শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

কথাসাহিত্যে বঙ্গবন্ধু পরিপ্রেক্ষিত একাত্তরের বিজয়

শাহমুব জুয়েল
  ১৪ ডিসেম্বর ২০১৮, ০০:০০

বাংলাসাহিত্যে স্বাধীনতা ও বিজয়ের অনুষঙ্গ সৃষ্টিশীলতার সূত্রধরেই লিপিবদ্ধ হয়েছে। বেদনার বাদনে যুক্ত হয়েছে বঙ্গবন্ধুর হত্যা, যা শোকগঁাথা বিবরণ। সংযুক্ত গল্পের নায়করা মহানায়কের সাহস ও মানস নিয়ে উৎসুক। এ কারণে জোরজবরদস্তি বিয়োগ মেনে নিতে অপারগ। তারা মনে করে বিজয়ের অচেনা পথের আলোকপুরুষ তিনি তাই কবিতার খাতার পাশে গল্পের শিরোনাম অঁাকা বাধ্যতামূলক। একেকটি শিরোনাম জাগায় কখনো স্তম্ভিত করে। আনন্দ ও কষ্টে মোচড় খেয়ে উঠে সারা শরীর। রক্তধারা দুটিÑএকাত্তরের রক্ত ও পঁচাত্তরের রক্ত। প্রথম রক্তস্রোতকে থামাতে যিনি সম্মুখীন দ্বিতীয় রক্তটি তার শরীরের। তার শরীরে তো বিজয়েরই রক্ত প্রবহমান। তাহলে কেমন করে ঝরে তার রক্ত। কে বা কাদের অঙুলি নাচুনে ঝরে নাবিকের রক্ত। অশ্রæপ্লাবিত করে দিব্যি আরামে ঘুমায় রক্তখেকো। বঙ্গকন্যার নিরলস শ্রমে অদম্য সাহসিকতায় ইতিহাস নেচে উঠে তাদের গলার সম্মুখে দায়মুক্তির নিয়মেই কলঙ্কমুক্ত হয় দেশ। গল্প ভাজের কথাগুলো এমনÑ মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতার ডাক, বিজয়, জাদুকরের আগমন ও মৃত্যু, বঙ্গবন্ধুর নৌকা, ইতিহাসের কণ্ঠস্বর, তীব্র বেদনা ও আক্ষেপ সংকট সুবিধাবাদের নড়ানড়ি, ভাষণের স্রোতা ও মহাসাগরের কল্লোল সব কিছুকে ছাপিয়ে বিজয়ের মাহাত্ম দিন পার হচ্ছে। ক্ষণে ক্ষণে লাল সবুজের মুক্ত বেণীতে ধেয়ে এসে শুধায় তার নাম ও স্মৃতিনিহিত বাতাস। গল্পে তিনি ও বিজয়, ঐশ্বরিক আলোর মতো দীপ্যমান।

গল্পের স্কেস তৈরি হবে যুগ পরম্পরা গাণিতিক সূত্র নিবন্ধিত হয়ে বিজয় হরন বাজিয়ে তিনি থাকবেন হৃদয় গ্রন্থিতে সরব ও সুমহান। সে নিরিখে গল্পের ভূমিকায় কেমন ছিলেন তিনি। গল্পভাষ্যকার কেমন করে তাকে ভাবেন। কয়েকটি গল্পের ভাষ্য পাঠকের সামনে উপস্থাপন করছি। আবুল ফজলের- ইতিহাসের কণ্ঠস্বর, শওকত ওসমানেরÑদুই সঙ্গী, আবু ইসহাকেরÑমৃত্যু সংবাদ, সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়েরÑ২৫ মাচর্ এবং হিন্দু মুসলমানের গল্প, সৈয়দ শামসুল হকেরÑনেয়ামতকে নিয়ে গল্প, আনোয়ারা সৈয়দ হকেরÑসংকট, সেলিনা হোসেনেরÑআগস্টের এক রাত, হুমায়ুন আজাদেরÑজাদুকরের মৃত্যু, অসীম সাহারÑভ্রƒণ, জাকির তালুকদারেরÑপিতৃপরিচয়, মনি হায়দারেরÑশেখ মুজিবের রক্ত প্রভৃতি।

আবুল ফজলের “ইতিহাসের কণ্ঠস্বর’ প্রধান চরিত্র শেখ আহমদ আলী ও ভাইপো। দুটো চরিত্রেই প্রবাহমানতা বিদ্যমান। ইতিহাসের বরেণ্য ব্যক্তিত্ব বঙ্গবন্ধু। যিনি জেল জুলুম অত্যাচার অনাচারে মাথা নত না করে পাকিস্তানী শাসকগোষ্ঠীর কাছে ছিলেন নিভীর্ক এবং বাঙালির আস্থাভাজন। তাই দেশের মানুষ তরুণ সমাজ সহপাঠী তার নেতৃত্ব ও বজ্রকণ্ঠকে ধারণ করে ঝঁাপিয়ে পড়েছে। বাংলার আকাশে উদিত হলো নতুন আকাশ বুঝে নিলো এটি স্বাধীন সাবের্ভৗম দেশ বাংলাদেশ। কিন্তু বিশ্বাস হন্তারকরা মহান নেতাকে পনেরই আগস্টে স্বপরিবারে হত্যা করে ইতিহাসে যোগ করলো কালোরাত। গল্পে শেখ আহমদ আলীর ভাইপো বিশ্বখ্যাত সারা দুনিয়ার মানুষ তাকে এক নামে চিনে জোয়ান ছেলে সকল পেশাজীবী মানুষ তঁাকে দেখলে স্যালুট করে রাজনীতির মাঠে তার অবস্থান স্পষ্ট ও নিভীর্ক। দুটো রাত যে রাতে স্বাধীন বাংলার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার জন্য সহকমীের্দর সাথে আলাপচারিতায় মেতেছিলো। রাতদিন আলাপ আলোচনা লেগেই ছিলো। পাকসেনারা বাড়ি ঘেরাও করেছিলো নিঘার্ত মৃত্যু জেনেও শ্লথহীনভাবে দুই জল্লাদের মাঝে বসে লাইটার টিপে পাইপ টানছিলো দেশি বিদেশি পত্রপত্রিকায় শিরোনাম হলো সে খবর পনের আগস্টে নেমে এসে পরিচিতের গুলিবিদ্ধতা বুড়োকে একই দিকে ধাবিত করে। গুলিতে পুরো বাড়ি মুহুমুর্হু। সাদা ধবধবে পাঞ্জাবি পরিহিত অসংখ্য সংগ্রামের নায়ক নিঘার্ত মৃত্যু জেনেও সামনে এগিয়ে যান। এ তঁার বিশ্বাস। নিভীর্কতাই তাকে টেনে নেয় মৃত্যুর দিকে। যারা এসেছে তাদের প্রত্যেককেই তিনি চিনেন। তারা এ যুগের সীমার। তিনি আলাপ করতে চেয়েছিলেন তারা দূরে থেকে উন্মাদের মতো চারপাশে গুলি ছুঁড়তে শুরু করে। গুলিতে বুক ঝাঁঝরা হয়ে গেছে কিন্তু সিংহপুরুষের মতো বুকে বয়ে নিয়েছেন গুলির বোঝা, পিঠ অক্ষত ছিলো। কেননা এ ছিলো স্বাধীন বাংলাদেশের প্রাচীর। সেদিনও সে ভোর রাত্রে তেমনি শান্ত নিবির্কারভাবে পাইপটা হাতে নিয়ে সিঁড়ি বেয়ে নেমে এলো আক্রমণকারীদের সঙ্গে আলাপ করতে, তারা কেউই তো ওর অচেনা নয়। এ যুগের সীমারেরা তখনই গুলি ছঁুড়লো ওর বুক লক্ষ করে, গুলির পর গুলিতে বুক ঝাঁঝরা হয়ে গেল, কিন্তু সিংহের বাচ্চা পিঠ ফেরায়নি। তাই বুক হয়েছিল ক্ষত বিক্ষত, কিন্তু পিঠ ছিল অক্ষত। সে পিঠ স্বাধীন বাংলার প্রাচীর।” ক্ষুধিত পাষাণ ও ইতিহাসের কণ্ঠস্বর দুটো গল্পের শেখ আহমদ আলী ও মেহের আলি প্রতিবিম্ব। বাড়িজুড়ে নিস্তব্ধতা, সিঁড়িপথ, অশান্ত আক্ষেপ, তীব্র বেদনার স্বর, হায়দ্রাবাদের অখ্যাত বরিচের পরিত্যক্ত প্রাসাদ বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার ধানমÐি দূরত্বের সীমাকে টপকে দুটো বাড়ির দৃশ্যরূপ কিভাবে একীভ‚ত হলো। তা পাঠককে নতুনভাবে ভাবতে শেখায়। ক্ষুধিত পাষাণ গল্পে দেখিÑ“এক সময় ওই প্রাসাদে অনেক অতৃপ্ত বাসনা, অনেক উন্মত্ত সম্ভোগের শিখা আলোড়িত হইতো- সেই সকল চিত্তদাহে, সেই সকল নিষ্ফল কামনার অভিশাপে এই প্রাসাদের প্রত্যেক প্রস্তর খÐ ক্ষুধাতর্ তৃষ্ণাতর্ হইয়া আছে, সজীব মানুষ পাইলে তাকে লালায়িত পিশাচীর মতো খাইয়া ফেলিতে চায় যাহারা ত্রিরাত্রি ওই প্রাসাদে বাস করিয়াছে, তাহাদের মধ্যে মেহের আলি পাগল হইয়া বাহির হইয়া আসিয়াছে”। বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে ঘাতকরা জানাজা ও দাফনের সময় সাধারণ জনগণকে বিচ্ছিন্ন করে রাখে, তাতে অংশগ্রহণ করতে দেয়নি। বলছে তফাত যাও, তফাত যাও। সেদিন অস্তমিত হলো বাংলাদেশের সূযর্। শাল গাছের মতো দীঘের্দহী লাশ সেপাইদের খেঁাড়া গতের্ চাপা দিয়ে উড়াল দিলো সেই আকাশে। অথচ সেই আকাশের স্বপ্নদ্রষ্টা তিনি স্তব্ধ বাংলাদেশের জল শুকিয়ে গেলো রাত ঘনিয়ে এলো। ঘরময় লাশের স্ত‚প চেনাজানা মুখগুলো অপলকদৃষ্টিতে বৃদ্ধার দিকে চেয়ে আছে। বারবার ভেসে আসছে একই আওয়াজÑতফাত যাও, তফাত যাও সব ঝুট হায়, সব ঝুট হায়। ঝুট হয় ভোররাত্রির কাহিনি, ঘটনাপ্রবাহ ইতিহাসে কালো অধ্যায়।

শওকত ওসমানের ‘দুই সঙ্গী’ বাস্তবতাকে বিযুক্ত করেই গল্পের গতিবেগ। মূলত তার কথাশিল্পে মুক্তিযুদ্ধের বিষয় গতানুগতিকভাবে এসেছে তার লক্ষ্যই যেন মুক্তিযুদ্ধ । এ গল্পে সে প্রভাবটা বাস্তবে প্রতিফলিত। আলতাফ হোসেন ও তার সঙ্গী, নৌকা, ইছামতি, মেঘনা, আড়িয়াল খাঁ নদী, মাঝে ফরিদপুর জেলা, ডাকাতের তাড়া, ফারাজী আন্দোলনে নেতা হাজী দুদু মিয়ার উপকথা, শ্বেত নীলকরদের বিরুদ্ধে, অত্যাচারী জমিদারের বিরুদ্ধে ইতিহাস ঐতিহ্যের বয়ান। কাজী আলতাফ হোসেন গোপালগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা, যার দুই মেয়ে এক ছেলে। সে চিত্রকে তুলে ধরা হয় আলতাফ হোসেন চরিত্রে। মামলা, বক্তৃতা, পুলিশের হুলিয়ার ভয়ে ছুটে চলছে পিছনে ধাওয়া করছে অন্য নৌকা। মুক্তিযুদ্ধকালে বষার্র আবহ ছিল পারে পারে। মুক্তিবাহিনী নৌকাযোগে বেরিয়ে খতম করেছিলো পাক সেনাদের এভাবে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার চিত্র এসেছে মুক্তিযুদ্ধের মৌলিকতায়। নৌকা আওয়ামী লীগের নিবার্চনী প্রতীক। নাবিক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। বাংলার জলে ও মানুষের মুখে একটিই নাম বঙ্গবন্ধু ও নৌকা। নৌকার আকার আকৃতি অঞ্চলভেদে ভিন্ন রকমÑকোসা, ডিঙ্গি, সাম্পান প্রভৃতি। তবুও নৌকা নৌকাই দক্ষ চালকের মাধ্যমে শত জলোচ্ছ¡াসে গতি প্রকৃতি খুঁজে পায়। সাধারণ মানুষের ভরসা ও আস্থার প্রতীক হিসেবে পরিগণিত হয়। নৌকা সমকালের বাহন বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন জনমনে স্বস্তি ও উন্নয়নের চালিকাশক্তি। সমস্যা ও সঙ্কটকে কাটিয়ে এগিয়ে চলছে ধারাবাহিকতায়। পেছন থেকে থামিয়ে দেয়ার নানামুখী ষড়যন্ত্রের পাশাপাশি টেনে ধরতে উন্মুখ।এ গল্পের কথামালায় জলদস্যু যারা বহু আগে থেকে আলতাফ হোসেনের নৌকাকে ধাওয়া করছে। জলদস্যু মাঝিকে নৌকা সম্পকের্ জিজ্ঞেস করে কিন্তু শেখ মুজিবের নাও কথাটি মাঝি ব্যক্ত করা মাত্র কেটে পড়ে। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বগুণে বাংলার আকাশ শকুনমুক্ত হয়ে নৌকার পালে জাগে লাল সবুজের পতাকা। জলদস্যু ফেরত যেন পাকসেনাদেরই ভয় পলায়ন। বণর্নার নতুনত্বে কথাশিল্পীর শিল্পভাষা অভিনব হয়ে পাঠকপ্রিয়তা পায়।

সুণীল গঙ্গোপাধ্যায়ের ‘২৫ মাচর্ এবং হিন্দু মুসলমানের গল্প’ বঙ্গবন্ধুর ধানমÐির বাড়িতে দলীয় নেতাকমীর্ ও জনতার যাতায়াতের বিবরণের আভাস স্পষ্টভাবে বোঝা যায়। বঙ্গবন্ধুর পোশাকের বণর্না, তাজউদ্দীনের চিন্তাভাবনা, সোনার বাংলাকে ছিনিয়ে আনার প্রত্যয়, ধমীর্য় ব্যবধান, জগন্নাথ, জহুরুল হক, সলিমুল্লাহ হলের ছাত্রদের উপর হামলাও যুদ্ধকালীন একটি অশান্ত পরিস্তিতির বণর্না নিখঁুতভাবে বণর্না করেছেন। শেখ মুজিবের বিশ্বাসশক্তি প্রবল ছিলÑতিনি মনে করতেন ইয়াহিয়া আইয়ুবের মতো নয়। নিশ্চয়ই ফলাফল মেনে আলোচনায় বসবে কিন্তু তা হলো না পাকিস্তানী সরকার সেনা পাঠাচ্ছে। নারী পুরুষের মিছিল এসে জড়ো হচ্ছে বঙ্গবন্ধুর বাড়ি কিছুতেই সামরিক শাসকগোষ্ঠী কাছে নতিস্বীকার করবে না।তিনি এ পরিস্থিতি দেখে অভিভূত। ছাত্রলীগ নেতা কামরুল আলম খসরুর শেখ মুজিবকে আন্ডার গ্রাউন্ডে চলে যেতে বলছে কারণ তার প্রতি তাঁদের গভীর ভালোবাসা বিদ্যমান নেতার ক্ষেত্রে যা প্রাপ্য থাকে। কিন্তু তিনি কী পলায়ন করবেন এবং তা করলেন না। বাংলার আলো বাতাসে মিশে থাকা বাঙালিকে প্রাণের চেয়েও বেশি ভালোবাসেন তিনি। বঙ্গবন্ধু যা ই করেন তার পরিবারকে রক্ষা করতে হবে কারণ পাক সেনাদের আক্রমণের প্রথম টাগের্ট হবে এ বাড়ি তাতে কেউ বঁাচবে না। এদেশে জিন্নাহর নামে রাস্তা, কবি ইকবালের নামে ছাত্রদের হল। এগুলো পরিবতর্ন করে হলের নাম রাখা হলো সাজের্ন্ট জহুরুল হক, রাস্তার নাম রাখা হলো সূযর্ সেন। এ দেশের মাটিতে বেড়ে ওঠা মানুষেরা শিক্ষা সংস্কৃতি খাদ্য ও সংস্থাপনের ক্ষেত্রে পিছিয়ে ছিলো পাশাপাশি নামকরণেও ভিন্নতা কোনো অবস্থাতেই এদেশের ছাত্রজনতা মেনে নিতে পারেনি। তাই তাদের মূল লক্ষ্য ছিল এসব নানামুখী নিবির্চার থেকে এদেশের মানুষকে রক্ষা করা। রাজাকারদের সহযোগিতায় ধরে নেয় অসংখ্য নারী পুরুষ, মুসলমান শনাক্তের জন্য লুঙ্গি পাজামা খুলেছে তাদের ধারা যারা তাদের বিপক্ষে সবাই হিন্দু স¤প্রদায়। বণর্না এরকমÑ“মুসলমান হ্যায় সাব, মুসলমান, হামাগোলোগকা সবহি খৎনা হ্যায়। সৈনিকটি ইঙ্গিত করলো পাজামা খুলে ফেলতে। কেউ বিন্দুমাত্র দ্বিধা করল না। সৈনিকটি ভালো করে তাকিয়ে দেখলোও না, মুখ ফিরিয়ে নিল। অস্ত্রটা নিচু করে সে বলল যাও, জলদি জলদি ভাগ চলো, আভি আভি কাপটেন সাব চলা আয়গা। তব তো তুমলোগকো ভি নেহি ছোড়ে গা। তারপর সে দুঃখিতভাবে মুখ কুঁচকে বলল, কেয়া হো রহা হ্যায় ই দেশ মে পাজামার দড়ি না বেঁধেই দৌড়োল ওরা তিনজন।” ধমীর্য় সমস্যা ও রাজনৈতিক সমস্যার আড়মুখে অধিকারের শুন্যতা ক্রমেই উদ্ভট হয়েছিলো বাংলার মাটি ও চিরচেনা আকাশে শিক্ষক ছাত্র নারী পুরুষ শিশু এবং জায়নামাজে বসে কোরআন পড়া অধ্যক্ষ মুনিরুজ্জামানের মতো অনেকের প্রাণটা খিঁচে নেয় পাকসেনা। প্রতিক্ষার পর লজ্জা সরম খুইয়ে হার না মানা শেখ মুজিবের অটল সিদ্ধান্তে পাওয়া গেলো একটা সুনসান নিবিড় দয়ামাখা দেশ আজকের বাংলাদেশ।

আবু ইসহাকেরÑ‘মৃত্যু সংবাদ’ গল্পটি দুটি চরিত্রের মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধ স্বাধীনতা, শিক্ষাগ্রহণ, ইসলামাবাদ করাচি ও পূবর্বাংলা চাকুরির দায়বদ্ধতা, স্বাধীনতা ও পরবতীর্ বাংলাদেশে রাষ্ট্রীয় শাসন বঙ্গবন্ধুকে হত্যা, পরবতীের্ত দেশি বিদেশী পত্র প্রত্রিকায় খবরাখবর বিশ্বজোড়ে তোলপাড় বাংলাদেশের মানুষের নিস্তব্ধতা, সুবিধাভোগীদের সুবিধাগ্রহণ, নামের স্বগতোক্তি এবং বঙ্গবন্ধুর সময়ের মন্ত্রী ও সুবিধাভোগীদের পরেও সুবিধাগ্রহণ, আফতাব আহমদ ও তাসাদ্দুক হাসান চরিত্রের বয়ানে বিষয়গুলো মনে হচ্ছে গাণিতিক সূত্রের নিবন্ধন। দুই বন্ধু যুদ্ধকালীন মানুষের মতোই নিরুদ্দেশ স্বাধীনতা লাভের পর সাক্ষাতের চিন্তায় উন্মুখ। তাদের পত্রালাপে দেশপ্রেমের বয়ান এ রকমÑ“বঙ্গবন্ধুর ডাকে উদ্বুদ্ব হয়ে আমি মুক্তিযুদ্ধে যোগদানের জন্য আগামীকাল রওনা হচ্ছি। আমার এ চিঠি তোর কাছে পেঁৗছাবার আগেই আমি কলকাতা পেঁৗছে যাব। শাসক হানাদারদের কবল থেকে জন্মভূমিকে মাতৃভূমিকে মুক্ত করতে হবে। বেঁচে থাকলে আবার দেখা হবে জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু।” মুক্তিযুদ্ধের সময় বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে দেশের আপামর জনগণ স্বাধীনতা আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলো। জাতির জনকের স্বপ্ন ছিলো বাংলার মানুষের অধিকার ফিরিয়ে দেয়া এবং আত্মপরিচয়ের পথ সুগম করা। সে নিরিখে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বজ্রকণ্ঠের সমস্বরে দাঁড়ালেন স্বপ্নপুরুষ। বাংলার আলো বাতাসে তার বজ্রকণ্ঠ, মুখে মুখে মুক্তির ¯েøাগান। দেশ স্বাধীনতা লাভ করলে যারা মন্ত্রিত্ব লাভ করে। বিদেশি মনির্ স্টারসহ পত্র পত্রিকায় এখবর বাতাসের মতো ঘুরতে থাকে। নিস্তব্ধ থাকে বাংলাদেশ। আফতাবের মতো অনেকেই যারা বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বের কারণে স্বাধীন দেশের ক‚টনীতিক, রাষ্ট্রদূত উপদেষ্টা হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠা করে কিন্তু তার নিহতের খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া প্রকাশ করতে পারেননি। বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে তাসাদ্দুকের মতো অনেকেই ষড়যন্ত্রকারী সরকারের মন্ত্রিসভায় স্থান পায়। আফতাবের মতো যারা বঙ্গবন্ধু এবং দেশকে জীবনের চেয়ে ভালোবাসতেন তারা সুবিধাভোগীদের দৃশ্যায়নে চমকে যায়। গল্পের বয়ানে বোঝা যায় বিশ্বাসঘাতকের মৃত্যু নেই। তারা সুবিধাভোগী শৃগাল। তাসাদ্দুক যার মরার খবরে আফতাব অন্য তাসাদ্দুকের মিষ্টি দানে স্মৃতি আওড়িয়েছে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর ষড়যন্ত্রকারী মন্ত্রিসভায় তাসাদ্দুকই মন্ত্রী সেই সংবাদে আফতাবের মতো জনকের সন্তানেরাও হতবিহŸল।

আনোয়ারা সৈয়দ হকের ‘সংকট’ পেশাগত সুবিধার বয়ান রয়েছে। গল্পের চরিত্র পেশায় চিকিৎসক লেখকও পেশায় চিকিৎসক ছিলেন। পাকিস্তানিরা পূবর্ পাকিস্তানিদের শিক্ষা দীক্ষায় ব্যবসা বাণিজ্যে চাকরি ক্ষেত্রে পেছনে রেখেছে। সুযোগ দেয়নি বাঙালিদের সে কারণে পিছিয়ে পড়েছে বাঙালিরা। নিকটাত্মীয় থাকলেই সুযোগ মিলেছে, ছালেহাই সে সুযোগ পেয়েছে। আমির্ মেডিক্যালে চাকরি পেয়ে স্বস্তি পাচ্ছে। এখানে রেশন, সস্তা জিনিসপাতি রয়েছে যা সহজে মেলা ভার। চাকরিজীবন তার ভালোই চলছে, হঠাৎ পেছনেই চোখ পড়ে তার। ঝুলানো লেখা সিকিউরিটি অ্যান্ড ইউনিটি ইজ দি মটো অব নেশন। ওপরে কায়েদে আজম মোহাম্মদ আলি জিন্নাহর ছবি এ বিষয়ে তার ঘোর লাগে। কীসের সিকিউরিটি, কীসের ইউনিটি, কোন নেশন। ঠিক সে সময়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে অসহযোগ আন্দোলন চলছে। জুলফিকার আলী ভুট্টো ক্ষমতা নিয়ে তালবাহানা করছে। জনরোষ থেকে জনস্রোত তৈরি হয়েছে। ঢাকার রাস্তায় মানুষের ঢল মুখে মুখে Ñ তোমার আমার ঠিকানা / পদ্মা মেঘনা যমুনা/ জাগো বাঙালি জাগো / বীর বাঙালি অস্ত্র ধর/বাংলাদেশ স্বাধীন কর/ ¯েøাগানে মুখরিত হয়।

পাকিস্তানি সরকার সকলের পেছনে খেয়াল রাখছে সালেহাকে কোনো মহিলা ফোন করা এবং তার মনমানসিকতা জানতে চাওয়া সে বিষয়েরই ইঙ্গিত বহন করে। সে অগ্রগামী পাটির্র সাহিত্য সম্পাদক ছিল ছায়ানটে রবীন্দ্র শতবাষির্কীতে যোগ দিয়েছিল এবং একুশে ফেব্রæয়ারি প্রোগ্রামে অংশ নিয়েছে। সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়েই টিকে থাকতে হয়েছে। ৭ই মাচের্র ভাষণ বাঙালি জাতির জাগরণের কৌশলী কাব্যশৈলী। সালেহার মামার মতো অনেকেই সেদিন রেসকোসর্ ময়দানে ভাষণ শুনার আগ্রহে পরিবার-পরিজন নিয়ে সমবেত হয়েছিল ফিরে প্রতিজ্ঞা করেছিল মুক্তিসংগ্রামের। সালেহাও এগিয়ে গেলো মাঠে লক্ষ লক্ষ কণ্ঠে নিরীহ বাঙালি সরব ¯েøাগান। ভয় শঙ্কা ও গৌরবে কেঁপে উঠে সালেহার শরীর। জনসমুদ্রের মাঝে ধীর পায়ে এলেন দেহাশ্রী মহানায়ক। অন্যদের মতো সালেহার মাঝে সান্নিধ্যের অনুরণন ঘটে। এরপর শোনা গেলো ‘Ñজাগিয়া উঠেছে প্রাণ ওরে উথলি উঠেছে বারি, / প্রাণের বাসনা প্রাণের আবেগ রুধিয়া রাখিতে নারি। /থর থর করি কাঁপিছে ভূধর, / শিলা রাশি রাশি পড়িছে খসে, / ফুলিয়া ফুলিয়া ফেনিল সলিল / গরজে উঠেছে দারুণ রোষে।’

হুমায়ুন আজাদের ‘জাদুকরের মৃত্যু’ ববর্রদের ছোবলে এদেশ বার বার বিপযর্স্ত হয়েছে। দেশের বৈচিত্র্য, যুবকের স্বপ্ন, শিশুর আনন্দ সব লুট হয়েছে। সেক্ষণে জাদুকরের আবিভার্ব হয়েছে যার জাদু সকলকে মুগ্ধ করে। জাদুকরের খবর ছড়িয়ে পড়ে পাড়াগঁায়ে, বিষণœ শহরে, উশকোখুশকো মাঠে, বিবণর্ বনে থেকে দেশের সবর্ত্র। জাদু দেখার জন্য জনতা চাষা ভূষা চৌরাস্তায় রাস্তাঘাটে যানবাহনে ভিড় করতে থাকে। জাদুকর আসার পর সকলেই নতুন করে স্বপ্ন দেখতে শুরু করে। সে জাদুকর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। অধিকারের প্রশ্নে স্বপ্ন ও সম্ভাবনাকে ধারণ করে জাদুকরের মতো আপামর জনতাকে সমবেত করেন। জেলজুলুমের মাঝে নিভর্য়ভাবে এগিয়ে যান তিনি। বণর্নায় দেখিÑ

“কয়েক মহূতের্ই জাদুকর বিদ্যুতের মতো হাত পা নাড়ল, তার শৃঙ্খল হাওয়ায় মিলিয়ে গেল। জাদুকর নতুন ধরনের রহস্যময় হাসি নিয়ে উঠে দঁাড়াল। চৌরাস্তায়, নানান রাস্তায়, দেশজুড়ে চাষি, মাঝি, মজুর, শ্রমিক, বিদ্যাথীর্, নারী, পুরুষ, পাখি ও প্রাণীর হাত পা শরীর থেকেও খসে হাওয়ায় মিলিয়ে গেলো শৃঙ্খল।” জাদুকরের আবিভার্ব এবং শেকল ও শৃঙ্খলের প্রতীকায়নে গল্পকারের নিবিড় তাত্তি¡কতা লক্ষণীয়। প্রথমত, মুক্ত করা হয়েছে। দ্বিতীয়ত, যে মুক্ত করলো তার হৃৎপিÐে ববর্র ছুরি বসিয়েছে তার লাশ পড়ে আছে চৌরাস্তায় আবার শেকল পরানো হয়েছে জনতার পায়ে অথার্ৎ স্বপ্ন জাদুকরকে হত্যা করলেও জনতা মুখ খুলতে পারেনি।। এখানে দেশীয় ও আন্তজাির্তক ষড়যন্ত্রে লিপ্ত বিপথগামী সেনাসদস্যরা বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে সেদিকে গল্পনিমার্তা তীরনিক্ষেপ করেছেন।

বাঙালি ঝাঁপিয়ে পড়ে লাভ করে লাল সবুজের পতাকা। মেহনতি মানুষের জীবনে গজাতে শুরু করে নতুন পাতা। কিন্তু নিমর্মতার ইতিহাসে ধেঁায়াটে হতে থাকে যখন স্বপ্নপুরুষকে হত্যা করা হয়। শেকল ও শৃঙ্খলে থাকে, কৃষক শ্রমিক কুলি মজুর নদীতে ময়লা হলো দেশ, পচন ধরলো শস্যে, মরা দোয়েলের মতো পড়ে রইলো দেশ। বণর্নায় “আমরা আবার পুনরাবৃত্তি করতে লাগলাম একই কথা। কারও সাথে দেখা হলেই বলতে লাগলাম, নদী শুকিয়ে যাচ্ছে, আকাশে বঁাশি বাজে না, বহুদিন মেলায় যাইনি, পুকুরে কি আবার মাছ দেখা দেবে?। জাদুকরের কথা... কোথা থেকে এসেছিলো সেই জাদুকর, যে আমাদের স্বপ্ন দেখিয়েছিল? স্বপ্নের মতো সত্য আর সত্যের মতো স্বপ্ন দেখানোর জন্যে সে আবার কবে আসবে?”

গল্পে জাদুকরকে লাভের আকুতি প্রিয় বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টা বঙ্গবন্ধুর প্রতি সহৃদয়তা একই সূত্রে লিপিবদ্ধ। মহান মুক্তিসংগ্রামের পর বিজয় ছিনিয়ে প্রজন্মের সামনে যে ভবিষৎ রচনা করেছেন। তা কোনকালেও ভুলবার নয়। যদিও কুচক্রীমহল থেমে নেই তারা কখনো থেমে ছিলো না। আমরা কী থেমে থাকব, আমাদের পঞ্চইন্দ্রীয়কে সজাগ রাখতে হবে। তার দেখানো স্বপ্নের মাঠে বাস্তবের উবর্রতায় এগিয়ে নতুনকে এনে দিতে হবে বাসযোগ্য পৃথিবী।

৭ই মাচের্র মহানায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তার ভাষণে মহাসাগরের কল্লোলে গজের্ উঠে জনস্রোত। দীঘর্ নয় মাসের পরিক্রমায় গবির্ত বাঙালি পায় স্বাধীন বাংলাদেশ। বিজয়ের পতাকা উড্ডীন বাংলার মুক্ত হাওয়ায়। লাল সবুজের দেশে কৃষক শ্রমিক কুলি মুজুর, ছাত্র শিক্ষক উদ্বিগ্ন জনতা অধীর আগ্রহে স্বপ্নকে লালন করে বাস্তবের মুখোমুখি দঁাড়ায়। নিভর্রশীল ও বিশ্বস্ত প্রতিনিধি হিসেবে ভরসার হাত রাখে মহান নেতার কঁাধে। দেশের জন্য একযোগে কাজ করার মানসিকতায় নিবেদিতপ্রাণ তিনি। ঝরাজীণর্ রাষ্ট্র রূপান্তরের ক্ষেত্রে সফলতার শীষির্বন্দুতে তিনি এগিয়ে। বৈষম্যবিহীন থেকে সুসংহত বাসযোগ্য স¤প্রীতির সন্ধানে সামষ্টিকভাবে চেতনায় ঐক্যবদ্ধ। চতুদিের্ক হাসি ও উত্তরণের হাওয়া সেক্ষণে ভেতর থেকে পুরনো শকুনের ভ্রƒণ স্তব্ধ রাতের অঁাধারে ছিনিয়ে নেয় মানবতাবাদী সংগ্রামী কালের বটবৃক্ষ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কণ্ঠস্বর। বিজয়ের রঙটা মলিন হয়ে যায়। শব্দশিল্পীরা কবিতা নাটক উপন্যাস প্রবন্ধ গল্পের শিরোনামে মহান নেতাকে গভীর মমতা দিয়ে সাহিত্যসৌধ নিমাের্ণ ব্রত হন। মুক্তিযুদ্ধ ও নেতার সূত্রবদ্ধতা বাঙালির কায়িকশ্রমের মৌল উপাদান।

বিজয়, বাঙালির হৃদয়ে গঁাথা বিশ্বাস। বুকে ধারণ করেই বঁাচতে হয়, একাত্তর বাঙালির চেতনা সংখ্যা। মনে পড়লেই ইতিহাসের পাতায় সংখ্যাটা জ্বলজ্বল করে ওঠে। বিযুক্ত হয় মহানায়কের নেতৃত্ব চেতনা হয়ে অঙ্কিত হয় মনের আকাশ। বিজয় আসে রাস্তায় রেললাইন, চায়ের দোকানে, আড্ডায় টক শো তে, মুখে মুখে বঙ্গবন্ধু ও ৭ই মাচের্র ভাষণ দেখি শরীরের লোমকুপ বন্ধুকের মতো দঁাড়িয়ে যায়। তিনি ছিলেন আছেন থাকবেন প্রজন্মের দুয়ারে দুয়ারে। সেই দুঃসময় শত ঝড়ের কবলে বাঙালিরা যখন জজির্রত। চারদিকে নাভিশ্বাস বাতাসে মৃতদের গন্ধ, নদী ভরে যায় লাশের মিছিলে। বাঙালি পা রেখেছে শক্ত ও স্থিরভাবে। কেঁপে উঠেছে ভয়ানক সিংহাসন। বিজয়ের মন্ত্র শিখিয়ে জাগিয়ে তুললেন তিনি ঝাঁকে ঝাঁকে তরুণ ও মেধাবীরা জাগ্রত হলো। একাত্মতা ঘোষণা করলো মেহনতি মানুষ। দীঘর্ নয় সংখ্যাকে মেড়ে লেজ গুটিয়ে পালাচ্ছে পাকিস্তানি পতঙ্গপাল। হুড় হুড় করে পতাকা তুলে ধরলেন বাঙালি। ক্ষুধাতর্ দেশ তৃষিত মানুষের মুখে হাসি ফুটাবার অপেক্ষায় মন্ত্রনায়ক। যিনি না এলে বিজয় আসতো না। মায়ের মুখে বাঙালিয়ানা হাসি ফুটতো না, কাতর হয়ে হুমড়ি খেয়ে পড়তো সোনামাখা দিন। তিনি নেই তার হৃদয়কে সাক্ষী রেখেই বিজয়ের পতাকা আকাশে নিজের মতো উড়ছে বিজয় শেখাচ্ছে মাতাচ্ছে দোলায়িত করছে বাংলাদেশের চতুপার্শ। গল্পের তালিকাও বড় হচ্ছে। কাতারে কাতারে প্রজন্ম ছুটছে ঢেউয়ের মতো ভিড়ছে জমা হচ্ছে হীরে রুপোর মতো জীবনের হিসেব। তার অপূণর্তায় বাঙালি নিজীর্ব চিরকাল। বিশ্ব অবাক হয়ে দৃষ্টি নিবন্ধ করছে এ কী স্বাধীন সাবের্ভৗম বাংলাদেশ স্বপ্নের মহানায়ক বঙ্গবন্ধুর সোনারপীতমে খচিত দেশ। গল্প চলছে বিজয় ও বঙ্গবন্ধু দুটোই সমান্তরাল। বিভক্তি নয় মোড় বা চাড় নয় বিযুক্ত তরঙ্গ ও আনন্দবাতাসের মোহনিয়তায় অপেক্ষার প্রহরে গোটা দেশ।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<26917 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1