সোমবার, ০৬ মে ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪৩১

ওপারের গোলাগুলি-মর্টার শেলের বিস্ফোরণে কাঁপছে টেকনাফ

টেকনাফ প্রতিনিধি
  ০৪ এপ্রিল ২০২৪, ১৭:৩৬
ওপারের গোলাগুলি-মর্টার শেলের বিস্ফোরণে কাঁপছে টেকনাফ

মিয়ানমারের রাখাইনে দীর্ঘ দুইমাসের অধিক সময় ধরে বিজিপির সঙ্গে আরাকান আর্মি চলমান সংঘাত চলছে। অব্যাহত গোলাগুলি ও মর্টারশেলের গোলার বিকট শব্দ যেন থামছে না। যার কারণে আতঙ্কও কাটছে না বাংলাদেশ সীমান্ত এলাকায় বসবাসরত স্থানীয়দের।

বৃহস্পতিবার (৪ এপ্রিল) ভোর পর্যন্ত টেকনাফ উপজেলা হ্নীলা, পৌরসভার ও সাবরাং এর বিপরীতে ব্যাপক গোলাগুলি ও গোলার বিকট শব্দ হয়। এতে বাংলাদেশ সীমান্ত কেঁপে ওঠে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা ফরিদ আলম জানান- টেকনাফের হ্নীলা ইউপির লেদা ও সীমান্তের চৌধুরীপাড়া তার বিপরীতে মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনীর একাধিক ঘাঁটি রয়েছে। এসব ঘাঁটিতে উড়ছে মিয়ানমারের পতাকা। আর অবস্থান শক্ত করেছে সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিপি।

তবে এসব ঘাঁটি দখলে নিতে আরাকান আর্মি কৌশল পাল্টে রাতের বেলায় আক্রমণ করছে বিজিপিকে। আর পাল্টা জবাব দিচ্ছে বিজিপিও। যা দেখা যাচ্ছে সীমান্তের এপার থেকে। তাদের চলমান সংঘাতের কারণে এর প্রভাব এসে পড়ছে এপারে সীমান্তের বাসিন্দাদের ওপর।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, উঁচু পাহাড়ের ওপর দিয়ে আসার সময় সীমান্তের দিকে তাকালে আগুনের দলা আর ধোঁয়ার কুণ্ডলি দেখা যায়। মাঝে মধ্যে বিকট শব্দ হয়। বিস্ফোরণের শব্দে বসতঘরেও থাকা যায় না। বর্তমানে সীমান্ত পরিস্থিতি খুবই আতঙ্কের।

স্থানীয় জেলেরা জানান, মিয়ানমারের সংঘাতের কারণে বন্ধ রয়েছে নাফ নদীতে মাছ শিকার। যার কারণে ঘাটে নোঙর করা রয়েছে অসংখ্য ট্রলার। দীর্ঘ সময় মাছ শিকারে যেতে না পেরে নষ্ট হচ্ছে ট্রলারের ইঞ্জিনসহ প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম। আর চরম উৎকণ্ঠায় রয়েছে নাফ নদীতে মাছ শিকার করে জীবিকা নির্বাহ করা কয়েক হাজার-হাজার জেলে।

জেলে গুরা মিয়া জানান, ট্রলার নিয়ে নদীর ওদিকে যাওয়া যাচ্ছে না। সেখানে প্রচুর গোলাগুলি হচ্ছে। কাজ বন্ধ থাকায় উপোস থাকার অবস্থা আমাদের। পাশাপাশি পবিত্র ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে পরিবার পরিজনের খরচ মেটাতে হিমশিম খাচ্ছি। নাফ নদীতে মাছ শিকারে না গেলেও জীবিকার তাগিদে অনেকে জেলে ছুটে যাচ্ছে সীমান্তের নিকটবর্তী মৎস্য ঘের, ক্ষেতখামার ও লবণ মাঠে। তবে তাদেরকে নির্ভয় দেওয়া হচ্ছে বলে জানান টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রাশেদ মাহমুদ আলী।

তিনি বলেন, বৃহস্পতিবার রাত থেকে দুপুর পর্যন্ত থেমে থেমে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে গোলাগুলি ও মর্টারশেলের গোলার বিকট শব্দ ভেসে আসে সীমান্তের এপারে। হ্নীলার ফুলের ডেইল এবং ওয়াবরাংয়ের ঠিক বিপরীত এলাকায় গোলাগুলি ও মর্টারশেলের গোলার বিকট শব্দ হয়। এপারের সীমান্তের অনেক বাসিন্দা রাতে ঘুমাতে পারেনি গুলি ও গোলার বিকট শব্দে।

সীমান্তে গোলাগুলি, মাদক পাচার ও রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের শঙ্কায় নাফ নদীতে বন্ধ রয়েছে মাছ শিকার। যার কারণে বিপাকে পড়েছেন ১০ হাজারের বেশি জেলে পরিবার।

এ বিষয়ে টেকনাফ (২ বিজিবি) ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেঃ কর্নেল মোঃ মহিউদ্দীন আহমেদ জানান- গোলাগুলির বিষয়গুলো তাদের অভ্যন্তরীণ সংঘাত। তবে বাংলাদেশ সীমান্তে বিজিবি কঠোর অবস্থানে রয়েছে। সীমান্ত থেকে যাতে কোন ধরণের মাদক, রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ ঠেকাটে সর্বদা প্রস্তুত রয়েছি।

যাযাদি/ এম

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে