বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

মুক্তিযুদ্ধের 'প্রচারযুদ্ধ' ইতিহাসে আলাদাভাবে গুরুত্ব পায়নি

'বিদ্রোহী মার্চ' শীর্ষক আলোচনায় বক্তারা
যাযাদি ডেস্ক
  ১৯ মার্চ ২০২৩, ০০:০০
মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মল হক শনিবার বাংলা একাডেমির কবি শামসুর রাহমান সেমিনার কক্ষে 'বিদ্রোহী মার্চ' আলোচনা সভায় 'আমার ও আমাদের একাত্তর' বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করেন -ফোকাস বাংলা

স্বাধীনতা আন্দোলন এবং বাঙালি সংস্কৃতি বিকাশে প্রচারযুদ্ধের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। একাত্তরের 'গণহত্যা'র মতো 'প্রচারযুদ্ধ' আলাদাভাবে কখনো গুরুত্ব পায়নি। প্রচারযুদ্ধের সংশপ্তকেরা রাষ্ট্রের কাছ থেকেও কখনো বিশেষ স্বীকৃতি পাননি। তবে স্বাধীনতা আন্দোলন এবং বাঙালি সংস্কৃতি বিকাশে এই প্রচারযুদ্ধের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। তাই এ নিয়ে অনেক বেশি কাজ হওয়া উচিত।

শনিবার সকালে বাংলা একাডেমির কবি শামসুর রাহমান সেমিনার কক্ষে 'বিদ্রোহী মার্চ' শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠানে বক্তারা এসব কথা বলেন।

অনুষ্ঠানে 'আমার একাত্তর' ও 'আমাদের একাত্তর' নামে দুটি বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করা হয়। এতে 'বিদ্রোহী মার্চ' শীর্ষক মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন গণহত্যা-নির্যাতন আর্কাইভ ও জাদুঘরের ট্রাস্টি এবং গবেষক শাহরিয়ার কবির। শাহরিয়ার কবির

বলেন, 'আমার একাত্তর' বইটি তার লেখা। তবে 'আমাদের একাত্তর' বইটি মুক্তিযুদ্ধের সময় মাহমুদুর রহমান, মুস্তাফা মনোয়ার, মামুনুর রশীদ, শাহীন সামাদ, শর্মিলা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো শিল্পীদের স্মৃতিকথা নিয়ে সম্পাদনা।

শাহরিয়ার কবির বলেন, 'যুদ্ধের সময় ক্যাম্পে ক্যাম্পে ট্রানজিস্টার শুনে মুক্তিযোদ্ধাদের অনুপ্রাণিত হওয়ার দৃশ্য মানুষের স্মৃতিতে আছে। তখন চরমপত্র শুনে উদ্দীপ্ত হতেন যোদ্ধারা। কিন্তু সেই শিল্পীরা সঠিক মর্যাদা পাননি। তখন বিদেশি সংবাদমাধ্যমের কাছে প্রচারযুদ্ধই আমাদের মুক্তিযুদ্ধের গুরুত্ব তুলে ধরেছিল।'

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন, 'পাকিস্তান সৃষ্টি হয়েছিল বাঙালিদের ভোটেই। কিন্তু অল্প সময়েই বোঝা গেছে, আমরা ইংরেজ শাসকের পরিবর্তে পেয়েছি পাকিস্তানি শাসক। যুদ্ধের প্রস্তুতি শুরু হয়েছিল তখন থেকেই। তবে ইতিহাস কখনো বেতনভুক্ত কর্মচারীরা নিরপেক্ষভাবে লিখতে পারে না। নির্মোহ হয়ে ইতিহাস লিখতে হয় গবেষক, ইতিহাসবিদ এবং সাধারণ মানুষকে।' তাই মহান মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস লিখতে তাদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি।

অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে ইতিহাসবিদ ও গণহত্যা-নির্যাতন আর্কাইভ ও জাদুঘরের ট্রাস্টি সভাপতি মুনতাসীর মামুন বলেন, 'সবার একাত্তর মিলিয়ে হয়েছে আমাদের একাত্তর। মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয় এখনো আমার একাত্তর চেতনা নিয়ে চলে। জাতি এখন বিভক্ত সনদ পাওয়া মুক্তিযোদ্ধা আর সনদহীন মুক্তিযোদ্ধা। অথচ সত্যিকারভাবে মুক্তিযুদ্ধ করা বহু মানুষের সনদ নেই।' পৃথকভাবে মুক্তিযুদ্ধ দিবস এবং জনযুদ্ধ দিবস হওয়া উচিত বলে উলেস্নখ করেন তিনি। এ সময় তার বক্তব্যে উঠে আসে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেওয়া সনদ না পাওয়া মানুষের কয়েকটি ঘটনার কথা।

এ ছাড়া অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন 'আমার একাত্তর' ও 'আমাদের একাত্তর' বই দুটির প্রকাশক অনন্যা প্রকাশের স্বত্বাধিকারী মনিরুল হক, বাংলাদেশ ইতিহাস সম্মিলনীর সাধারণ সম্পাদক মুর্শিদা বিনতে রহমান এবং বাংলাদেশ ইতিহাস সম্মিলনীর সভাপতি মো. মাহবুবর রহমান।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে