সোমবার, ০৬ মে ২০২৪, ২৩ বৈশাখ ১৪৩১

গোসাইরহাটে হাট বাজারে অতিরিক্ত টোল, সাধারণ মানুষের ভোগান্তি

গোসাইরহাট (শরীয়তপুর) প্রতিনিধি
  ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১২:০১
গোসাইরহাটে হাট বাজারে অতিরিক্ত টোল, সাধারণ মানুষের ভোগান্তি

শরীয়তপুরের গোসাইরহাট উপজেলার কোদালপুর বাজারে গলাকাটা টোল আদায় করা হচ্ছে বলে অভিযোগ ভুক্তভোগীসহ স্থানীয়দের।

হাটে উপজেলার কৃষক ও গৃহস্থরা উৎপাদিত খাদ্যশষ্যসহ বিভিন্ন মালামাল বিক্রি করতে গিয়ে সরকার নির্ধারিত টোল মূল্যের চেয়ে প্রায় তিনগুণ অতিরিক্ত অর্থ গচ্ছা দিতে হচ্ছে। এতে আর্থিক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন হাটের ক্রেতা-বিক্রেতারা এবং মাত্রাতিরিক্ত টোল আদায়কারী কর্মীদের অসদাচরণের শিকার হয়ে হাট বিমুখ হচ্ছেন সাধারণরা।

কোদালপুর বাজারের মুদি ও বাকালু ব্যবসায়ী কোদালপুর মৃধা পাড়ার শামসুল হক মোল্লার ছেলে মো. রফিক মোল্লা বলেন, আমাদের উক্ত বাজারের চলমান ইজারাদার কাঞ্চন সরদার, পিতা মৃত শুকুর সরদার সাং কোদালপুর বলু সরদার পাড়া, ইউ,পি কোদালপুর, উপজেলা গোসাইরহাট, জেলা শরীয়তপুর৷ বাংলা ১৪৩০ সালের পহেলা বৈশাখ হইতে ইজারা গ্রহন করিয়া তাহার সঙ্গীয় কতিপয় লোকজন নিয়া গোসাইরহাট উপজেলার অন্যান্য ছোট বড় হাট বাজারের তুলনায় অধিক হারে জোর জুলুম করিয়া খাজনা আদায় করিয়া ব্যবসায়ীদের ক্ষতি করিতেছে। এছাড়া বাজার মুখি বিভিন্ন বিক্রেতারা বাজারে মালামাল বিক্রয়ের সময় ইজারাদার সহ তাহার সঙ্গীয়রা তাদের নিকট হইতে অধিক হারে খাজনা আদায় করায় বাজারের লোকজনের উপস্থিতি কম হওয়ায় আমরা বাজারের ছোট বড় সকল ব্যবসায়ীগন মারাত্মক ক্ষতি ও লোকসানের সম্মুক্ষিন বিধায় ঘটনার বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য উপজেলা নির্বাহী অফিসারের বরাবর অভিযোগ করিলাম।

সরেজমিন জানা যায়, মাকসুদ মৃধা, মাহমুদ বেপারী ও কাঞ্চন সরদার, ২৮০০১৫০ টাকা সরকারি ডাক হইলে সেখানে কষাকষি দর উঠানো হয় ৩৬৪০১৯৫ টাকা৷ উপজেলা কোদালপুর হাটে প্রায় ৩শ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। উপজেলার ঐতিহ্যবাহী উক্ত হাটে কোথাও টোল তালিকা প্রদর্শন করা হয় নাই। হাটের মূল ইজারাদার প্রতিটি মালের বাজার পৃথকভাবে সাবলিজ প্রদান করেছেন। সাবলিজ গ্রহীতারা পৃথক মালামাল বাজারে টোল আদায়ের জন্য লোক নিয়োগ দিয়েছেন। তারা সরকারি নীতিমালা বিন্দুমাত্র ভ্রুক্ষেপ না করে নিজেদের মনগড়া হারে টোল আদায় করে চলেছেন। উক্ত হাটের পেঁয়াজ, রসুন, আলু ও মরিচ বাজারে কুইন্টাল প্রতি সরকার নির্ধারিত টাকার স্থলে টোল আদায় করা হচ্ছে৷

গোসাইরহাট ইউনিয়নের বটনা গ্রামের মানিক মিয়া (৪২) জানান, হাটবার হলে আমি পান সুপারী নিয়ে বাজারে বিক্রির জন্য বসি আমার কাজ থেকে আগে ৯০ টাকা নিতো এখন ১৫০ টাকা দিতে হবে৷

ডামুড্যা সম্ভুকাঠি সৈকত (৩২), তরমুজ বিক্রেতা বলেন, চটি লাগানো সময় ইজাদারের লোক এসে বলে ৬০০ টাকা দিলে তরমুজ বিক্রি করতে পারবে নাইলে চটি লাগানোর দরকার নেই৷ ইজারাদার বলেন এবার বেশি টাকা দিয়ে ইজারা আনা হয়েছে বেশি টাকাই লাগবে৷

বালুরচর খালেক সরদার পাড়া গ্রামের পারভেজ (৫০) জানান, বাকালুর দোকান পাতার সঙ্গে সঙ্গে ইজারার লোকজন এসে ২৫০ টাকা খাজনা নিয়ে যায়, এত টাকা কেন, আগে তো দিতাম ১৮০ টাকা এব্যাপারে জানতে চাইলে তারা বলেন, এখন থেকে ২৫০ টাকা দিতে হবে, মন চাইলে দোকান নিয়ে বসবে তার কম টাকা দিতে মন চাইলে ব্যবসা করার দরকার নেই৷ ২ কিলোমিটার দূরে বালুরচর বাজারে দেই মাত্র ৫০ টাকা, কোদালপুর বাজারে এত টাকা দিলে কিভাবে দোকান করবো তারপর সংসার চালাবো৷ সরকার যদি কোন পদক্ষেপ নিতো তাহলে সব ব্যবসায়ীদের খুব ভালো হতো৷

পান বিক্রেতা নাসির সরদার বলেন, কোদালপুর বাজারে আগে নেওয়া হতো ১২০ টাকা এখন তারা দুই হাত যায়গায় ১৫০ টাকা ছাড়া হাট করতে না বলে, অন্যন্যা বাজারের তুলনায় তারা ডাবল টাকা নিচ্ছে৷ ব্যবসায়ীরা বলেন ইজারাদার রা আমাদের সাথে জুলুম করতেছে৷

এ ব্যপারে হাট ইজারাদারে দায়িত্বে থাকা মো. আলহাজ সরদার জানান, এই হাটে বিগত বছরগুলোতে যে হারে খাজনা আদায় করা হচ্ছিল আমি তারথেকে ৫০ টাকা টোল আদায় করতেছি। আমাদের তো অতিরিক্ত টোল আদায় করা হয় না।

এ বিষয়ে গোসাইরহাট উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) আহমেদ সাব্বির সাজ্জাদ বলেন, কোদালপুর বাজারের ৩১জন ব্যবসায়ী বেশী টোল আদায়ের ব্যাপারে একটা অভিযোগ করেছেন৷ কোনো অনিয়ম হলে সহ্য করা হবে না বরং কঠোর ভাবে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে’।

যাযাদি/ এসএম

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে