সুনামগঞ্জের ধর্মপাশায় প্রধান উপদেষ্টার দপ্তরের ঈদ উপহার আ.লীগ নেতা মোজাম্মেল হক ইকবাল ও যুবলীগ নেতা গোলাম ফরিদ খোকাকে নিয়ে বিতরণ করেছেন ইউএনও জনি রায়।
এ সংক্রান্ত ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে সমালোচনার ঝড় ওঠে। এ অনুষ্ঠানে স্থানীয় বিএনপিসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদেরও দাওয়াত করা হয়নি। ফলে ইউএনও আওয়ামী লীগের দোসরদেরকে পুনর্বাসনের চেষ্টা করছেন কিনা তা নিয়ে জনমনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
শুক্রবার সকাল ১১টায় উপজেলা পরিষদ সম্মেলন কক্ষে শাড়ি বিতরণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে উপজেলা প্রশাসন। তখন অনুষ্ঠান মঞ্চে উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও পাইকুরাটি ইউপি চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হক ইকবাল এবং সেলবরষ ইউপি যুবলীগের আহবায়ক ও সেলবরষ ইউপি চেয়ারম্যান গোলাম ফরিদ খোকাকে মঞ্চে দেখা যায়।
শাড়ি বিতরণ অনুষ্টানে ফ্যাসিস্ট দোসরদের দেখা গেলেও বিএনপি ও জামায়াতের কোনো নেতাকর্মীকে দেখা যায়নি। অনেকে অভিযোগ করেছেন, ইউএনও জনি রায় আওয়ামী লীগের নেতাদের কৌশলে পুনর্বাসনের চেষ্টা চালাচ্ছেন।
অন্যদিকে অভিযোগ রয়েছে ইউএনও জনি রায় ধর্মপাশা উপজেলায় যোগদানের পর থেকে উপজেলা পরিষদের মাসিক সভা ও আইন শৃঙ্খলার সভাসহ সরকারি বিভিন্ন অনুষ্টানে আ.লীগের পদধারী নেতাদের নিয়ে সভা ও অনুষ্টান করে যাচ্ছেন। এ বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় বিএনপি, জামায়াত নেতাকর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।
ধর্মপাশা উপজেলা বিএনপির যুগ্ন আহবায়ক জুলফিকার আলী ভুট্টো বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের দুঃশাসনে মানুষ সীমাহীন দুর্ভোগে ছিল। আন্দোলন চলাকালে মানুষের ওপর নির্বিচারে গুলি করেছে। নিষিদ্ধ না হলেও সর্বমহলে তাদের অবাঞ্ছিত করা হচ্ছে। কীভাবে সেই দলের স্থানীয় শীর্ষ পর্যায়ের নেতাকে নিয়ে পাশে বসে শাড়ী বিতরণ করেন ইউএনও? এতে বোঝা যায়, এখনও সেই পিছুটান রয়েছে।
ধর্মপাশা উপজেলা যুবদলের সাবেক আহবায়ক ও বিএনপি নেতা মোহাম্মদ আলী বলেন, ইউএনওকে বারবার বলার পরেও আওয়ামী লীগ নেতাদের পুনর্বাসন করার জন্যই প্রশাসন তাদের নিয়ে বিভিন্ন সভা ও অনুষ্টান করছে। অথচ বিগত ১৬ বছর বহু জনপ্রতিনিধি চেয়ারে থেকেও তাদের হেনেস্থা করেছে এই প্রশাসন। তিনি ঘটনার তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জনি রায় বলেন, স্মৃতি রাখার জন্য ব্যানার করা হয়েছিল। কেউ অনুষ্ঠানে চলে আসলে তাদেরকেতো আর চলে যেতে বলতে পারিনা। আইনশৃঙ্খলা বা সমন্বয় মিটিংয়ে তিন মাসের ভেতরে ধারাবাহিকভাবে যদি একবার না আসে তাদের সদস্য পদ থাকে না। তারা যদি কোনো পদবী ধারণ করে থাকে তাহলে স্থানীয়ভাবে ও সচেতন নাগরিক হিসেবে বা সরকারের যে মতাদর্শে নিবেন তাতে আমাদের কোনো আপত্তি নাই।
সুনামগঞ্জ জেলা জেলা প্রশাসক ড. মোহাম্মদ ইলিয়াস মিয়া বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। আমি খোঁজখবর নিচ্ছি। আর যদি এমনটি হয়ে থাকে, তবে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
যাযাদি/ এস