শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

বাড়ির ছাদে ফুল বাগান

ইমরান হোসাইন
  ০৬ জানুয়ারি ২০১৯, ০০:০০

আজকাল অনেকেই বাড়ির ছাদে বিভিন্ন ধরনের ফুল বাগান করে থাকেন। ফুল শুধুমাত্র তার রূপ দিয়ে মুগ্ধ করে না, সেই সঙ্গে আমাদের দেয় অনাবিল মানসিক প্রশান্তি। ফুল ভালোবাসে না এমন মানুষ হয়তো পাওয়া যাবে না কোথাও। যাদের মনের কোণে সুপ্ত বাসনা আছে নিজে ফুলের বাগান করার, তারা আজই বাসার ছাদেই তৈরি করে নিতে পারেন নিজের ছোট্ট এক টুকরো বাগান। নিজের অবসর সময়টুকু আনন্দেই কাটিয়ে দিতে পারবেন আপনার নিজের বাগানে।

ছাদে ফুলের বাগান করতে হলে দরকার হয় বিশেষ পরিচযার্র। ঠিকমতো ফুল গাছের যতœ নিলে আপনার ছোট্ট বাগানটিও ভরে উঠবে নানা ফুলের সমারোহে। তাই আমাদের জানতে হবে ছাদে ফুলের বাগান করার পদ্ধতি, রীতিনীতি এবং আগে ও পরের যতেœর বিষয়গুলো। ফুলগাছগুলো রাখার জন্য একটি রৌদ্র উজ্জ্বল জায়গা নিবার্চন করতে হবে। সেটা ছাদ কিংবা আপনার প্রিয় ব্যালকনিও হতে পারে। একটু খেয়াল রাখতে হবে সেটা যেন অতিরিক্ত রোদের স্থান না হয় এবং সকাল বেলার রোদটা যেন থাকে, কারণ সেটা ফুলগাছের জন্য খুব জরুরি।

ফুলগাছের জন্য বেশি বড় টবের প্রয়োজন হয় না। ফুলগাছের জন্য ৮-১৬ ইঞ্চি বা মাঝারি আকারের টব নিলেই চলবে। ছোট না বড় টব তা নিভর্র করবে ফুলগাছের আকার আকৃতির ওপর। সাধারণত মৌসুমি ফুলগাছের জন্য ১০-১২ ইঞ্চি টবই যথেষ্ট। কিন্তু যত বড় জায়গা হবে ততই গাছ প্রসারিত হতে পারবে এবং টবে অব্যশই পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা থাকতে হবে। সবচেয়ে উত্তম মাটি হলো দোঅঁাশ মাটি। দোঅঁাশ মাটিতেই ফুল বা ফলের গাছ সব চেয়ে ভালো হয়। গাছ লাগানোর আগে মাটিতে কম্পোস্ট সার বা পচা গোবর সার দিতে হবে। বিশেষ করে টবের ২-৩ সে. মি. উপরের দিকে। মাটি অবশ্যই ঝুরঝুরে করে নিতে হবে। সবচেয়ে ভালো হয় যদি নাসাির্র থেকে মাটি কেনা যায়।

গাছ লাগানোর সবচেয়ে গুরুত্বপূণর্ বিষয় হলো চারাগাছ বাছাই করা। আপনি নাসাির্র কিংবা ফুলগাছ বিক্রেতার কাছ থেকে সংগ্রহ করতে পারেন। আপনি যার কাছ থেকেই গাছ সংগ্রহ করুন না কেন অবশ্যই খেয়াল করুন চারা গাছটি সুস্থ সবল কিনা। আর যদি আপনার কাছে গত বছরের বীজ থাকে তাহলে বীজ বুনেও চারা সংগ্রহ করতে পারেন। তাহলে অবশ্যই মৌসুম শুরু হওয়ার ২ মাস আগে তা বুনতে হবে। তবে কিছু কিছু গাছের বীজ না বুনলেও চলে। যেমন চন্দ্রমল্লিকা গাছের শিকড় থেকে কাÐ বের হয়ে চারা তৈরি হয়। আবার বৃষ্টির সময় গঁাদা ফুলের ডাল কেটে মাটিতে পুঁতলেও চারা তৈরি হয়।

গাছে নিয়মিত প্রতিদিন পানি দিতে হবে। যারা দুবেলা পানি দিতে চান, খেয়াল রাখবেন গাছের গোড়ায় যেন পানি না জমে যায়। আর সপ্তাহে একদিন গাছের পাতায় পানি স্প্রে করতে হবে। গাছের গোড়ায় এমনভাবে পানি দিতে হবে যেন গোড়ার মাটি না ধুয়ে যায়। তাই সম্ভব হলে ঝাঝরির মাধ্যমে পানি দিন। মাটি যেন সব সময় ভেজা থাকে। যদি গাছ হেলে পড়ে তাহলে অবশ্যই গাছের সঙ্গে শক্ত কোনো ডাল বা কাঠি বেঁধে দেবেন।

গাছে সার দিতে হবে খুব সাবধানেÑ কারণ একটু এদিক ওদিক হলেই গাছ মারা যেতে পারে। খেয়াল রাখতে হবে আমরা সার দিচ্ছি একটি টবের ভেতর আর জায়গাটা খুব ছোট। তাই একটি টবের জন্য এক মুঠো সার যথেষ্ট। গাছের গোড়ায় কখনো সার দেয়া যাবে না; সার দিতে হবে গাছের গোড়া থেকে ৪-৫ সে. মি. দূরে। আর সার হতে হবে মিশ্র সার বা তার চেয়ে ভালো হয় যদি গোবর সার দেয়া যায়। কিন্তু গোবর সার শুকিয়ে গুঁড়ো করে মাটির সঙ্গে মিলিয়ে দিতে হবে। কেউ যদি চান তাহলে সবজির ছোলা পচিয়ে জৈব সার তৈরি করে নিতে পারেন সেটাও গাছের জন্য খুব ভালো। গাছ পরিপক্ক হলে বা ফুল আসার ২-৩ সপ্তাহ আগে সার দিতে হবে।

আপনাকে আগে ঠিক করতে হবে যে, আপনি ফুল বড় চান নাকি অনেক ফুল চান। যদি আপনি বেশি ফুল চান তাহলে গাছ যখন ২০-২৫ সে. মি. হবে তখন থেকে গাছের আগা অল্প অল্প করে ছঁাটা দেয়া শুরু করতে হবে। আর যদি বড় ফুল চান তাহলে গাছে কুঁড়ি আসার পর কিছু কুঁড়ি কেটে ফেলতে হবে। গাছে যদি কোনো পোকা মাকড়ের উপদ্রব হয় তাহলে আক্রান্ত পাতা, ফুল বা ডাল কেটে ফেলতে হবে। আর সম্পূণর্ গাছে সাবান পানি স্প্রে করতে হবে। তাহলে অনেকটা পোকা মাকড় থেকে রেহাই পাওয়া যাবে। তো আজ থেকেই শুরু করে ফেলুন আপনার বাড়ি ছাদে ছোট্ট একটি ফুল বাগান।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<30680 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1