গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে বিয়ের দাবিতে প্রেমিকা শ্রী পলাশ চন্দ্র বর্মনের বাড়িতে অনশন শুরু করেছে কুমারী ময়না রানী নামের এক স্কুল শিক্ষার্থী। সোমবার সকাল ৯ টার দিকে শ্রী পলাশ চন্দ্রের বাড়িতে গিয়ে এমন দৃশ্যে দেখা গেছে।
এরও আগে গত রোববার সকাল ১১ টার দিকে এ অনশন শুরু করেছে ওই শিক্ষার্থী। এ ঘটনার পর থেকে ঢাকা দিয়েছে ছেলে ও তার পরিবারের লোকজন।
শ্রী পলাশ চন্দ্র বর্মন উপজেলার ছাপড়হাটী ইউনিয়নের উত্তর মরুয়াদহ গ্রামের শ্রী বিমল চন্দ্র বর্মনের ছেলে ও কুমারী ময়না রানী প্রতিবেশি শ্রী নরেশ চন্দ্র দাসের মেয়ে।
এ ঘটনায় থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন মেয়ের বাবা। এদিকে ওই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মিমাংসা করতে ৫ লক্ষ টাকার প্রস্তাব দিয়েছেন মেয়ের বাবাকে।
মেয়ে কুমারী ময়না রানী বলেন, 'প্রায় এক বছর ধরে সম্পর্ক। মোবাইল ফোনও কিনে দিয়েছে আমাকে। বিয়ে করার কথা বলে ছেলে আমার সাথে বহুবার খারাপ ব্যাবহারও করেছে।
সর্বশেষ গতকাল ডাকলে সকালে আসি। কিন্তু আসার পরে দেখি ছেলে নাই। তখন থেকে আছি। ছেলের বোন ও পিসি মারধর করে বের করে দেয়ার চেষ্টাও করেছেন কয়েকবার। কিন্তু বিয়ে না করা পর্যন্ত এখান থেকে যাবো না। তা না হলে আত্মহত্যা ছাড়া আর কোনো পথ নেই আমার বলেও জানান ময়না রানী।'
মেয়ের বাবা নরেশ চন্দ্র বলেন, 'বিষয়টি প্রথমে গ্রামবাসীর মুখে শুনি। পরে মেয়েকে জিজ্ঞেস করি। তখন সে স্বীকার করে। অনেক রবার বুঝিয়েছি। কিছুতেই রাজি করাতে পারিনি তাঁকে। সে বিয়ে করবেই। অন্যথায় আত্নহত্যা করবে বলেও জানিয়ে দেয় আমাদের। পরে বাধ্য হয়ে চেয়ারম্যানের কাছে যাই। সব খুলে বলি তাকে। প্রায় ২০ দিন অতিবাহিত হলো। চেয়ারম্যান কোনো গুরুত্বই দেয়নি। পরে বাধ্য হয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ দেই। সেটারও অনেকদিন হলো। কোনো কিছু বুঝতে পারছি না। তবে ইদানীং চেয়ারম্যান বলেছেন বিয়ে দেয়া সম্ভব হচ্ছে না। তোমাকে ৫ লক্ষ টাকা নিয়ে দেই ছেলের বাবার কাছ থেকে। মেয়েটাকে অন্যত্র বিয়ে দিবে। বাবা হয়ে মেয়ের ইজ্জত বিক্রি করতে পারিনা সে কারণে নিষেধ করা করে দিয়েছি।'
ছেলে ও তাঁর পরিবারের লোকজন বাড়িতে না থাকায় তাদের বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি। তাদের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে কল দেয়া হলে সেটিও বন্ধ পাওয়া গেছে।
ছাপড়হাটী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান কনক কুমার গোস্বামী বলেন, 'মেয়ের বাবা বিষয়টি জানালে ছেলের বাবাকে ডেকে পাঠাই। ছেলে ও মেয়ের মধ্যে সম্পর্ক আছে বিষয়টি স্বীকার করেন ছেলের বাবা। তখন বিয়ের প্রস্তাব দেই। কিন্তু এতে রাজি নন ছেলের বাবা। পরে রাগারাগি করি এবং বিভিন্ন ভাবে বুঝানোর চেষ্টা করি। তখন ছেলের বাবা টাকা দিয়ে মিটমাট করতে বলেন। পরে মেয়ের বাবাকে ডেকে টাকার অফার করি। তবে টাকায় পরিমাণ কতো সেটা বলিনি। কিন্তু মেয়ের বাবা এতে রাজি হননি।'
থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মিলন কুমার চ্যাটার্জী বলেন, 'অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি গুরুত্বসহকারে খতিয়ে দেখা হচ্ছে।'
যাযাদি/ এম