বৃহস্পতিবার, ২৯ মে ২০২৫, ১৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

পাথর কোয়ারী থেকে নীলাদ্রি হাজারো গাছ

তাহিরপুর (সুনামগঞ্জ)প্রতিনিধি
  ২৬ মে ২০২৫, ১৯:৪১
পাথর কোয়ারী থেকে নীলাদ্রি হাজারো গাছ
ছবি : যায়যায়দিন

পাথর কোয়ারী থেকে নীলাদ্রি,মুগ্ধতা ছড়াবে জ্যাকারান্ডা, সোনালু, পলাশ, কৃষ্ণচুড়া,শিমুল। হাজারো গাছে গাছে লাল,নীল,হলুদ রঙের দেশী বিদেশী বাহারি ফুলে রঙিন হবে নীলাদ্রির চারপাশ। আগামী প্রজন্ম নতুন করে চিনবে হয়তো নাম পালেট হবে ফ্লাওয়ার্স লেইক ট্যাকেরঘাট।

জেলার সীমান্ত উপজেলা তাহিরপুর। উপজেলার অনেকগুলো দর্শনীয় স্থানের মধ্যে ট্যাকের ঘাট পাথর কোয়ারী(নীলাদ্রি লেইক) অন্যতম। ছাতক আসাম বাংলা সিমেন্ট ফ্যাক্টরী জন্য ১৯৬০ সালে ট্যাকেরঘাট ৩২৭ একর জমিতে জড়িপ চালিয়ে চুনাপাথরের সন্ধান পায় বিসিআইসি কর্তৃপক্ষ। ১৯৬৬ সালে খনিজ প্রকল্পটি চালু হয় এবং সেখানে থেকে কোয়ারী করে দীর্ঘ দিন চুনাপাথর উত্তোলন কার হয় ।

1

১৯৯৬ সালে প্রকল্পটি বন্ধ হয়ে যায়। ২০০০ সাল পরবর্তী সময়ে ট্যাকেরঘাট পাথর কোয়ারীর ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ পেলে ভ্রমন বিষয়ক বিভিন্ন পেইজে ধীরে ধীরে নাম পাল্টে ট্যাকেরঘাট পাথর কোয়ারী থেকে কখনো বাংলার কাশ্মীর,কখনো নীলাদ্রি নামে পরিচিতি পায়।

বছরে বারো মাস এ লেইককে ঘিরে দর্শনার্তীদের ভীড় জমে। প্রতিদিন হাজার হাজার দর্শনার্থী ট্যাকেরঘাট পাথর কোয়ারী(নীলাদ্রি) লেইকের নীল জলরাশি আর মেঘালয় পাহাড়ের সৌর্ন্দয্য উপভোগ করেন। প্রকৃতির এ সৌর্ন্দকে ঘিরেই এ লেইকের নান্দনকিতা আরো একটু বাড়িয়ে তুলতে তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার আবুল হাসেম সহশ্রাধিক বৃক্ষ জাতীয় দেশী বিদেশী ফুল গাছ রোপন করেন লেইকের চারপাশ জুড়ে। ভবিষ্যতে এ গাছ গুলোর বাহারি নানা রঙের ফুল হয়তো ট্যাকেরঘাট পাথর কোয়ারী কিংবা নীলাদ্রি লেইককে অন্য কোন নামে চেনাবে নতুন করে নতুন রূপে হাজারো গাছের শাখায় লাল,নীল,হলুদ ফুলে পাখির কলাকলি মুখর ছায়া সুশীতলন মেঘালয় পাদদেশে।

সরজমিন ট্যাকেরঘাট পাথর কোয়ারী এলাকা(নীলাদ্রি ) লেইকে গিয়ে দেখা যায় সারিবদ্ধ ভাবে লেইকের পাশ জুড়ে লাগানো হয়েছে পলাশ, জ্যাকারান্ডা, সোলালু, কাঞ্চন, রুদ্রপলাশ, চন্দ্রপ্রভা,কৃষ্ণচুড়া,কাটগোলাপ, শিমুল সহ নানা জাতের গাছ। গাছ গুলোর পরিচর্যায় ব্যাস্ত রয়েছেন ট্যাকেরঘাট রেস্ট হাউজের কেয়ার টেকার মনির হোসেন। সে সময কথা হয় মনির হোসেন এর সাথে। তিনি জানান, গাছ গুলো অনেক স্থান থেকে সংগ্রহ করে এনে লাগানো হয়েছে। গাছ বড় না হওয়া পর্যন্ত একটু দেখে শুনে রাখেতে হবে। যাহাতে গাছ গুলো নষ্ট না হয়।

ভ্রমন বিষয়ক পেইজ ট্রাভেলার্স অফ বাংলাদেশ। এ পেইজের কর্নধার ট্যাভেলার তমাল আহমেদ টিপু। তার গ্রামের বাড়ি ব্রাহ্মন বাড়িয়া । তিনি জানান,প্রকৃতির বড় একটা অংশ হলো গাছ। গাছ ব্যাতীত প্রকৃতি পরিপূর্ন হয় না। ট্যাকেরঘাট পাথর কোয়ারী বা নীলাদ্রী লেইক এলাকায় গাছের সংখ্যা একেবারেই কম। পর্যটকরা রোদে ঘুরে ঘুরেই তার মুগ্ধতা উপলব্ধি করেন। গাছগুলো বড় হলে ছায়া সুনিবিড় একটা পরিবেশ হবে সেই সাথে লেইকের পরিবেশটা আরো সুন্দর হবে।

তাহিরপুর উপজেলা পরিষদ সাবেক চেয়ারম্যান কামরুজ্জামন কামরুল বলেন,২০১৭ সালে টাঙ্গুয়া হাওরে জোছনা উৎসবের মধ্য দিয়ে তাহিরপুর কে নতুন করে দেশের মানুষ চিনেছে। তেমনি ট্যাকেরঘাট লেইকে চারপশে লাগানো হাজারো বৃক্ষ জাতীয় ফুল গাছ বড় হলে সে ফুলের সৌন্দর্য নতুন করে আবার তাহিরপুরকে চেনাবে। আগামী প্রজন্ম নতুন করে চিনবে।

তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার আবুল হাসেম বলেন,প্রকৃতিগত ভাবে নীলাদ্রি লেইকটা খুব সুন্দর। এ সৌন্দর্য কে আরও একটু প্রাণবন্থ রূপ দিতে দেশী বিদেশী কিছু বৃক্ষ জাতীয় ফুল গাছ লাগানো হয়েছে। পর্যটকরা লেইকের পাশাপাশি একদিন হাজারো গাছে বাহারি ফুলের উৎসবও উপলব্দি করবে ।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে