মঙ্গলবার, ০৬ মে ২০২৫, ২৩ বৈশাখ ১৪৩২

বাংলাদেশের মুকুট ধরে রাখার অভিযান

ক্রীড়া প্রতিবেদক
  ৩০ অক্টোবর ২০২৪, ০০:০০
বাংলাদেশের মুকুট ধরে রাখার অভিযান
নারী সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে আজ বুধবার ফাইনালে নেপালের বিপক্ষে মাঠে নামবে বাংলাদেশ দল -বাফুফে

নারী সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে দুই বছর আগে ফাইনালে এই নেপালকে হারিয়েই প্রথমবার সাফের শিরোপা জিতেছিল বাংলাদেশ। আজ কাঠমান্ডুর দশরথ স্টেডিয়ামে লাল-সবুজদের শিরোপা ধরে রাখার লড়াইয়ে প্রতিপক্ষ সেই নেপালই। আজ বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা ৫-৪৫ মিনিটে ফাইনালে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশের মুখোমুখি হবে গত আসরের রানার্সআপ স্বাগতিক নেপাল। বাংলাদেশের কোচ ও অধিনায়কের প্রত্যাশা, একটা প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ফাইনাল খেলে ট্রফি নিয়েই দেশে ফেরার।

নারী সাফের প্রথম আসর থেকে সব কটি আসরেই অংশ নেয় বাংলাদেশ। ২০১০ সালে নারী সাফের প্রথম আসর অনুষ্ঠিত হয় বাংলাদেশে। স্বাগতিকরা 'এ' গ্রম্নপের রানার্সআপ হয়ে সেমিতে নেপালের কাছে ৩-০ গোলে হেরে বিদায় নেয় বাংলাদেশ। পরের আসর হয় ২০১২ সালে শ্রীলংকায়। যেখানে গ্রম্নপপর্বই পার হওয়া হয়নি লাল-সবুজদের। তবে পরের আসরেই ২০১৪ সালে 'এ' গ্রম্নপের রানার্সআপ হয়ে সেমিফাইনালে উঠে বাংলাদেশ। তবে আবার ও সেই নেপালের কাছেই ১-০ গোলে হেরে বিদায় নেয়। ২০১৬ সালে 'বি' গ্রম্নপের চ্যাম্পিয়ন হয়ে সেমিতে নাম লেখায় বাংলাদেশ। মালদ্বীপের বিপক্ষে ৬-০ গোলের বিশাল ব্যবধানের জয়ে প্রথমবার ফাইনালে খেলার স্বপ্নও পূরণ হয় বাংলাদেশের মেয়েদের। তবে ফাইনালে ভারতের কাছে ৩-১ গোলে হেরে গিয়ে সেবার রানার্সআপ হয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছে বাংলাদেশকে। ২০১৯ সালে 'এ' গ্রম্নপের রানার্সআপ হয়ে সেমিতে ভারতকে পায় প্রতিপক্ষ হিসেবে। সেবারও ভারত বাধা পার হতে পারেনি বাংলাদেশ। সেমিফাইনালে ভারতের কাছে ৪-০ গোলে হেরে বিদায় নিতে হয়। তবে ২০২২ সালটা ছিল সাফে বাংলাদেশ দলের জন্য স্মরণীয়। সেবার 'এ' গ্রম্নপের চ্যাম্পিয়ন হয়ে সেমিফাইনালে ভুটানকে ৮-০ গোলে উড়িয়ে দেয় বাংলার বাঘীনিরা। ফাইনালে নেপালকে ৩-১ গোলে হারিয়ে প্রথমবারের মতো নারী সাফের শিরোপা জিতে ইতিহাস গড়েন সাবিনারা। রক্ষণ আর মাঝমাঠের দৃঢ়তা ধরে রাখতে পারলে নারী সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের মুকুট ধরে রাখা সম্ভব বলে মনে করেন বাংলাদেশ অধিনায়ক সাবিনা খাতুন, 'নেপাল স্বাগতিক দল। মাঠে অনেক সমর্থক থাকবে তাদের, স্বাগতিকদের বিপক্ষে খেলা যে কোনো দলের জন্যই চাপ। গতবারও মেয়েরা নেপালের বিপক্ষে এখানে খেলেছিল, এবারও খেলবে, তাদের স্বাভাবিক খেলাটাই খেলার চেষ্টা করবে। অনেক নেপালি আছে, যারা আমাদের খেলার স্টাইলটা পছন্দ করে। আমরা ভালো খেললে আমি মনে করি না, তারা আমাদের খেলা অপছন্দ করবে। আমার মনে হয়, ফাইনাল ভালো প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ম্যাচ হবে।'

'এ রকম ম্যাচে যেকোনো কিছুই হতে পারে। আগাম কিছু অনুমান করা যায় না। আপনি ম্যাচে ১৫ সেকেন্ডের মধ্যেও গোল খেতে পারেন। ৯০ পস্নাস মিনিটেও গোল খেতে পারেন। এটা নির্ভর করবে আপনার দলের কাঠামোর (পারফরম্যান্স) ওপর। আমার মনে হয়, আমরা যেভাবে গত তিনটি ম্যাচ খেলে এসেছি, ফাইনালেও আমাদের পরিকল্পনা থাকবে ওরকমই, কোচের যদি কোনো আলাদা ছক থাকে, সেটা আমি এখনো জানি না।' যোগ করেন সাবিনা।

নেপালকে প্রতিপক্ষ হিসেবে কীভাবে দেখছেন, তাদের কোন জায়গাটা শক্তিশালী, কোনটা দুর্বল? সাবিনার উত্তর, 'আমার কাছে মনে হয়, নেপাল সব বিভাগেই ভালো। রক্ষণ থেকে মাঝমাঠটা যদি আমরা গোছালো রাখতে পারি, আমার মনে হয় যে আমরা সাফল্য পাব।'

চলতি সাফে নেপালের সর্বোচ্চ (৭টি) গোলদাতা রেখা পোডেল লাল কার্ড পাওয়াতে বাংলাদেশের বিপক্ষে ফাইনাল ম্যাচে খেলতে পারছেন না। তার না থাকা বাংলাদেশের জন্য বাড়তি কোনো সুবিধা হবে কিনা? বাংলাদেশ অধিনায়ক বলেন, 'সুবিধা আসলে বেশি হবে না, কেননা, রেখার চেয়ে ভয়ংকর ফরোয়ার্ড সাবিত্রা ভান্ডারি আছে তাদের আক্রমণভাগে। গতকালও সে দুর্দান্ত একটা গোল করেছে। ওর থাকাটা রক্ষণের জন্য অতিরিক্ত একটা চাপ। এ ছাড়া তাদের আক্রমণভাগে বদলি যারা আছে, তারাও ভালো।'

বাংলাদেশ দলের কোচ পিটার বাটলার বলেন, 'গত ছয়-সাত মাস আমরা কঠোর পরিশ্রম করেছি। মেয়েরা যে প্রচেষ্টা ও নিবেদন নিয়ে খেলে, আমি সব সময় তাদের নিয়ে খুশি। আমরা নেপালের খেলা দেখেছি। তাদের সম্পর্কে জানি। আমাদের লক্ষ্য চ্যাম্পিয়ন হওয়া। আশা করি, একটা প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ফাইনাল হবে।'

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে