দেশের ৩৭টি সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৭৮ শিক্ষার্থীকে 'প্রধানমন্ত্রী স্বর্ণপদক'-২০১৯ প্রদানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। বিভিন্ন অনুষদে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পরীক্ষায় সর্বোচ্চ নম্বর বা সিজিপিএ অর্জন করায় তাদের এ স্বর্ণপদক দেওয়া হচ্ছে। এবার প্রাথমিকভাবে মনোনীতদের তালিকায় সর্বোচ্চ ১১ জন স্বর্ণপদক পাচ্ছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। রোববার এ সংক্রান্ত একটি নির্দেশনা ইউজিসির ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, এবার ৩২টি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে (জাতীয়, উন্মুক্ত ও ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয় ব্যতীত) মোট ১৭৩ জন শিক্ষার্থী এই স্বর্ণপদকের জন্য প্রাথমিকভাবে মনোনীত হয়েছেন। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়, উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় ও ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে একজন করে মোট তিনজন শিক্ষার্থী এই স্বর্ণপদকের জন্য প্রাথমিকভাবে মনোনীত হয়েছেন। তা ছাড়া বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দুইজন শিক্ষার্থী এই স্বর্ণপদকের জন্য প্রাথমিকভাবে মনোনীত হয়েছেন।
আমাদের রাজশাহী অফিস জানায়, বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) 'প্রধানমন্ত্রী স্বর্ণপদক-২০১৯' -এর জন্য মনোনীত শিক্ষার্থীদের যে তালিকা প্রকাশ করেছে, তাতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের নয়জন আছেন। সোমবার ইউজিসির ওয়েবসাইটে মনোনীত শিক্ষার্থীদের তালিকা প্রকাশ করা হয়।
স্বর্ণপদকের জন্য মনোনীত নয়জন হলেন- কলা অনুষদভুক্ত আরবি বিভাগের হাসমতুলস্নাহ, আইন অনুষদভুক্ত আইন বিভাগের আফসান এলাহি, বিজ্ঞান অনুষদভুক্ত পরিসংখ্যান বিভাগের মো. কাদেরী কিবরিয়া, ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদভুক্ত ব্যাংকিং অ্যান্ড ইন্সু্যরেন্স বিভাগের রমজান আলী, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদভুক্ত আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের মোস্তাকিম খান, জীববিজ্ঞান অনুষদভুক্ত উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের ইসরাত জাহান, কৃষি অনুষদভুক্ত অ্যাগ্রোনমি অ্যান্ড অ্যাগ্রিকালচার এক্সটেনশন বিভাগের সুমাইয়া আফসানা, প্রকৌশল অনুষদভুক্ত ইনফরমেশন অ্যান্ড কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের মো. শরিফুল ইসলাম এবং চারুকলা অনুষদভুক্ত গ্রাফিক ডিজাইন, কারুশিল্প ও শিল্পকলার ইতিহাস বিভাগের মণিকা আমেলিয়া।
আমাদের চবি প্রতিনিধি জানান, প্রধানমন্ত্রী স্বর্ণপদক-২০১৯ এর জন্য চূড়ান্তভাবে মনোনীত হয়েছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) বিভিন্ন অনুষদের আটজন শিক্ষার্থী। মনোনীতরা হলেন- কলা ও মানববিদ্যা অনুষদের থেকে আরবি বিভাগের শিক্ষার্থী জহির ফুরকান (৩.৮৫), বিজ্ঞান অনুষদের বন ও পরিবেশবিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ নূর আলী (৩.৯৬), ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ নেওয়াজ জামিল (৩.৮৪), সমাজবিজ্ঞান অনুষদের অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী জান্নাতুল ফেরদৌস (৩.৭২), আইন অনুষদের আইন বিভাগ থেকে উম্মে হাবিবা (৩.৭৪), ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের ফিন্যান্স বিভাগের শিক্ষার্থী তাসফিকা খানম (৩.৯২), মেরিন সায়েন্স অ্যান্ড ফিশারিজ অনুষদের সমুদ্রবিজ্ঞান বিভাগ থেকে রাইয়ান আহমেদ (৩.৮১) এবং জীববিজ্ঞান অনুষদের মৃত্তিকা বিজ্ঞান বিভাগ থেকে তাহসিনা শামস সাদিয়া (৩.৯৭)।
জাবি প্রতিনিধি জানান, প্রধানমন্ত্রী স্বর্ণপদক পাচ্ছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছয় শিক্ষার্থী। তারা প্রত্যেকেই নারী শিক্ষার্থী। মনোনীত শিক্ষার্থীরা হলেন- কলা ও মানবিকী অনুষদভুক্ত নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের মৌসুমী আক্তার (সিজিপিএ-৩.৮০), গাণিতিক ও পদার্থবিষয়ক অনুষদভুক্ত পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের বিউটি আক্তার (সিজিপিএ-৩.৯১), সমাজবিজ্ঞান অনুষদভুক্ত অর্থনীতি বিভাগের মারুফাতুন নাহার (৩.৯৬), জীববিজ্ঞান অনুষদভুক্ত মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের মুমতারিন জান্নাত ঐশী (৩.৯৫), বিজনেস স্টাডিজ অনুষদভুক্ত মার্কেটিং বিভাগের রাবেয়া জান্নাত (৩.৯৩) এবং আইন অনুষদভুক্ত আইন ও বিচার বিভাগের লিমা আক্তার (৩.৮১)।
রংপুর প্রতিনিধি জানান, রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে (বেরাবি) স্নাতকে সর্বোচ্চ ফলাফলের জন্য প্রধানমন্ত্রী স্বর্ণপদক-২০১৯ পাচ্ছেন ৬ শিক্ষার্থী। মনোনীতরা হলেন- কলা অনুষদের ইতিহাস ও প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষার্থী জবেদা আক্তার (৩.৬২), সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী রুমি বেগম (৩.৮৩), বিজ্ঞান অনুষদের রসায়ন বিভাগের শিক্ষার্থী শ্রাবণী আক্তার (৩.৯২), বিজনেস স্টাডিজ অনুষদের মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষার্থী জান্নাত আরা মুন (৩.৭৬), জীব ও ভূ-বিজ্ঞান অনুষদের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগের শিক্ষার্থী রোকাইয়া সালাম (৩.৮২) এবং প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদ থেকে ইলেক্ট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেক্ট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী শামছুন্নাহার কেয়া (৩.৭৬)।
প্রসঙ্গত, প্রধানমন্ত্রী স্বর্ণপদক বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি অনুষদের স্নাতক (সম্মান) শ্রেণির সর্বোচ্চ ফলাফলধারী শিক্ষার্থীদের দেওয়া হয়। যেসব বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক ডিগ্রি প্রদান করা হয় না, সেগুলোয় স্নাতকোত্তর ডিগ্রির ফলাফলের ভিত্তিতে দেওয়া হয়।
যদি কারও ফলাফল সমান হয়ে যায়, তবে এসএসসি ও এইচএসসির ফলাফলের ভিত্তিতে এটি প্রদান করা হয়। দেশের সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর কৃতী শিক্ষার্থীদের মেধার বিকাশ, লেখাপড়ার প্রতি উৎসাহ প্রদান এবং কৃতিত্বপূর্ণ ফলের স্বীকৃতি হিসেবে ইউজিসি ২০০৫ সালে প্রধানমন্ত্রী স্বর্ণপদক প্রবর্তন করে।