সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

২১ মাস পর মেয়েকে হত্যার স্বীকারোক্তি মায়ের

পূর্বধলা (নেত্রকোনা) প্রতিনিধি
  ০৮ মে ২০২৪, ১৩:৩০
গ্রেপ্তার জোসনা বেগম। ছবি: যায়যায়দিন

হত্যাকাণ্ডের ২১ মাস পর সুমি কাউছার (১৮) হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন করেছে পূর্বধলা থানা পুলিশ। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট ও তদন্ত শেষে এ হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত সুমি কাউছারের মা জোসনা বেগমকে গত সোমবার তার নিজ বাড়ী থেকে গ্রেপ্তার করেছে পূর্বধলা থানা পুলিশ। মায়ের হাতে মেয়ের মৃত্যুর ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। নেত্রকোণার পূর্বধলা উপজেলার বৈরাটি ইউনিয়নের দরুন বৈরাটি গ্রামের এ ঘটনা ঘটে।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ২০২২ সালের ২২ আগস্ট রাতে উপজেলার দরণ বৈরাটি গ্রামের মৃত এমএল মিয়ার মেয়ে সুমি কাউছার (১৮) প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে গিয়ে তাদের বাড়ির পাশে টয়লেটে যায়। টয়লেট শেষে হঠাৎ মেয়ে চিৎকার দিলে মা জোসনা বেগম দৌড়ে গিয়ে তার মেয়েকে ঘরে নিয়ে আসার পর মেয়ে মারা যায়। এমন খবর এলাকায় ছড়িয়ে দেয় মা জোৎসা বেগম। খবর পেয়ে পূর্বধলা থানা পুলিশ লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে এবং মা জোসনা বেগম বাদী হয়ে পূর্বধলা থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা দায়ের করেন। পুলিশ লাশ ময়নাতদন্তের জন্য নেত্রকোনা সদর হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করেন।

পূর্বধলা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ রাশেদুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, ঘটনার প্রায় ৭/৮ মাস পর ময়নাতদন্তের রির্পোট থানায় আসে এবং রিপোর্ট পর্যালোচনা করে দেখা যায় ভিকটিমকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে। উক্ত রিপোর্টের ভিত্তিতে পুলিশ বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামি করে পূর্বধলা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করে। মামলা দায়েরের পর থেকে বিভিন্ন কৌশল ও তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় মামলার রহস্য উদঘাটনের চেষ্টা চালায় পুলিশ।

অবশেষে গত ৫ মে গোপন সংবাদ ও তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় ভিকটিমের মা জোসনা বেগমকে জিঞ্জাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে আসা হয়। মামলার বিষয়ে প্রাথমিক জিঞ্জাসাবাদে জোসনা বেগম তার মেয়ে সুমী কাউছারকে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছেন বলে স্বীকার করেন। কারণ হিসাবে তিনি উল্লেখ করেন সুমী কাওছার তার অবাধ্য হয়ে উচ্ছৃঙ্খল জীবনযাপন করতো। সে একাধিকবার আমাকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করাসহ ঘরের আসবাবপত্র ভাঙচুর করে ক্ষতিসাধন করেছে। বাধা নিষেধ সত্বেও জনৈক এক ছেলের সাথে মোবাইল ফোনে নিয়মিত কথা বলতো । ঘটনার দিন জোসনাা বেগম ও তার দুই মেয়ে নিয়ে ঘরে ঘুমিয়ে ছিলেন। গভীর রাতে বড় মেয়ে সুমী কাউছার মোবাইল ফোনে কথা বলতে থাকে, মোবাইল ফোনে কথা বলতে নিষেধ করায় সুমি ক্ষিপ্ত হয়ে তার আমাকে শারীরিকভাবে আঘাত করে। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে সুমীকে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন তার মা।

অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আরো জানান, জিঞ্জাসাবাদে তার মা জোসনা বেগম হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করায় তাকে এ মামলায় গ্রেফতার করা হয় এবং গত মঙ্গলবার বিকালে নেত্রকোনা আদালতে প্রেরণ করা হয়। সেখানে তিনি মেয়েকে হত্যার দায় স্বীকার করে ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে ফৌজদারী কার্যবিধি ১৬৪ ধারা মোতাবেক স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেছেন।

যাযাদি/ এসএম

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
X
Nagad

উপরে