সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১

আজ ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস

যাযাদি ডেস্ক
  ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ০০:০০

আজ ১৭ এপ্রিল ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস। বাংলাদেশের স্বাধীনতাসংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে এক অবিস্মরণীয় দিন। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে এদিন মেহেরপুরের বৈদ্যনাথতলা গ্রামের আম্রকাননে স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম অস্থায়ী সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে শপথ গ্রহণ করে। পাশাপাশি এদিন বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র অনুমোদিত হয়।

এর আগে ১০ এপ্রিল স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ সরকার গঠিত হয়। ১১ এপ্রিল বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদ দেশবাসীর উদ্দেশে বেতারে ভাষণ দেন। তার ভাষণ আকাশবাণী থেকে একাধিকবার প্রচারিত হয়। ভাষণে তিনি দেশব্যাপী পরিচালিত প্রতিরোধ যুদ্ধের বিস্তারিত বিবরণ তুলে ধরেন। এ ছাড়া ১৭ এপ্রিল মন্ত্রিসভার শপথ গ্রহণের তারিখ নির্ধারিত হয়।

তাজউদ্দীনের ভাষণের মধ্য দিয়েই দেশ-বিদেশের মানুষ জানতে পারেন বাংলাদেশের মুক্তিসংগ্রাম পরিচালনার লক্ষ্যে আইনানুগ সরকার গঠিত হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় ১৭ এপ্রিল সকালে মুজিবনগরে আনুষ্ঠানিকভাবে শপথ নেওয়ার মাধ্যমে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার প্রতিষ্ঠা লাভ করে।

ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন।

১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ কালরাতে নিরস্ত্র বাঙালিদের ওপর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বর্বর গণহত্যার পর বাংলাদেশের অস্থায়ী সরকার গঠনের লক্ষ্যে ১৭ এপ্রিল আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ নেতারা মেহেরপুরের বৈদ্যনাথতলায় সমবেত হন। বৈদ্যনাথতলা ছিল মূলত একটি আমবাগান। পরে আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশের অস্থায়ী সরকার গঠনের পর এটির নাম পরিবর্তন করে মুজিবনগর রাখা হয়।

এদিন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি ঘোষণা করা হয়। বঙ্গবন্ধুর অবর্তমানে সৈয়দ নজরুল ইসলাম ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি হন। তাজউদ্দীন আহমদকে নিয়োগ দেওয়া হয় প্রধানমন্ত্রী হিসেবে। খন্দকার মোশতাক আহমেদ, ক্যাপ্টেন এম. মনসুর আলী এবং এ. এইচ. এম. কামারুজ্জামানকে মন্ত্রিপরিষদের সদস্য করা হয়। এই অস্থায়ী সরকারের নেতৃত্বে ১৬ ডিসেম্বর মুক্তিযুদ্ধে বিজয় অর্জিত হয়।

এদিকে, দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস উদযাপনের নির্দেশ দিয়েছে সরকার। সরকারি-বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে দিবসটি উপলক্ষে আলোচনা সভা, মোনাজাত ও প্রার্থনার আয়োজন করতে বলা হয়েছে।

মেহেরপুরের মুজিবনগর উপজেলায় আজ সরকারি ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে উলেস্নখ করে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে দিবসটির সূচনা হবে। সকাল ৯টায় মুজিবনগরের মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিকেন্দ্রে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হবে। মুজিবনগরের আম্রকাননে বীর মুক্তিযোদ্ধা, পুলিশ, বিজিবি, আনসার ও ভিডিপি, বিএনসিসি, স্কাউটস, গার্লস গাইড ও স্কুল-কলেজের ছাত্রছাত্রীদের গার্ড অব অনার প্রদান, বর্ণাঢ্য কুচকাওয়াজসহ আয়োজন করা হয়েছে নানা অনুষ্ঠানের।

এ ছাড়া দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে সংবাদপত্রগুলো বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশ করবে। বেতার ও ইলেকট্রনিক মিডিয়া বিশেষ বিশেষ অনুষ্ঠান প্রচার করবে। ঢাকা ও মুজিবনগরে এ দিবস উপলক্ষে গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ও ভবনে আলোকসজ্জা এবং সড়কদ্বীপ জাতীয় পতাকায় সজ্জিত করা হবে। পাশাপাশি বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আলোচনা সভা ও মোনাজাত ও প্রার্থনা করা হবে।

ঐতিহাসিক স্মৃতি-বিজড়িত এই দিনটিকে বরাবরের মতো স্বাধীনতার চেতনায় বিশ্বাসী সবার সঙ্গে একত্রিত হয়ে আওয়ামী লীগ ও তার সহযোগী সংগঠনগুলো যথাযথ মর্যাদা এবং গুরুত্বের সঙ্গে স্মরণ ও পালন করবে। কর্মসূচির মধ্য রয়েছে ভোর ৬টায় বঙ্গবন্ধু ভবন, কেন্দ্রীয় কার্যালয় এবং সারাদেশে সংগঠনের সব কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন। সকাল ৭টায় বঙ্গবন্ধু ভবন প্রাঙ্গণে রক্ষিত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন।

এ ছাড়া দলের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এক বিবৃতিতে ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস পালন উপলক্ষে আওয়ামী লীগ ঘোষিত কর্মসূচি যথাযোগ্য মর্যাদায় পালনের জন্য সংগঠনের সব স্তরের নেতাকর্মী এবং সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনসহ সর্বস্তরের জনগণ ও দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে