎসায় সেগুলো শেষ হয়ে গেছে। তার স্বামীর আরও একটি নতুন রোগ দেখা দিয়েছে। তারও চিকিৎসা করতে পারছেন না। সরকারিভাবে কোন সহযোগিতা না পেলে চার বাচ্চা নিয়ে চলতে খুবই অসুবিধা হচ্ছে। তিনি সরকারের সহযোগিতা কামনা করছেন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে