বুধবার, ২১ মে ২০২৫, ৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

বিছানায় পড়েছিল মায়ের লাশ, পাশে কাঁদছিল শিশুটি

শ্রীপুর (গাজীপুর) প্রতিনিধি
  ২১ মে ২০২৫, ১৩:২৭
বিছানায় পড়েছিল মায়ের লাশ, পাশে কাঁদছিল শিশুটি
ছবি: যায়যায়দিন

গাজীপুরের শ্রীপুরে ভাড়া দেওয়া একটি কক্ষের বিছানা থেকে আকলিমা আক্তার নামে এক গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করেছে থানা পুলিশ। পাশের কক্ষ থেকে শিশুর কান্নার আওয়াজে প্রতিবেশীরা এগিয়ে গিয়ে দেখেন ছোয়া নামে ৮ মাস বয়সী এক শিশু কাঁদছে। পাশে পড়ে আছে তার মায়ের লাশ।

বুধবার সকাল পৌনে ৮টার দিকে গাজীপুরের শ্রীপুরের আবদার গ্রামের শেখবাড়ি মসজিদ এলাকার জয়নাল মিয়ার ভাড়া দেওয়া বাড়িতে এই ঘটনা ঘটে।

1

নিহত আকলিমা আক্তার (৩০) ময়মনসিংহ জেলার মুক্তাগাছা উপজেলার নিমুরিয়া গ্রামের আদনান ইসলামের স্ত্রী ও একই উপজেলার সমার আলীর মেয়ে। তিনি স্বামীর সঙ্গে ওই বাড়িতে ভাড়া থেকে পার্শ্ববর্তী ইন্টিমেট এ্যাটায়ার লিমিটেড নামক পোশাক কারখানায় চাকরি করতেন। তবে স্বামী কোথায় চাকরি করতেন তা জানা যায়নি।

ওই ঘরে থাকতেন আকলিমার স্বামী আদনান ইসলাম। সকালে শিশুটি যখন কাঁদছিল, তখন ঘরে আদনান ইসলামকে পাওয়া যায়নি। এমনকি সকাল থেকে তার মোবাইল ফোনও বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে।

বাড়িটির মালিক জয়নাল মিয়া বলেন, শিশুর কান্না শুনে ঘরের ভিতরে গিয়ে আকলিমাকে মৃত অবস্থায় পায় প্রতিবেশীরা। পরে আমাকে জানালে আমি পুলিশকে খবর দেই। আমি এ বাসায় থাকি না। তাই কি কারনে বা কিভাবে এ ঘটনা বিস্তারিত জানি না।'

প্রতিবেশীদের বরাত দিয়ে স্থানীয় হারুন উর রশিদ জানান, এ বাড়ির অন্যান্য কক্ষের লোকজন শিশুর কান্না শুনে এগিয়ে আসেন। গিয়ে দেখতে পান ঘরের দরজা খোলা। ভিতরে গিয়ে দেখেন শিশুটি অনবরত কাঁদছে। অপরদিকে পাশেই নিস্তেজ হয়ে পড়ে আছে তার মায়ের মরদেহ। মরদেহের নাকের কাছে কিছুটা রক্ত জমাট বাধা। এরপর তারা আশপাশের লোকজনকে জানান। পাশাপাশি শ্রীপুর থানায় খবর দেন।

প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন, মঙ্গলবার রাত দশটায় কাজ থেকে আকলিমা ঘরে ফিরেছিলেন বলে তারা দেখেছেন। স্বামীকে নিয়ে খাওয়া-দাওয়াও করেছেন। কিন্তু রাতে তাদের মধ্যে কি হয়েছে তা তারা জানেন না। এরপর সকালে তারা ওই ঘরে শিশুটির কান্না শুনেন।

আকলিমার ভাই মোঃ শামীম মিয়া জানিয়েছেন, বিয়ের পর থেকে তার বোনকে নির্যাতন করতো দুলাভাই। কিন্তু বুধবার সকালে তাদের মধ্যে কিছু হয়েছিল কি না তা নিশ্চিত জানেন না।

শ্রীপুর থানার ভারাতত্ত্ব কর্মকর্তা (ওসি) মহাম্মদ আব্দুল বারিক বলেন, ‘খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য গাজীপুরের শহিদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হবে।প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে এটি হত্যাকান্ড। ঘটনার পর থেকে শিশুর বাবা পলাতক আছে। আমরা এই ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা নিবো। ’

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে