আসন্ন ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে টাঙ্গাইলে প্রস্তুত ২ লাখ ৩৭ হাজার কোরবানির পশু। শেষ সময়ে এখানকার খামারগুলোতে গরু মোটা তাজাকরণে ব্যস্ত সময় পার করছেন খামারিরা। খামারে খামারে চলছে কোরবানির পশুর বাড়তি যত্ন। ভারতীয় গরু না আসলে ও বাজারমূল্য ঠিক থাকলে এবারও লাভের মাধ্যমে স্বপ্নপূরণের আশা দেখছেন খামারিরা। তবে গো-খাদ্যের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় শঙ্কায়ও রয়েছেন অনেক খামারি।
জানা যায়, টাঙ্গাইলে ছোট-বড় মিলিয়ে ২৬ হাজার ২০৩ খামার রয়েছে। এসব খামারে দেশীয় পদ্ধতিতে চলছে পশু মোটাতাজাকরণ প্রক্রিয়া। খাওয়ানো হচ্ছে খড়, ঘাস, গমের ভূষি, ভাত, চিটাগুড়, খৈলসহ দানাদার খাবার। খামারগুলোতে পশু হৃষ্টপুষ্ট করার কাজ প্রায় শেষ। এখন শুধু বিক্রির পালা। দেশীয় গরুর পাশাপাশি শাহীওয়াল, ব্রাহমা, হরিয়ানাসহ নানা বিদেশী গরু রয়েছে খামারে।
এদিকে খামারের বাইরেও চরাঞ্চলের প্রতিটি বাড়িতে লালন-পালন করা হচ্ছে দেশীয় ষাড় গরু। গ্রামের নারীরা স্বাবলম্বী হতে এসব গরু লালন-পালন করছেন। ভালো দাম পাওয়ার আশা তাদের।
জেলা প্রাণী সম্পদ বিভাগের তথ্যমতে, টাঙ্গাইলের খামারগুলোতে কোরবানিযোগ্য পশু রয়েছে ২ লাখ ৩৬ হাজার ৯৯০টি। এর মধ্যে ১ লাখ ৫ হাজার ৬৯টি গরু, ১ লাখ ২২ হাজার ৩৮২টি ছাগল, ৯ হাজার ১১৯টি ভেড়া ও ৪২০টি মহিষ রয়েছে। জেলার ১২টি উপজেলায় এবার কোরবানি পশুর চাহিদা ২ লাখ ১১ হাজার ৯৭৪টি। চাহিদা মিটিয়ে উদ্বৃত্ব থাকবে ২৫ হাজার ১৬টি পশু। যা দেশের বিভিন্ন জায়গায় সরবরাহ করা হবে।
ঘাটাইল উপজেলার খায়ের পাড়া গ্রামের খামারি সুমন মিয়া জানান, তার খামারে ৪৭ ষাড় ও বলদ রয়েছে। খামার থেকেই গরু বিক্রি হয়ে যাচ্ছে। সীমিত লাভেই তিনি গরু বিক্রি করছেন। দামও ভালো পাওয়া যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
ভূঞাপুরের আরেক খামারি রাফি চকদার জানান, কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে তার খামারে ১০০টি দেশী-বিদেশী ষাড় ও বলদ গরু মোটাতাজা করা হয়েছে। খামার থেকে গরু বিক্রি হওয়ার পর যা থাকবে তা হাটে বিক্রির চিন্তা ভাবনা করছেন তিনি। বাজারমূল্য ঠিক থাকলে আর ভারতীয় গরু না আসলে লাভের আশা করছেন।
গাজীপুর থেকে খামারে গরু কিনতে আসা আজহারুল ইসলাম জানান, হাট ঘেকে কিনতে ঝামেলা মনে হওয়ায় খামার থেকেই গরু নেন প্রতি বছর। এবারও তাই করবেন তিনি। দাম নিয়ে তেমন কোন অভিযোগ নেই তার।
জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ শহীদুল আলম জানান, টাঙ্গাইলে ২৬ হাজারেরও বেশি খামারে কোরবানির জন্য পশু লালন পালন করা হচ্ছে । খামারিদের সবসময় পরামর্শ ও সহযোগিতা করা হচ্ছে । এবার খামারিরা লাভবান হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।