বুধবার, ২১ মে ২০২৫, ৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

কুমিলস্নায় হত্যা মামলায় ৬ আসামির মৃতু্যদন্ড ১০ জনের যাবজ্জীবন

স্টাফ রিপোর্টার, কুমিলস্না
  ২৭ জুন ২০২৪, ০০:০০
কুমিলস্নায় হত্যা মামলায় ৬ আসামির মৃতু্যদন্ড ১০ জনের যাবজ্জীবন

কুমিলস্নার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার ছোট ধুশিয়া গ্রামের নুরুল হককে ধারালো অস্ত্রের আঘাতে ও পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় দায়ের করা মামলার ৬ আসামির মৃতু্যদন্ড এবং ১০ জনের যাবজ্জীবন কারাদন্ড দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে দন্ডপ্রাপ্ত সবাইকে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে। কুমিলস্নার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ চতুর্থ আদালতের বিচারক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন বুধবার দুপুরে এ রায় দেন।

আদালত ও মামলার অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, ছোট ধুশিয়া গ্রামের হাজী নুরুল হক একজন সালিশদার ছিলেন। একই গ্রামের ফরিদ মিয়ার ১২ শতাংশ জমি দখল করে রাখেন পার্শ্ববর্তী মৃত আব্দুল আজিজের ছেলে মো. মাছুম। পরে এ নিয়ে সালিশ বৈঠক বসে। এতে সালিশদার নুরুল হক দখলদার মাছুমকে ফরিদ মিয়ার ১২ শতক জমির দখল ছেড়ে দেওয়ার রায় দেন। এতে মাসুম ও তার পরিবারের লোকজন ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে হত্যার পরিকল্পনা করে। এরই জের ধরে ২০১১ সালের ১৬ ফেব্রম্নয়ারি সালিশদার নুরুল হক কুমিলস্নায় ব্যক্তিগত কাজ শেষে বাড়ি ফেরার পথে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে বাড়ির অদূরে সবজুপাড়া-শিদলাই সড়কে ঘাতকরা তার পথরোধ করে। একপর্যায়ে প্রধান আসামি মাসুমের নেতৃত্বে অন্যান্য আসামিরা দেশীয় অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি আঘাত করে। এতে ঘটনাস্থলেই তিনি মারা যান।

1

এ ঘটনায় নিহতের ছেলে শরিফুল ইসলাম বাদী হয়ে ব্রাহ্মণপাড়া থানায় ২২ জনের নাম উলেস্নখ করে হত্যা মামলা দায়ের করেন। পুলিশ তদন্ত শেষে চার্জশিট দেওয়ার পর ২০১৬ সালের ৪ জানুয়ারি মামলার চার্জ গঠন করা হয়। আদালতের এপিপি অ্যাডভোকেট জাকির হোসেন জানান, মামলাটি চলমান অবস্থায় দুইজন আসামি মৃতু্যবরণ করেন। রায়ের সময় ১৮ জন আসামির মধ্যে ১১ জন আদালতে উপস্থিত ছিলেন, অপর ৭ জন পলাতক রয়েছেন। এ মামলায় মোট ৯ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়েছে। আদালত ২ জনকে বেকসুর খালাস দেন।

মৃতু্যদন্ডপ্রাপ্তরা হলেন, ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার ছোট ধুশিয়া গ্রামের মো. মাছুম (৩৫), তাজুল ইসলাম (৩২), মো. কাইয়ুম হোসেন (২৮), মো. মোস্তফা (২৪), মো. কাইয়ুম (২৫) ও মো. তবদল হোসেন (৪০)। যাবজ্জীবন কারাদন্ডপ্রাপ্তরা হলেন, ছোট ধুশিয়া গ্রামের মো. নান্নু মিয়া (৪০), আবদুল মতিন মিয়া (৪০), সাইদুল ইসলাম (২৪), বাবুল মিয়া (২৫), সফিকুল ইসলাম (৩৫), মো. মোসলেম মিয়া (৪৫), মো. সফিকুল ইসলাম (২৮), মো. হেলাল মিয়া (২৫), মো. আউয়াল মিয়া (৩০) ও বিলস্নাল হোসেন (৩০)।

মামলার বাদী নিহত নুরুল হকের ছেলে শরিফুল ইসলাম জানান, 'এ মামলায় আদালত ৬ জনকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃতু্যদন্ড ও ১০ জনের যাবজ্জীবন সাজার রায় দিয়েছেন। এ রায়ে আমি ও আমার পরিবার সন্তুষ্ট।' তিনি অবিলম্বে আদালতের রায় কার্যকর করার দাবি জানান। আসামিপক্ষের আইনজীবী আবদুল মমিন ফেরদৌস বলেন, 'রায়ের কপি হাতে পেলে আমরা উচ্চ আদালতে আপিল করব।'

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে