সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১

কর্মসূচি সফলে হার্ডলাইনে বিএনপি

শীর্ষ নেতৃত্বের তদারকি বাড়ছে হ গাফিলতি করলেই সাংগঠনিক ব্যবস্থা
যাযাদি রিপোর্ট
  ১৭ আগস্ট ২০২৩, ০০:০০

চলতি মাসের পুরোটা সময়ে সাদামাটা কর্মসূচি দিয়ে পর্যায়ক্রমে এর গতি-প্রকৃতি বাড়ানোর পরিকল্পনা করেছে বিএনপি। আন্দোলনের গুরুত্বপূর্ণ সময়ে ধাক্কা খাওয়ায় এবার প্রতিটি কর্মসূচি সফলে অতিরিক্ত গুরুত্ব দিচ্ছে দলটি। আজ থেকে ফের আন্দোলনের কর্মসূচি শুরু হচ্ছে। কর্মসূচি সফলে এখন থেকে মনিটরিংয়ের আওতায় থাকবেন নেতাকর্মীরা। অবহেলা করলেই সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়ার কঠোর বার্তাও দেওয়া হয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সরকার পতনের এক দফা আন্দোলনকে আবারও চাঙা করতে চাচ্ছে বিএনপি। গত ২৯ জুলাই ঢাকার প্রবেশপথে দলের অবস্থান কর্মসূচি সফল না হওয়ায় বিএনপির হাইকমান্ড অত্যন্ত কঠোর। দল যখন আগামী সেপ্টেম্বর থেকে 'অলআউট' আন্দোলনে নামার পরিকল্পনা করছে, এমন অবস্থায় যারা নিজেকে গুটিয়ে রাখবেন তাদের বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

নেতারা জানান, সরকারবিরোধী চূড়ান্ত আন্দোলনকে চূড়ান্ত পর্যায়ে নিয়ে যেতে ধারাবাহিক কর্মসূচি পালনের সিদ্ধান্ত রয়েছে। এর মধ্যে আজ বৃহস্পতিবার খালেদা জিয়ার মুক্তি ও উন্নত চিকিৎসার দাবিতে সারা দেশে লিফলেট বিতরণ করা হবে এবং একই দাবিতে শনিবার সব মহানগর ও জেলা পর্যায়ে পদযাত্রা করবেন দলটির নেতাকর্মীরা। এ কর্মসূচি ছাড়াও সরকার পতনের 'এক দফা'র যুগপৎ আন্দোলনের অংশ হিসেবে কাল শুক্রবার ঢাকাসহ সব মহানগরীতে গণমিছিল অনুষ্ঠিত হবে। দল ঘোষিত এসব ধারাবাহিক কর্মসূচিকেই দ্রম্নত সময়ে চূড়ান্ত পর্যায়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত রয়েছে।

সূত্রমতে, সরকারবিরোধী আন্দোলন তৎপরতায় মাঝখানে সাংগঠনিক কার্যক্রম অনেকটা ঝিমিয়ে পড়েছিল। তবে তা আবারও জোরদার করা হয়েছে। বিশেষ করে ঢাকাকেন্দ্রিক আন্দোলনকে শক্তিশালী করতে এর বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের কমিটি দ্রম্নত ঘোষণার প্রস্তুতি নিয়েছেন দলের হাইকমান্ড। এর মধ্যে ঢাকা মহানগর উত্তর ছাত্রদলের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ও বিভিন্ন থানা ইউনিট কমিটি গঠনের কার্যক্রম চূড়ান্ত পর্যায়ে। যে কোনো সময়ে এসব কমিটি ঘোষণার পাশাপাশি ঢাকা মহানগরের অন্যান্য সাংগঠনিক ইউনিটগুলোকেও সমন্বয় করার কাজ চলছে। নতুন গঠিত ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ যুবদলের আহ্বায়ক কমিটিও পূর্ণাঙ্গ করার তাগাদা রয়েছে। স্বেচ্ছাসেবক দলের মহানগর থানা কমিটি গঠনের কার্যক্রম শেষ পর্যায়ে। এখন দলের হাইকমান্ডের অনুমোদন অপেক্ষায় রয়েছে। অঙ্গ সংগঠনের বাইরে মূল দলের সাংগঠনিক দুর্বলতাও চিহ্নিত করার কার্যক্রম চলছে দ্রম্নতগতিতে। মহানগর কমিটি ছাড়াও বিভিন্ন থানা ও ওয়ার্ড কমিটিতে নিষ্ক্রিয় নেতাদের তালিকা করা হচ্ছে। বিশেষ করে যারা ঢাকার প্রবেশমুখের অবস্থান কর্মসূচিতে অবহেলা করেছেন তাদের সতর্ক করার পাশাপাশি তাদের বিষয়ে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।

জানা গেছে, চূড়ান্ত আন্দোলনের প্রস্তুতি হিসেবে প্রত্যেক সংগঠনের সাহসী নেতাদের দায়িত্ব বণ্টন করার কার্যক্রম শুরু করেছে দলটি। অবস্থান কর্মসূচিকে টার্গেট ধরে ওইদিন যারা সর্বোচ্চ ভূমিকা পালন করেছেন তাদের গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া বিগত দিনের আন্দোলন-সংগ্রামেও যারা সক্রিয় ছিলেন তাদেরকেও সামনের সারিতে আনা হচ্ছে বলে দলের বিভিন্ন সূত্র নিশ্চিত করেছে।

ওই কর্মসূচিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার জন্য দলের ব্যাপক প্রশংসা পাওয়া ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সদস্য সচিব তানভীর আহমেদ রবিন বলেন, এখন আর হারানোর কিছু নেই। তাদের নেতাকর্মীরা ঘরে থাকলেও মামলা-হামলা আর গ্রেপ্তার, গুম-খুন আর হত্যার শিকার হন। কবরে গিয়েও গায়েবি মামলা থেকে রেহাই পান না। এ অবস্থার পরিবর্তনের জন্য তারা যে কোনো আন্দোলনে, যে কোনো ত্যাগ স্বীকার করতে নেতাকর্মীরা প্রস্তুত আছেন।

সূত্রমতে, ঘোষিত প্রত্যেক কর্মসূচিকে সফল করতে কঠোর অবস্থানে দলের হাইকমান্ড। মনিটরিং করা হচ্ছে প্রত্যেক নেতাকর্মীকে। কোনো কারণ ছাড়া অনুপস্থিত থাকলেই পড়তে হবে সাংগঠনিক শাস্তির আওতায়। এমনটাই বলা হয়েছে দায়িত্বশীল নেতাদের। একইভাবে বিএনপির বিভিন্ন অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাদেরও দেওয়া হয়েছে কড়া হুঁশিয়ারি। সামান্যতম গাফিলতিও সহ্য করা হবে না বলে স্পষ্ট করা হয়েছে দলের পক্ষ থেকে।

আন্দোলনের বিষয়ে পরবর্তী ভাবনা প্রসঙ্গে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ডক্টর আবদুল মঈন খান বলেন, আন্দোলন নিয়ে এখন একটা বিষয় পরিষ্কার সরকার বিদায় না নেওয়া পর্যন্ত তারা ঘরে ফিরে যাবে না। সরকারের সময় শেষ। কারণ সরকারের বিরুদ্ধে জনগণ ইতোমধ্যে রাস্তায় নেমেছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে