সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

হারলে সবাই বলবে জিম্বাবুয়ের সঙ্গে হেরে গেছি : তাসকিন

আসলে যতই কথা হচ্ছে জিম্বাবুয়ে নিয়ে আবার যদি একটা ম্যাচ হেরে যাই, তখন কিন্তু আবার অন্যরকম কথা হবে, যে জিম্বাবুয়ের সঙ্গে হারছি। জিতলে কৃতিত্ব কম পাই, আবার হারলে সবাই বলবে জিম্বাবুয়ের সঙ্গে হেরে গেছি। অপ্রত্যাশিতভাবে আমাদের অনেক রকম কথাই শুনতে হয় -তাসকিন আহমেদ
ক্রীড়া প্রতিবেদক
  ১০ মে ২০২৪, ০০:০০
হারলে সবাই বলবে জিম্বাবুয়ের সঙ্গে হেরে গেছি : তাসকিন

টি২০ বিশ্বকাপের আর মাসখানেকও বাকি নেই। ওই টুর্নামেন্ট ঘিরে প্রস্তুতি হবে, সেটাই স্বাভাবিক। কিন্তু বিশ্বকাপের প্রস্তুতিতে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে পাঁচ ম্যাচের টি২০ সিরিজ খেলা নিয়ে নানা কথা হচ্ছে। প্রথম তিন ম্যাচ জিতে বাংলাদেশ ইতোমধ্যে সিরিজ নিশ্চিত করে ফেলেছে। বাকি দুই ম্যাচে নিজেদের নতুন স্কিল প্রয়োগের কথা বলছেন তাসকিন। তবে তিনি মনে করিয়ে দিয়েছেন, জিম্বাবুয়ের সঙ্গে কোনো ম্যাচ হেরে গেলে কথা শুনতে হবে তাদেরই।

জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে চলমান সিরিজে দাপটের সঙ্গে জিতলেও বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের টি২০ অ্যাপ্রোচ নিয়ে সমালোচনা হচ্ছে। বিশেষ করে ব্যাটারদের পারফরম্যান্স নিয়ে যত কথা। বোলিং বিভাগে তাসকিন আহমেদ সেরাটা দিয়ে উজাড় করে দিচ্ছেন। প্রতিপক্ষ হিসেবে জিম্বাবুয়ে দুর্বল হলেও তাসকিন এভাবে ভাবেন না। তার মতে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে জিতলে কৃতিত্ব কম পান, আবার হারলে জিম্বাবুয়ের সঙ্গে হেরে গেছে বলে মজা করবে- এমন একটা দোটানার মধ্যে থাকেন তারা।

চতুর্থ ম্যাচের আগে বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলনে ডানহাতি এই পেসার বলেন, 'আসলে যতই কথা হচ্ছে জিম্বাবুয়ে নিয়ে আবার যদি একটা ম্যাচ হেরে যাই, তখন কিন্তু আবার অন্যরকম কথা হবে, যে জিম্বাবুয়ের সঙ্গে হারছি। জিতলে কৃতিত্ব কম পাই, আবার হারলে সবাই বলবে জিম্বাবুয়ের সঙ্গে হেরে গেছি। অপ্রত্যাশিতভাবে আমাদের অনেক রকম কথাই শুনতে হয়। যখন খেলতে নামি যে প্রতিপক্ষই হোক সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা করি। মাঝে মাঝে ভালো হয় খারাপ হয়।'

পাঁচ ম্যাচের সিরিজে বাংলাদেশ এগিয়ে আছে ৩-০ ব্যবধানে। এবার লক্ষ্য ধবলধোলাই। তাসকিন ৩ ম্যাচে নিয়েছেন ৬ উইকেট। বল হাতে ছিলেন ভীষণ কৃপণ। সর্বোচ্চ ৩ উইকেট নিয়েছেন ১৪ রান দিয়ে। বাকি দুই ম্যাচে রান দিয়েছেন যথাক্রমে ১৮ ও ২১ রান। উইকেট নিয়েছেন ২টি ও ১টি করে।

তাসকিনদের মূল লক্ষ্য বিশ্বকাপের জন্য নিজেদের প্রস্তুত করা, 'আমাদের মূল লক্ষ্য বিশ্বকাপ কেন্দ্রিক। দেখেন আমরা যারা ক্রিকেটাররা আছি, আমাদের কাজ কিন্তু যেখানেই খেলতে নামি সর্বোচ্চটা দিয়ে চেষ্টা করা। অনেক কিছু আমাদের নিয়ন্ত্রণে নাই; কন্ডিশন, অপজিশন, কার সঙ্গে খেলছি, কখন খেলছি। আমরা যারা পেস্নয়ার যখনই যেখানে খেলতে নামি সেরাটা দেই। ইভেন ডিপিএলেও যখন খেলতে নামি ভালো খেলারই চেষ্টা করি।'

'মূল লক্ষ্য বিশ্বকাপ কেন্দ্রিক। সবাই টিম ওয়াইজ, যে যার জায়গা থেকে যদি ৫/১০ ভাগ ইমপ্রম্নভমেন্ট নিয়ে যেতে পারি, ভালো ক্রিকেট খেলতে পারব এবং আমাদের শুরুটাও গুরুত্বপূর্ণ হবে। উন্নতির ধারাটা রেখে সবাই খেলার চেষ্টা করি, সবার মধ্যে এটাই লক্ষ্য বিশ্বকাপে কীভাবে ভালো করা যায়। এই লক্ষ্য নিয়ে আগাচ্ছি, ট্রেনিং করছি সবাই।'

বর্তমানের জাতীয় দলে সুযোগ পাওয়া ছাড়াও আইপিএলে খেলতে পারাটা বড় স্বপ্ন হিসেবে দেখছেন ক্রিকেটাররা। তবে গত কয়েক বছরে আইপিএল খেলার সুযোগ পেয়েও অংশ নিতে পারেননি তাসকিন আহমেদ। কারণ, মুস্তাফিজকে ছাড়পত্র দিলেও তাসকিনের বেলায় বেঁকে বসে বিসিবি। এবার আইপিএল খেলা নিয়ে মুখ খুলেছেন তাসকিন।

টাইগার পেসার বলেন, 'যে জিনিসটা চলে গেছে এটা তো আর নিয়ন্ত্রণে নেই। ইনশাআলস্নাহ সামনে খেলব, সামনে অবসর সময় পাব। শুধু আইপিএল না, আরও অনেক লিগ আছে। নীতি প্রায় একই। একেক জনের বডি টাইপ একেক রকম। এজন্য বোর্ড সতর্ক থাকে।'

তিনি আরও বলেন, 'ফাস্ট বোলার যাদের দেখছেন, সবারই কোনো না কোনো ইনজুরি ম্যানেজ করতে হচ্ছে। হয়তো আমার বডি টাইপ বা বোলিং টাইপ ডিফারেন্ট এজন্য আমি এবার যেতে পারিনি। আমার তো টেস্ট খেলারও কথা ছিল।'

'কিন্তু শেষ মুহূর্তে কাঁধের চোট ম্যানেজ করার জন্য আমি বিরতিতে গেছি... হয়তো ভবিষ্যতে খেলব ইনশাআলস্নাহ, আফসোস নাই কোনো। শুধু দোয়া কইরেন।'

চলতি আইপিএলের নিলামের শুরুতে নাম দিয়েছিলেন টাইগার এই পেসার। তবে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) আপত্তির মুখে নিলামের আগেই নাম সরিয়ে নেন তাসকিন। এবারের নিলামে নাম থাকলে তাসকিনের দল পাওয়া অনেকটাই নিশ্চিতই ছিল বলা যায়।

যদিও পরে চলতি আসরে খেলার জন্য দুটি ফ্র্যাঞ্চাইজি থেকে তাসকিনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছিল। কলকাতা নাইট রাইডার্স ও পাঞ্জাব কিংস এই পেসারকে দলে ভেড়াতে চেয়েছিল বলে তিনি নিজেই জানিয়েছিলেন। তবে বিসিবির আপত্তিতে শেষ পর্যন্ত কোনো দলের সঙ্গেই চুক্তি করেননি তিনি।

চলমান আইপিএলে ক্রিকেট বিশ্ব দেখছে রান বন্যা। প্রতি ম্যাচে দেখা যাচ্ছে রানের ছড়া-ছড়ি। টি২০ ক্রিকেটে সেই হিসেবে চলতি বাংলাদেশ-জিম্বাবুয়ে সিরিজে রীতিমতো রান খরা। সিরিজের প্রথম দুই ম্যাচে প্রথমে ব্যাট করে জিম্বাবুয়ে দল পারেনি দেড়শ রান পার করতে। সবশেষ টি২০তে অবশ্য বাংলাদেশ দল করেছিল ১৬৫ রান।

তাসকিন বললেন, 'আইপিএলের কন্ডিশন আর এখানের কন্ডিশন একটু ভিন্ন। প্রতিপক্ষও ভিন্ন। আইপিএলে হাই স্কোরিং ম্যাচ হয়, উইকেটও আলাদা। বাংলাদেশে তুলনামূলকভাবে হাই স্কোরিং ম্যাচ একটু কমই হয়, যদিও জিম্বাবুয়ে, দেখুন আসলে আন্তর্জাতিক সিরিজ, যারাই খেলছি, সবাই কিন্তু শতভাগ দিয়ে ম্যাচ জেতার চেষ্টা করছি। হয়তো তুলনামূলকভাবে আইপিএলের তুলনায় তারা একটু দুর্বল। তবে আমাদের ভালো ক্রিকেট খেলেই জিততে হচ্ছে।'

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
X
Nagad

উপরে