বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪, ১৯ বৈশাখ ১৪৩১

গাংনীতে বৃদ্ধি মসলা পেঁয়াজ রসুন ও আদার দাম, সবজিতে ক্রেতা শুণ্য

গাংনী(মেহেরপুর)প্রতিনিধি
  ০৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৮:১৫
গাংনীতে বৃদ্ধি মসলা পেঁয়াজ রসুন ও আদার দাম, সবজিতে ক্রেতা শুণ্য

মেহেরপুরে গাংনীতে রান্নার অন্যতম অনুসঙ্গ মসলার দাম বেশ চড়া। সব ধরনের মসলার দাম বেড়েছে কেজিতে ১০-২০ টাকা থেকে দুই হাজার টাকা পর্যন্ত। সেই সাথে বেড়েছে পেঁয়াজ, রসুন, আদা এবং আলুর দর। এদিকে কমেছে সব ধরনের সবজির দাম। ঈদের সময় সবজির দাম আরও কমার আশংকার কথা জানালেন ব্যবসায়ীরা। মসলার বাজার নিয়ন্ত্রণে কোন পদক্ষেপ চোখে পড়েনি। তবে বাজার মনিটরিংয়ের আশ্বাস দিয়েছেন প্রশাসন।

বিভিন্ন বাজার ঘুরে পাওয়া গেছে ভিন্ন ভিন্ন চিত্র। হাটবাজারগুলোতে খুচরা পর্যায়ে মশলা কেজিতে ২০-৫০ টাকা থেকে দুই হাজার টাকা পর্যন্ত বেশিতে বিক্রি হচ্ছে। ইন্ডিয়ান জিরা কেজিপ্রতি ৯০০ টাকা, ১৬০০ টাকায় শাহী জিরা, কিশমিশ কেজিপ্রতি ৮০০ টাকা, গোল্ডেন এলাচ ২৮০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। চিনাবাদাম ১৮০ টাকা কেজি, কাজুবাদাম ১৩০০ টাকা কেজি, পেস্তাবাদাম ৩ হাজার ৬০০ টাকা কেজি, তেজপাতা ১২০ টাকা কেজি, ধনিয়া কেজিপ্রতি ২৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

বড় এলাচ ২ হাজার ৬০০ টাকা, লবঙ্গ ২ হাজার টাকা, দারুচিনি ৬০০ টাকা, হলুদের গুঁড়া ৩৬০ টাকা কেজি, খোলা মরিচের গুঁড়া প্রতি কেজি ৫০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এদিকে গাংনী কাঁচা বাজারে প্রতি কেজি পেঁয়াজ পাইকারীতে ১০ টাকা বেড়ে ৫৪ টাকা, রসুনে ২০ টাকা বেড়ে ১৬৩ টাকা এবং আদা ৩০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ২৫০ টাকা পর্যন্ত। পাইকারীতে দর বৃদ্ধির সাথে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে খুচরা বাজারের দর।

বামন্দী বাজারের মসলা বিক্রেতা জহুরুল ইসলাম জানান, ঈদে প্রতিটি মসলায় অনেক দাম বেড়েছে। পাইকারী পর্যায়ে কেজিপ্রতি ২শ' থেকে ২ হাজার টাকা দাম বেড়েছে। ফলে খুচরা বাজারে দাম আরো বেড়েছে ২০ টাকা থেকে ৩০ টাকা।পাইকারী যেমন দামে কিনে আনা হয় তেমনভাবেই বিক্রি করতে হয়। দাম বাড়ানো বা কমানোতে তাদের হাত নেই। একই কথা জানালেন গাংনী বাজারের মসলা বিক্রেতা জাহাঙ্গীর ও মকলেচ। তারা জানান, ঈদ সামনে রেখে প্রতি বছরই মসলার দাম বৃদ্ধি পায়। এবারও এর ব্যতিক্রম কিছু হয়নি। তবে এবারে দাম অনেকটা বেশি বেড়েছে এটাই সমস্যা।

গাংনী কাঁচা বাজারের আড়তদার সাহাদুল ইসলাম জানান, ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি হওয়ায় পেঁয়াজের দাম কমেছে। তবে স্থানীয় পেঁয়াজ সংরক্ষণ শুরু হওয়ায় দর বেড়েছে। বিশেষ করে ফরিদপুর ও পাবনা অঞ্চলে মৌসূম ভিত্তিক পেঁয়াজ সংরক্ষণের কাজ শুরু হয়েছে। অন্যদিকে ঈদের সময়ে পেঁয়াজ, রসুন ও আদার চাহিদা বৃদ্ধি পায়। এ কারণেও দর বৃদ্ধি হতে পারে বলে মনে করছেন তিনি।

এদিকে সব ধরনের সবজির দর পড়েছে আশংকাজনকহারে। গেল এক সপ্তাহের মতই আজও লাউ, কুমড়া, পটল, ঢেড়স, বেগুন ও পুঁইশাকের দর রয়েছে ১০ টাকার নিচে। ঈদে মাংসের প্রচলন থাকায় আগামি এক সপ্তাহ সবজির দর আরও পড়বে বলে মনে করছেন ব্যবসায়ীরা। রোজায় সবচেয়ে আলোচিত ছিল শসার দাম। মাঝ রোজার সময়টাতেও শসার বাজারে ব্যাপক অস্থিরতা ছিল। ১০০-১২০ টাকা কেজি বিক্রি হয়েছিল। সেই শসার কেজি মাত্র ১১ টাকা। খুচরা পর্যায়ে গিয়ে ২০-১৫ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।

পাইকারী বাজারে সবজি কিনতে আসা কয়েকজন সবজি ব্যবসায়ী জানান, গত সপ্তাহে কেজি পটলের দর ছিল ৬০ টাকা। এখন দর পতনের মধ্য দিয়ে তা বিক্রি হচ্ছে মাত্র ২৫ টাকা। তাছাড়া ঢেড়সের দাম অর্ধেকে নেমে বিক্রি হচ্ছে ২০ টাকা কেজি। অন্যদিকে আগের মতই কম দামে পাওয়া যাচ্ছে লাউ, পুঁইশাক ও বেগুন। রমজান মাস এবং ঈদের কয়েকজন পর পর্যন্ত সবজির চাহিদা স্বাভাবিকভাবেই কম থাকে। তবে এবার এ সময়টাতে স্থানীয় সবজির ব্যাপক জোগান থাকায় অনেকটাই পানির দরে বিক্রি হচ্ছে শীতকালীন এসব সবজি।

ক্রেতাদের অভিযোগ, প্রতি বছর ঈদসহ কয়েকটি উৎসবে মসলার দাম বৃদ্ধি পায়। সরকার নানা ধরনের পদক্ষেপের কথা জানালেও বাস্তবে তার প্রমাণ মেলেনা। ইতোমধ্যে বাজার মনিটরিংয়ের কথা বলা হলেও অদ্যাবদি চোখে পড়েনি। বাজারে মসলার যে দাম তা রীতিমতো ভয়ানক। কিছুই কেনার উপায় নেই।

মেহেরপুর ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক সজল আহমেদের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেও কোন সাড়া মেলেনি।

গাংনী উপজেলা নির্বাহী অফিসার প্রীতম সাহা জানান, উপজেলা প্রশাসনসহ অন্যান্য সংস্থা নিয়মিত বাজার মনিটরিং করছে। প্রশাসন বেশ তৎপর। কেউ বেশি দামে পন্য বিক্রি করলেই আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

যাযাদি/এসএস

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে