এমনিতেই ঢাকার অদূরে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) প্রাকৃতিক সৌন্দযের্ ভরপুর। এখানকার ক্যা¤পাসের লেক আর সবুজ সবুজ বৃক্ষরাজি পাখপাখালিতে ভরপুর। পাখির কিচিরমিচিরে মুখরিত জাবি ক্যা¤পাস। আর শীতকালে পরিযায়ী (অতিথি) পাখি সৌন্দযের্ক বাড়িয়ে দেয় শতগুণে। বিপুল পরিমাণের অতিথি পাখি নাচ আর গানে ভরিয়ে তোলে ঢাকা-আরিচা রোডের কাছেই অবস্থিত জাবির ক্যা¤পাস। ক্যা¤পাস ও আশপাশের এলাকা মুখরিত হয় বণির্ল সাজ আর কুজনে। দারুণ অনুভ‚তি জন্ম দেয়। খারাপ মনকে জাগিয়ে আশার আলো দেখায় এ সৌন্দযের্।
বণির্ল পাখিদের সমাগমে যেন এক ভিন্ন রূপে আরিচা-ঢাকা রোডের জাবিসংলগ্ন স্থান থেকেই অঁাচ করা যায় সৌন্দযর্। দেয় ভেতরে ঢোকার হাতছানি। রঙবেরঙের পাখির ওড়াউড়ি আর তাদের মায়াবী ডানায় রৌদ্রছটার পরিবেশ দেখে ক্যা¤পাসে ঢুকতে মন চাইবে যে কারই।
এ ক্যা¤পাসে ছোটবড় মিলে প্রায় ১৫টি লেক আছে। এগুলোর মধ্যে প্রশাসনিক ভবনের সামনে, সুইমিং পুল সংলগ্ন লেকে এবং জাহানারা ইমাম ও প্রীতিলতা হল সংলগ্ন দুটি লেকে অতিথি পাখির আনাগোনা বেশি। সারাবছরই জাবি ক্যা¤পাস বিভিন্ন পাখপাখালিতে ভরপুর থাকে। মুখরিত থাকে ক্যা¤পাস, কুজনে। আর শীতকালে এ লেকগুলো ভরে যায় অতিথি পাখিতে। ক্যা¤পাসে ক্যা¤পাসে রঙবেরঙের পাখির ঝঁাপটায় আলোকিত হয়। পরিকল্পিত বিল্ডিং আর শীতের নানান রঙের পোশাকের নারী-পুরুষ দারুণ ল্যান্ডস্কেপ সৃষ্টি করে! দারুণ অনুভ‚তি! কথায় প্রকাশ করা যাবে না!
প্রতি বছর সেপ্টেম্বর মাসের পরে হিমালয়ের উত্তরের শীতপ্রধান অঞ্চল সাইবেরিয়া, মঙ্গোলিয়া থেকে পাখিরা উষ্ণতার খেঁাজে ৩০-৩৫ প্রজাতির পরিযায়ী পাখি বাংলাদেশ আসে। ভারত বা চীন থেকেও কিছু পাখি আসে। এদের বেশির ভাগই হঁাস জাতীয় ও পানিতে বসবাস করে। এর মধ্যে সরালি, পচাডর্, বালি হঁাস, লেঞ্জা হঁাস, পাতারি হঁাস, বৈকাল হঁাস, গিরিয়া হঁাস, ধূসর রাজহঁাস, ভ‚তি হঁাস, চিতি হঁাস, ফ্লাইফেচার, গাগেির্ন, ছোট জিরিয়া,পান্তামুখী, পাতারি, মুরগ্যাধি, কোম্বাডাক, পাতারী হঁাস, জলকুক্কুট, খয়রা ও কামপাখি অন্যতম। এ ছাড়া মানিকজোড়, কলাই, ছোট নগ, জলপিপি, নাকতা, খঞ্জনা, চিতাটুপি, লাল গুড়গুটি, বামুনিয়া হঁাস, লাল গুড়গুটি, নদার্নপিনটেল ও কাস্তে চাড়া প্রভৃতি পাখিও আসে। বাংলাদেশের যেসব এলাকায় অতিথি পাখি আসে তার মধ্যে জাহাঙ্গীরনগর (জাবি) ক্যা¤পাস অন্যতম। অক্টোবরের শেষ ও নভেম্বরের প্রথম দিকেই অতিথি পাখিরা বাংলাদেশে আসে। আবার মাচের্র শেষ দিকে ফিরে যায় আপন ঠিকানায়। এসব পাখি জলাশয় বা জলাশয়সংলগ্ন থাকতেই পছন্দ করে।
ঢাকা থেকে দূরত্ব প্রায় ২৫ কিলোমিটারের মতো। ঢাকার গুলিস্তান, ফামের্গট, মিরপুরের টেকনিক্যাল মোড় থেকে সহজেই বাস পাওয়া যায়। ভাড়া পড়বে ৩০ থেকে ৫০ টাকা। ক্যা¤পাসসংলগ্ন বা আশপাশে থাকা বা খাওয়ার প্রচুর ব্যবস্থা আছে। আশপাশেও অনেক দশর্নীয় বা সৌন্দযর্ উপভোগ করার মতো অনেক ¯পট রয়েছে। ঢাকার কোলাহল আর ব্যস্তময় জীবন থেকে একটু নিরিবিলি স্থানে যেতে পারেন যে কেউ। ছুটির দিনে পযর্টকের সংখ্যা বাড়ে। দেশি, নানান রঙঢঙের অতিথি পাখি, প্রজাপতি আর সবুজবৃক্ষরাজি থেকে একটু সময় নিয়ে ঘুরে আসতে পারেন।