শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১

খারাপ সময় তাড়াতে বাড়তি পরিশ্রমে চোখ লিটনের

এটা সহজ কাজ না যে টি২০ সংস্করণে যাব আর একশ' মেরে দেব। যদিও বিশ্ব ক্রিকেট অন্যভাবে চলছে। আমি আইপিএলের কথা বলব না, ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেট পুরো ভিন্ন। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট যদি দেখেন বিশ্বকাপে একশ' হয়, বড় জোর দুই একজন করে টি২০ সংস্করণে। আমাদেরও সেই সুযোগ আছে, আমাদের টপ অর্ডার ব্যাটাররা খুবই ভালো।'
ক্রীড়া প্রতিবেদক
  ২২ মে ২০২৪, ০০:০০
লিটন দাস

ব্যাট হাতে অনেকদিন ধরেই রান খরায় আছেন লিটন দাস। শেষ কবে বড় ইনিংস খেলেছেন হয়তো মনে করতে পারবেন না নিজেও। তবে সবকিছু ভুলে টাইগার এই ওপেনার আসন্ন টি২০ বিশ্বকাপে ভালো কিছুর প্রত্যাশায় আছেন।

মঙ্গলবার বিসিবির অফিসিয়াল ফেসবুক পেইজে 'দ্য গ্রিন রেড স্টোরি'-তে লিটনের একটি সাক্ষাৎকার শেয়ার করা হয়েছে। যেখানে তিনি বলেন, নিজের প্রতিভা ও সামর্থ্য অনুযায়ী বিশ্বকাপে এখনও ভালো কিছু করতে পারেননি।

টি২০ বিশ্বকাপ শুরুর আগে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় চিন্তা নাম লিটন দাসের ফর্ম। এই সংস্করণে দলের সফলতম ওপেনার তার এই খারাপ সময়ে বাড়তি চিন্তার পক্ষে নন। বাড়তি পরিশ্রম করে সুসময় ফেরাতে চান লিটন। যুক্তরাষ্ট্র সিরিজের আগে বিসিবি প্রকাশিত ভিডিওতে নিজের ফর্ম ছাড়াও লিটন কথা বলেছেন বিশ্বকাপের দলের সম্ভাবনা নিয়ে, অধিনায়ক হিসেবে নাজমুল হোসেন শান্তর প্রশংসাও করেছেন তিনি।

'দল হিসেবে আমরা যেটা করেছিলাম ২০২১ সালের বিশ্বকাপে ততটা করতে পারিনি। ২০২২ সালে আমরা ভিন্ন কন্ডিশনে ছিলাম, বড় দলের সঙ্গে ম্যাচ জিততে। কিন্তু খারাপও হয়নি। আর আমার নিজের কথা বললে আপ টু দ্য মার্ক ছিল না। আমি নিজে যে মানের খেলোয়াড়, যেমন পারফর্ম করা উচিত আমি সেটা করতে পারিনি। জিনিসটা যদি এভাবে বলি আগের দুই আগের দুই বিশ্বকাপে যদি একশ' না রান করি, এবার যদি ১০১ রান করি তাহলে বোঝা যাবে ভালো করছি। যা করিনি, তারচেয়ে ভালো কিছুর চেষ্টা করব।'

এবার টি২০ বিশ্বকাপে সেঞ্চুরি করার সম্ভাবনা নিয়ে লিটন দাস বলেন, 'এটা সহজ কাজ না যে টি২০ সংস্করণে যাব আর একশ' মেরে দেব। যদিও বিশ্ব ক্রিকেট অন্যভাবে চলছে। আমি আইপিএলের কথা বলব না, ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেট পুরো ভিন্ন। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট যদি দেখেন বিশ্বকাপে একশ' হয়, বড় জোর দুই একজন করে টি২০ সংস্করণে। আমাদেরও সেই সুযোগ আছে, আমাদের টপ অর্ডার ব্যাটাররা খুবই ভালো।'

সব মিলিয়ে ক্যারিয়ারে ৪ বিশ্বকাপ খেলেছেন লিটন। এর মধ্যে এগিয়ে রাখছেন ২০১৯ বিশ্বকাপ, 'চার বিশ্বকাপের মধ্যে ২০১৯ সালেরটা বেশি স্মরণীয় আমার জন্য। কারণ ওই নকটাতে বাংলাদেশ দল জিতেছিল। ২০২২ সালও স্মরণীয় হতো, আমি ভারতের বিপক্ষে যে ইনিংস খেলেছিল আমরা যদি জিততে পারতাম।'

ছন্দে ফেরা নিয়ে বলেন, 'ভালো সময়ে পারফরম্যান্স ধরে রাখা গুরুত্বপূর্ণ। আপনি এক ম্যাচ ভালো খেলবেন, মাথার ভেতর থাকতেই পারে আমি তো ভালো খেলছি। কেয়ারলেস ভাব চলে আসে। ভালো সময়েও যে মানুষটা পরিশ্রম করে যাচ্ছে, চিন্তাধারা ভালো। আমি যদি উদাহরণ দেই তাহলে বলতে পারি তাওহিদ হৃদয়ের কথা। দেখবেন শেষ কিছু ম্যাচ ধরে খুবই ভালো করছে, এই মোমেন্টাম নিয়ে যাচ্ছে। খারাপ সময়ে আপনার বাড়তি চিন্তার কিছু থাকে না। আপনি যখন বাজে ছন্দে থাকবে যত বেশি চিন্তা করবেন খারাপই হয়ে আসবে। আপনার কাছে একটাই জিনিস থাকে, কতটা পরিশ্রম করছেন অনুশীলনে। অনুশীলনটা কতটা গুরুত্ব দিচ্ছেন। সেটা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। খারাপ সময়ে যতটা ধীর-স্থির থাকা যায়, যত বাড়তি চিন্তা কম করা যায়। নিজের ক্রিকেটের ওপর ফোকাস করা যায়।'

খারাপ সময়ে নিজের স্ত্রী বেশি সাহস জোগান বলে জানালেন লিটন, 'আমার অনেক মানুষ আছে যারা প্রতিনিয়ত উৎসাহ দেয়। অনেক কোচ আছেন যারা উৎসাহ দেন। এই সময়ে সাহস দেওয়াটা বড় জিনিস। সবচেয়ে কাছের মানুষ আমার স্ত্রী, আমাকে সাহস দেয়। এর থেকে বড় কিছু লাগে না।'

শান্তর অধিনায়কত্ব নিয়ে লিটন বলেন, 'খুব ভালো (শান্তর অধিনায়কত্ব)। গত কয়েকটা সিরিজ ধরে করছে অধিনায়কত্ব। আমার কাছে খুব ভালো লাগছে। যেহেতু নতুন, তার কাছে তিন সংস্করণের দায়িত্ব আসছে। যা দেখছি তাতে মনে হচ্ছে উন্নতি করছে, যেকোনো মানুষের উন্নতির শেষ নেই। সে খুব ভালো করছে।'

বিশ্বকাপ দলে সাকিব-মাহমুদউলস্নাহর উপস্থিতি নিয়ে এই ওপেনার বলেন, 'সাকিব ভাই অনেক পুরাতন খেলোয়াড়। উনি যেভাবে সবার সঙ্গে মেশে, খুবই বন্ধুত্বপূর্ণ। এটা সব থেকে বড় জিনিস। রিয়াদ ভাইও এখন অনেক বন্ধুত্বপূর্ণ। তারা সবাই চেষ্টা করে, আমরা তো অনেক দিন ধরে খেলছি। আরও যারা নতুন আসছে তাদের সঙ্গেও খুব ফ্রেন্ডলি। তারাও স্বস্তি বোধ করে। আমি যদি দেখতাম কেউ ১৫ বছর জাতীয় দলে খেলছে, আর আমি নতুন ঢুকছি একটু তো স্নায়ুচাপ থাকে। এই দিক থেকে সিনিয়র যারা আছে তারা এটা বুঝতে দেয়নি।'

টি২০ দল হিসেবে বাংলাদেশ দল নিয়ে বলেন, '২০২২ সালের বিশ্বকাপের পর থেকে আমাদের টি২০ দল অনেক ভারসাম্যপূর্ণ। আমরা অনেক সিরিজও জিতেছে এরপর। এবং ভালো ক্রিকেট খেলেছি। আমরা ভালো দলগুলোর সঙ্গেও জিতেছি, ভালো ক্রিকেট খেলে জিতেছি। বিশ্বকাপে আলাদা চাপ থাকবে। আমরা যদি খুব ভালো ক্রিকেট খেলতে পারি এবং ধীরস্থির থেকে যদি খেলা যায়। ভয়ডরহীন ক্রিকেট যদি খেলা যায় কোনো কিছুর আউটকাম নিয়ে না ভেবে তাহলে আমাদের খুবই ভালো সুযোগ আছে।'

'যারা মাঠে আসে খেলা দেখতে তারা অনেক বোস্টআপ করে। আমরা খেলি ১১ জন, ১৫ জন। কিন্তু আরও দর্শক যখন থাকে তখন মনে হয় দল ভারী হয়ে যায়। এটা সাহায্য করে।'

'একেক মানুষের চরিত্র একেকরকম হয়। আমাকে যারা চিনে ও জানে কাছ থেকে আমি কতটা জলি মাইন্ডের। অনেক সময় হয় আমি মাঠে থাকলে অন্যরকম চেহারা দেখা যায়। আমি চেষ্টা করব পরেরবার থেকে হাসার জন্য যাতে মানুষ খুশি হয়।'

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে