বুধবার, ০১ মে ২০২৪, ১৮ বৈশাখ ১৪৩১

গৌরীপুর রেলওয়ে জংশনে নারী যাত্রীকে মারধর

গৌরীপুর (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি
  ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৬:৪৬
গৌরীপুর রেলওয়ে জংশনে নারী যাত্রীকে মারধর

ময়মনসিংহের গৌরীপুর রেলওয়ে জংশনে বুধবার (১৭ এপ্রিল) চট্টগ্রামগামী ৩৮নং ডাউন ট্রেনের যাত্রী ট্রেনের বগিতে উঠার সময় রেলওয়ে পুলিশ ও নিরাপত্তা কর্মীরা উপজেলার শালীহর গ্রামের জুলহাস মিয়ার স্ত্রী মো. রিতা আক্তারের নিকট অতিরিক্ত টাকা দাবি করেন ও টাকা না দেয়ায় ট্রেনে উঠতে বাঁধা দেন।

এতে ওই নারী যাত্রী প্রতিবাদ করলে রেলওয়ে পুলিশ, নিরাপত্তা কর্মীরা তাকে শারীরিকভাবে লাঞ্চিত করেন। এসময় ওই নারী যাত্রীর সঙ্গে থাকা স্বামী মো. জুলহাস মিয়া, তার দু’ভাই সাহাবুদ্দিন শেখ (২০) ও আলী হোসেন (১৯) প্রতিবাদ করেন। এ প্রতিবাদে যুক্ত হয় ট্রেনের অন্যান্য যাত্রীরাও।

এ সময় বিরোধ নিষ্পত্তি করতে এসে গৌরীপুর রেলওয়ে ফাঁড়ির কন্সটেবল নাজমুল বিশ্বাস ‘মাদারচুদের বাচ্চারা’ বলে গালি দেন। এতে বিক্ষুব্দ জনতারড় রোষানলে পড়ে তিনিও লাঞ্চিত হন।

ট্রেনের টিকেট কালোবাজারী, ৩৮ডাউন ট্রেনে কর্মরত পুলিশ, আরএসবি’র সদস্যদের কোচের দরজা বন্ধ করে টাকা আদায়, রেলওয়ে যাত্রীকে লাঞ্চিত করার প্রতিবাদে গৌরীপুর রেলওয়ে জংশনে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করে ক্ষুব্ধ যাত্রী ও এলাকার জনসাধারণ। তারা ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।

রেলওয়ে যাত্রী মোছা. রিতা আক্তার জানান, গৌরীপুর রেলওয়ে প্লাটফরমে ৩৮নং ডাউন ট্রেনে বুধবার সকালে চট্রগ্রাম যাওয়ার উদ্দেশ্যে আমি ও আমার পরিবারের লোকজন উঠতে যাই।

এ সময় কোচের দরজা লাগিয়ে কর্তব্যরত পুলিশ, আরএনবি সদস্য ও পয়েন্টসম্যান রফিকুল ইসলাম আমাদের বাঁধা দেন। ট্রেনে যেতে হলে ৪ হাজার টাকা ভাড়া দাবি করেন। তাদের প্রস্তাবে আমি ২ হাজার টাকা, পরবর্তীতে ২হাজার ৫শ টাকা দিতে রাজি হই। এ সময় অন্য ৫জনের নিকট থেকে ৪হাজার টাকা নিয়ে ট্রেনের বগিতে উঠতে দেয়। আমাদেরকে বলে আর যাত্রী উঠানো হবে না।

এতে আমি প্রতিবাদ করায় রফিকুল ইসলাম প্রথমে আমাকে থাপ্পর মেড়ে মাটিতে ফেলে দেন। এরপরে পুলিশ ও নিরাপত্তা কর্মীরাও আমাকে এলোপাতাড়ি লাথি মারতে থাকে। আমাকে ফেরাতে ও তাদের ঘটনার প্রতিবাদ করতে এসে আমার স্বামী ও ভাইয়েরাও মারধরের শিকার হয়।

গৌরীপুর রেলওয়ে ফাঁড়ির পুলিশ আমাদেরকে উদ্ধার না করে রেলওয়ে ঘুষখোরদের বাঁচাতে উল্টো আমার স্বামী ও দু’ভাইকে গ্রেফতার করেছে। এ ঘটনার আমি বিচার চাই।

উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ জানান, ট্রেনের কোচের দরজা আটকিয়ে যারা চাদাবাজি করেছে, তাদেরকে আগে গ্রেফতার করা উচিত। নারী যাত্রীকে লাঞ্চিত আবার তার স্বামী ও ভাইকে গ্রেফতারের বিষয়টি অত্যন্ত দুঃখজনক।

গৌরীপুর রেলওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মীর্জা মোহাম্মদ মুক্তা জানান, পুলিশের উপর হামলার ঘটনায় মো. জুলহাস মিয়া (৩০), সাহাবুদ্দিন শেখ (২০) ও আলী হোসেন (১৯) গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে আহত পুলিশ সদস্য নাজমুল বিশ্বাস বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেছেন।

গৌরীপুর স্টেশনের আরএনবি ইনচার্জ মো. মোরশেদ আলম জানান, নারী যাত্রীকে মারধরের ঘটনার সঙ্গে গৌরীপুর স্টেশনের কর্তব্যরত কোন নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য জড়িত নন। বিষয়টি উধ্বর্তন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে।

গৌরীপুর রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার মো. সফিকুল ইসলাম জানান, এ ঘটনাটি কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

যাযাদি/ এম

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে