ছেলের খতনা অনুষ্ঠানের দুইদিন পর দুই ছেলেকে নিয়ে মোটরসাইকেলে পারকি সমুদ্র সৈকতে ঘুরতে যায় সৌদি প্রবাসী বাবা নেজাম উদ্দিন (৪২)। সৈকতে ঘুরে আনন্দসহকারে বাবার মোটরসাইকেলে দুই ভাই বসে বাড়ি ফিরছিল তাহমিদ (১২) আর তাসকিন (১০)।
কিন্তু বাড়ির পাশে এসেই তাদের সব আনন্দ মুহুর্তেই থেমে যায়। ঘাতক ট্রাকের ধাক্কায় মোটরসাইকেল থেকে ছিটকে পড়ে দুই ছেলেসহ বাবা। স্থানীয়রা গুরুতর আহত অবস্থায় তাদের উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক বড় ছেলে নাফিজ উদ্দিন তাহমিদ (১২)কে মৃত ঘোষণা করেন। শুক্রবার (১০ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় মর্মান্তিক এই দূর্ঘটনাটি ঘটেছে চট্টগ্রামের কর্ণফুলী টানেল সংযোগ সড়কের কর্ণফুলী উপজেলার বড়উঠান ইউনিয়নের শাহমীরপুর এলাকায়। নিহত কিশোর তাহমিদ (১২) পটিয়া উপজেলার জিরি ইউনিয়নের কৈয়গ্রাম হাজী পাড়া এলাকার নেজাম উদ্দিনের ছেলে। দূর্ঘটনায় মোটরসাইকেলে থাকা তাহমিদের বাবা নেজাম উদ্দিন ও ছোটভাই নাহিদুল ইসলাম তাসকিন (৬)ও গুরুতর হয়। তবে তারা শঙ্কামুক্ত বলে জানা গেছে।
সরেজমিনে নিহত কিশোরের বাড়ি গিয়ে দেখা যায় পরিবারের সদস্যরা তখনো তাহমিদকে নিয়ে হাসপাতাল থেকে ফেরেনি। তাহমিদের মা ছেলের মৃত্যুর খবর শুনার পর থেকে অজ্ঞান হয়ে পড়ে। স্বজনরা বাড়িতে ভিড় করছে।
নিহতের চাচাতো ভাই তানভীর ইসলাম বলেন, দুইমাস আগে নেজাম উদ্দিন সৌদি আরব থেকে এসেছে, দুইদিন আগে ছোট ছেলের খতনা অনুষ্ঠান করেছে। কয়েকদিন পর তিনি আবার সৌদিআরব চলে যাবেন তাই ছেলেদের নিয়ে পারকি সৈকত ঘুরতে যান, আর ফেরার পথেই এই দূর্ঘটনা ঘটল।
তিনি আরো জানান, নেজাম উদ্দিনের দুই ছেলে এক মেয়ের মধ্যে বড় মেয়ে দুই বছর আগে পুকুরে পড়ে মৃত্যু হয়, আর মেজ ছেলে আজ মারা গেল।
এদিকে তাহমিদের মৃত্যুতে পুরো কৈয়গ্রাম এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। শিশুটির অসময়ে চলে যাওয়া পরিবারসহ সবাইকে গভীরভাবে মর্মাহত করেছে।
কর্ণফুলী থানার শাহমীরপুর পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ আবদুল গফুর জানায়, দূর্ঘটনার পর ট্রাক চালক পালিয়ে গেলেও গাড়ি জব্দ করা হয়েছে। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
যাযাদি/ এস