চট্টগ্রামের সাতকানিয়া থানাধীন কেরানিহাট-বান্দরবান মহাসড়কের শেরে বাংলা উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে বান্দরবান সড়ক ও জনপদ বিভাগ কর্তৃক নির্মিত ড্রেনের পানিতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়ে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে বাজালিয়া ইউনিয়নের দক্ষিণ পাড়ার অর্ধশতাধিক পরিবার।
স্থানীয়দের অভিযোগ, বান্দরবান সড়ক ও জনপদ বিভাগ অপরিকল্পিতভাবে মহাসড়কের দক্ষিণ পাশে একটি ড্রেন নির্মাণ করেন। পরবর্তীতে সেটি মহাসড়কের পার্শ্ববর্তী একটি পুকুরের সাথে সংযোগ করে দেয়। সামান্য বৃষ্টিপাত হলে বাজালিয়া বাস স্টেশন ও তার আশপাশের এলাকার পানি এ ড্রেন হয়ে প্রথমে পুকুরে গিয়ে পড়ে। পরে পুকুরটি ড্রেনের পানিতে পরিপূর্ণ হয়ে অতিরিক্ত পানি লোকালয়ে প্রবেশ করে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। ফলে অল্প বৃষ্টিতেই অর্ধশতাধিক পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েন।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বাজালিয়া ইউনিয়নের দক্ষিণ পাড়াটিতে প্রায় শতাধিক পরিবার বসবাস করেন। তারমধ্যে কিছু পরিবারের বসতঘর উঁচু জমিতে আর বেশিরভাগ পরিবারের বসতঘর নিচুতে জমিতে অবস্থিত। সোমবার ও মঙ্গলবারের টানা বর্ষণের ফলে ড্রেনের পানিতে পুরো পাড়ায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়ে নিচু জমিতে অবস্থিত বসতঘরগুলোর বাসিন্দারা পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। বিশেষ করে ওই পাড়ার স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসাগামী শিক্ষার্থীরা চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন।
বাজালিয়া দক্ষিণ পাড়ার সিএনজিচালিত অটোরিকশা চালক আবদুল আলম বলেন, আগে শুধুমাত্র একটি ড্রেন ছিল মহাসড়কের উত্তর পাশে। কয়েক বছর আগে কেরানিহাট-বান্দরবান মহাসড়কটি প্রশস্ত করা হয়। এরপর বান্দরবান সড়ক ও জনপদ বিভাগ মহাসড়কের দক্ষিণ পাশে আরেকটি ড্রেন নির্মাণ করেন। কিন্তু ড্রেনটি অপরিকল্পিতভাবে মহাসড়কের পার্শ্ববর্তী একটি পুকুরের সাথে সংযোগ করে দেওয়া হয়। ড্রেনটি যদি আর মাত্র ২০০ ফুট সামনে এগিয়ে নেওয়া হতো তাহলে এ ড্রেন দিয়ে প্রবাহিত পানি সরাসরি কাটাখালী খালে গিয়ে মিশতো। তখন আর আমাদের পাড়ায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হতো না। এখন সামান্য বৃষ্টিপাত হলেই আমরা পানিবন্দি হয়ে যায়। এতে আমাদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
একই এলাকার বাসিন্দা মো. ওচমান বলেন, অপরিকল্পিতভাবে ড্রেনটির সংযোগ পুকুরে দেওয়ায় আমাদের পাড়ায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হচ্ছে। একবার বৃষ্টি হলে আমাদেরকে টানা কয়েকদিন পানিবন্দি থাকতে হয়। এ ছাড়াও ওই ড্রেন দিয়ে বৃষ্টির পানির সাথে হাট-বাজারের বর্জ্য এসে দুর্গন্ধের সৃষ্টি হচ্ছে। এমতাবস্থায় আমরা চরম দুর্ভোগের মধ্য দিয়ে দিন পার করছি। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ যদি এ সমস্যার সমাধান না করে তাহলে আমরা মাটি দিয়ে ওই ড্রেনটি ভরাট করে দিতে বাধ্য হব।
সাতকানিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মিল্টন বিশ্বাস বলেন, সামান্য বৃষ্টিতেই ওই এলাকার ৫০টির মত পরিবার পানিবন্দি হয়ে যাচ্ছে। এতে ওই এলাকায় বসবাসকারী বাসিন্দাদের স্বাভাবিক জীবনযাপন ব্যাহত হচ্ছে। ড্রেনটির দৈর্ঘ্য কিছুটা বৃদ্ধি করে খালের সাথে সংযোগ করে দিলে এ সমস্যা আর থাকবে না। বান্দরবান সড়ক ও জনপদ বিভাগের সাথে কথা বলে ড্রেনটির দৈর্ঘ্য বৃদ্ধির উদ্যোগ নেয়া হবে।
বান্দরবান সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সাখাওয়াত হোসেন বলেন, এ বিষয়ে আমরা অবগত ছিলাম না। এখন যেহেতু বিষয়টি জানতে পেরেছি সেহেতু ড্রেনটি পরিদর্শনের জন্য সহকারী প্রকৌশলীকে ওই জায়গায় পাঠানো হবে। সমস্যাটি সরেজমিনে দেখে ওই এলাকার জলাবদ্ধতা নিরসনে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।