সোমবার, ০৬ মে ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪৩১

নৌকায় ভোট দেয়ায় ৩৫টি গ্রামে তান্ডব

কালকিনি (মাদারীপুর) প্রতিনিধি
  ০৯ জানুয়ারি ২০২৪, ২১:২৭
নৌকায় ভোট দেয়ায় ৩৫টি গ্রামে তান্ডব

মাদারীপুর-০৩ সংসদীয় আসনে নৌকায় ভোট দেয়ায় টানা দুইদিনে ২৫-৩০টি গ্রামে তান্ডব চালিয়েছে সদস্য বিজয়ী স্বতন্ত্র প্রার্থী তাহমিনা বেগমের কর্মী-সমর্থকরা। এতে শতাধিক ঘরবাড়ি ভাংচুর-লুটপাটের অভিযোগ ওঠেছে। এরমধ্যে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে বেদে সম্প্রদায়ের মানুষ। হামলায় আহতও হয়েছে অন্তত ২০ জন। এমনকি বসতঘরে অগ্নি-সংযোগের ঘটনাও ঘটেছে। থমথমে অবস্থা বিরাজ করায় মোতায়েন করা হয়েছে অতিরিক্ত পুলিশ।

সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, আহাজারি চলছে ঘরে ঘরে। নৌকায় ভোট দেয়ায় অপরাধে শতাধিক ঘরবাড়ি তছনছ, লুটপাট করা হয়েছে মূলবান জিনিসপত্র। আগুনও দেয়া হয়েছে বসতঘরে।

ভুক্তভোগিরা জানায়, মাদারীপুরের কালকিনির চর ঠেঙ্গামারা গ্রামে কয়েকশ’ অস্ত্রধারী হামলা চালায় বেদে সম্প্রদায়ের মানুষের উপর। বিজয়ী স্বতন্ত্র প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকরা দফায় দফায় হামলা চালিয়ে ১৫টি বসতঘর ভাংচুর, লুটপাট ও আগুন ধরিয়ে দেয়। এতে নিঃশ^ হতদরিদ্ররা। গত রবি থেকে আজ মঙ্গলবার টানা তিনদিন ধরে এই অবস্থা চলে কয়ারিয়া, ফাসিয়াতলা, নয়াকান্দি, ঘটকচর, শশিকর, কেন্দুয়াসহ অন্তত ৩৫টি গ্রামে। ভয়ংকর পরিস্থিতিতে ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়েছে নৌকার অনেকে এজেন্ট ও কর্মী-সমর্থকরা। পুরো এলাকাজুড়ে বিরাজ করছে থমথমে পরিস্থিতি। আতঙ্ক থাকায় মোতায়েন করা হয়েছে অতিরিক্ত পুলিশ। এমন তান্ডবকে ১৯৭১ সালের পাক বাহিনীর ঘটনার সাথে তুলনা করে দোষীদের বিচার দাবি করেছেন নৌকার পরাজিত প্রার্থী। যদিও এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন সদ্য বিজয়ী স্বতন্ত্র প্রার্থী। এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনের কথা জানিয়েছে পুলিশ।

ভুক্তভোগিরা কয়েকজন জানান, এক সাথে কয়েকশ’ মানুষ দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে এই হামলা চালিয়েছে। ঘর থেকে সবকিছু নিয়ে গেছে। নগদ টাকা, স্বর্ণালংকার, দামি আসবাবপত্র, খাবারের চাল-ডালও বাদ পড়েনি। পা ধরে তাদের নিষেধ করলেও কেউ শোনেনি এই কথা। এর বিচার চাই।

পরাজিত নৌকার প্রার্থী ড. আবদুস সোবহান মিয়া গোলাপ বলেন, বিজয়ী তাহমিনা বেগমের লোকজন এই হামলা চালিয়েছে। এটি পাক হানাদার বাহিনীর ঘটনাকেও হার মানায়। এই ঘটনায় দোষীদের বিচার হওয়া উচিৎ।

সদ্য বিজয়ী স্বতন্ত্র প্রার্থী তাহমিনা বেগম বলেন, কয়েকটি স্থানে অনাকাঙ্খিত ঘটনা ঘটেছে। যারা ঘটিয়েছে তারা সন্ত্রাসী। এই সন্ত্রাসীদের বিচার চাই। ঘটনার সাথে স্বতন্ত্র প্রার্থীর কেউ জড়িত নয়। মাদারীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. কামরুল ইসলাম জানান, কয়েকটি স্থানে হামলা ও ভাংচুরের ঘটনা ঘটেছে। এই ঘটনায় জড়িতদের ধরতে পুলিশ কাজ করছে। এছাড়া বিভিন্ন স্থানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, মাদারীপুর-০৩ আসনে ঈগল প্রতিকে ৯৬ হাজার ৩শ’ ৩৩ পেয়ে বিজয়ী হন স্বতন্ত্র প্রার্থী তাহমিনা বেগম। তিনি কালকিনি উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি। অপরদিকে নৌকা প্রতিকে ড. আবদুস সোবহান মিয়া গোলাপ পান ৬১ হাজার ৯শ’ ৭১ ভোট। পরাজিত এই প্রার্থী কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশান সম্পাদক।

যাযাদি/এসএস

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে