রোববার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১

বিশ্বব্যাপী কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলো স্বর্ণের মজুত বাড়াচ্ছে

অন্যদিকে চলতি বছর স্বর্ণ উত্তোলন বাড়ার পূর্বাভাস দিয়েছে গেস্নাবাল ডাটা। ঘানা, রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রে উত্তোলন বৃদ্ধি এ ক্ষেত্রে মূল প্রভাবকের ভূমিকা রাখবে।
অর্থ-বাণিজ্য ডেস্ক
  ১৩ ডিসেম্বর ২০২৩, ০০:০০

বিশ্বের বিভিন্ন দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক স্বর্ণ কেনা অব্যাহত রেখেছে। অক্টোবরে কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলো মোট ৪২ টন স্বর্ণ কিনেছে। এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ওয়ার্ল্ড গোল্ড কাউন্সিল (ডবিস্নউজিসি)। খবর আরটি।

সম্প্রতি প্রকাশিত এক প্রতিবেদন বলছে, সেপ্টেম্বরে কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলো ৭২ টন স্বর্ণ কিনেছিল। এই হিসেবে অক্টোবরে মূল্যবান ধাতুটি ক্রয় ৪১ শতাংশ কমেছে। তবে জানুয়ারি-সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মাসিক গড় ৩৪ টনের চেয়ে অক্টোবরে ২৩ শতাংশ বেশি স্বর্ণ কিনেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলো।

বিশ্বব্যাপী স্বর্ণের সবচেয়ে বৃহত্তম ক্রেতা দ্য পিপলস ব্যাংক অব চায়না (পিবিওসি)। ব্যাংকটির মোট আন্তর্জাতিক মজুতের (রিজার্ভ) ৪ শতাংশ রাখা হয়েছে স্বর্ণে। ডবিস্নউজিসির তথ্য বলছে, টানা ১২তম মাসের মতো অক্টোবরেও স্বর্ণ কিনেছে পিবিওসি। মাসটিতে চীনের রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকটি ২৩ টন স্বর্ণ কিনেছে। এর মধ্য দিয়ে ২০২৩ সালের অক্টোবর পর্যন্ত ব্যাংকটি মোট ২০৪ টন স্বর্ণ কিনেছে। অব্যাহত ক্রয়ের ফলে পিবিওসির মোট স্বর্ণ মজুত দাঁড়িয়েছে দুই হাজার ২১৫ টনে।

সর্বশেষ প্রকাশিত তথ্যমতে, তুরস্কের কেন্দ্রীয় ব্যাংকও অক্টোবরে উলেস্নখযোগ্য পরিমাণে স্বর্ণ কিনেছে। মাসটিতে ১৯ টন স্বর্ণ ক্রয়ের মধ্য দিয়ে সেন্ট্রাল ব্যাংক অব দ্য রিপাবলিক অব তুর্কিয়ের (সিবিআরটি) স্বর্ণ মজুত দাঁড়িয়েছে ৪৯৮ টনে।

অক্টোবরের শীর্ষ দুই ক্রেতা পিবিওসি এবং সিবিআরটির পরে তৃতীয় অবস্থানে ছিল দ্য ন্যাশনাল ব্যাংক অব পোল্যান্ড (এনবিপি)। এনবিপি মাসটিতে ছয় টন স্বর্ণ কিনেছে। এ নিয়ে চলতি বছর ১০০ টন স্বর্ণ কিনেছে পোল্যান্ডের কেন্দ্রীয় ব্যাংকটি। এনবিপির মোট মজুত দাঁড়িয়েছে ৩৪০ টনে।

এ ছাড়া অক্টোবরের উলেস্নখযোগ্য ক্রেতাদের মধ্যে ছিল দ্য রিজার্ভ ব্যাংক অব ইন্ডিয়া, দ্য চেক ন্যাশনাল ব্যাংক, কাতার সেন্ট্রাল ব্যাংক এবং কিরগিজ রিপাবলিকের ন্যাশনাল ব্যাংক।

ওয়ার্ল্ড গোল্ড কাউন্সিল বলছে, 'চলতি বছর কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোর স্বর্ণ বিক্রির চেয়ে ক্রয়ের হার অনেক বেশি। এমনকি অক্টোবরের নিট ক্রয়ের আগেই আমরা লক্ষ করেছি, ২০২৩ সাল কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোর স্বর্ণ ক্রয়ের আরও একটি বড় বছর হতে চলেছে।' চতুর্থ প্রান্তিকের প্রথম মাসেও ক্রয়ের হার বেশি থাকায় এ বছর কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোর স্বর্ণের চাহিদা নতুন উচ্চতায় ওঠার সম্ভাবনা রয়েছে বলে মনে করছে ডবিস্নউজিসি।

এদিকে ৭ অক্টোবরে হামাস-ইসরাইল সংঘর্ষ শুরু হলে বিশ্বব্যাপী স্বর্ণের চাহিদা ও দাম বাড়তে শুরু করে। ৪ ডিসেম্বর মূল্যবান ধাতুটির দাম আন্তর্জাতিক বাজারে ইতিহাসের সর্বোচ্চ আউন্সপ্রতি ১ হাজার ১১১ ডলার ৩৯ সেন্টে ওঠে। সর্বশেষ গতকালও আউন্সপ্রতি ধাতুটির দাম ছিল ২ হাজার ডলারের ঘরে।

অন্যদিকে চলতি বছর স্বর্ণ উত্তোলন বাড়ার পূর্বাভাস দিয়েছে গেস্নাবাল ডাটা। ঘানা, রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রে উত্তোলন বৃদ্ধি এ ক্ষেত্রে মূল প্রভাবকের ভূমিকা রাখবে। মাইনিং টেকনোলজি এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ২০২২ সালে স্বর্ণ উত্তোলনের পরিমাণ ৭ দশমিক ৬ শতাংশ কমেছিল। তবে ২০২৩ সালে মূল্যবান এই ধাতুর উত্তোলনের পরিমাণ ৩ দশমিক ৯ শতাংশ বেড়ে দাঁড়াতে পারে ১২ কোটি ১২ লাখ আউন্সে।

গেস্নাবাল ডাটার পূর্বাভাস মতে, ঘানার বিবিয়ানি খনির পাশাপাশি এডিকান, চির?্যানো ও অবুয়্যাসি খনিতে এ বছর স্বর্ণ উত্তোলন বাড়বে। পশ্চিম আফ্রিকার দেশটিতে ২০২৩ সালে ৯ দশমিক ৯ শতাংশ উত্তোলন প্রবৃদ্ধির প্রত্যাশা করা হচ্ছে। একই সময় নিউমন্টের কর্টেজ ও টারকোয়েজ রিজ খনি থেকে উত্তোলন বাড়ায় যুক্তরাষ্ট্রেও ধাতুটির উত্তোলন প্রবৃদ্ধি ঘটার সম্ভাবনা রয়েছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে