বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪, ১৮ বৈশাখ ১৪৩১
বিশ্লেষণ

পথ খঁুজে হয়রান যুক্তরাজ্য

যাযাদি ডেস্ক
  ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ০০:০০
পথ খঁুজে হয়রান যুক্তরাজ্য

আসছে ২৯ মাচর্ ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বেরিয়ে যাবে যুক্তরাজ্য। কিন্তু দেশটির এই প্রস্থান কীভাবে হবে, সে বিষয়ে দেশটির এমপিরা একমত হতে পারছেন না। প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে সবার্ত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন, যাতে করে একটি চুক্তির ভিত্তিতে যুক্তরাজ্য ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) থেকে বেরিয়ে আসতে পারে। এ জন্য তিনি চান, এমপিরা যেন তাকে সমথর্ন করে।

গত মঙ্গলবার ব্রিটিশ এমপিরা ব্রেক্সিট ইস্যুতে আরও এক দফা ভোটাভুটিতে অংশ নেন। সেদিনও অনেক মতানৈক্য ছিল। কিন্তু একটি গুরুত্বপূণর্ বিষয়ে তারা একমত হয়েছেন। সেটি হচ্ছে, থেরেসা মে আবারও ইউরোপীয় ইউনিয়নের কাছে ফিরে যাবেন নতুন একটি চুক্তির বিষয়ে আলোচনার জন্য। এর একটি গুরুত্বপূণর্ দিক হলো ব্রেক্সিটের পর আয়ারল্যান্ডের সীমান্ত কেমন হবে, তা সুনিদির্ষ্ট করা।

এদিকে, ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে যুক্তরাজ্যের বেরিয়ে যাওয়ার আর মাত্র দুই মাস বাকি থাকলেও এখনো ব্রিটিশ সরকার ঠিক করতে পারেনি তারা কোন্ শতের্ বেরিয়ে যাবে। মঙ্গলবার পালাের্মন্ট ভোটাভুটির পর এই প্রতিক্রিয়া নিয়ে আরও জটিলতার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। ২০১৮ সালের নভেম্বর মাসে বেক্সিটের বিষয়ে একটি বড় অগ্রগতি হয়েছিল। ব্রিটিশ সরকার এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন ব্রেক্সিটের শতর্ ঠিক করার জন আলোচনা শুরু করে। সেই আলোচনার পর উভয়পক্ষ একটি চুক্তির বিষয়ে একমত হয়েছিল। সে সময় ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে বলেন, ব্রেক্সিট নিয়ে তকর্-বিতকর্ করে যুক্তরাজ্যের জনগণ আর সময় অপচয় করতে চায় না। কিন্তু মে’র জন্য চ্যালেঞ্জ ছিল, সেই চুক্তি ব্রিটিশ পালাের্মন্টে অনুমোদন করানো।

প্রধানমন্ত্রীর নিজের দল কনজারভেটিভ পাটির্র অনেক এমপি সেই চুক্তির বিপক্ষে ভোট দিয়েছেন। দুই সপ্তাহ আগে অনুষ্ঠিত সেই ভোটাভুটিতে থেরেসা মে সরকারের বড় পরাজয় হয়েছিল। মঙ্গলবার দিন শেষে সাতটি সংশোধনীর ওপর ভোট হয়। অধিকাংশ সংশোধনী বাতিল হয়ে যায় ভোটের মাধ্যমে। মাত্র দুটি সংশোধনী পাস হয়েছে।

এক, থেরেসা মে ব্রাসেলসে যে চুক্তি করেছিলেন, সেখানে বলা হয়েছে আয়ারল্যান্ড এবং নদার্নর্ আয়ারল্যান্ডের মধ্যকার সীমান্ত খুব কঠিন হবে না। অথার্ৎ, এই সীমান্ত দিয়ে যুক্তরাজ্য এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের মধ্যে কোনো রকম তল্লাশি ছাড়াই মালামাল পরিবহন করা যাবে। এটিই একমাত্র জায়গা, যেখানে যুক্তরাজ্য এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের স্থল সীমান্ত রয়েছে এবং এখানে অবাধে মানুষ চলাচল এবং বাণিজ্য হয়। থেরেসা মে’র কনজারভেটিভ পাটির্র ভেতরে অনেক প্রভাবশালী সদস্য রয়েছেন, যারা এর বিপক্ষে। তারা চান যুক্তরাজ্য এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের মধ্যকার সীমান্ত সম্পূণর্ আলাদা হতে হবে। ফলে থেরেসা যে চুক্তি করেছিলেন, সেটি বাস্তবায়নের সম্ভাবনা ক্ষীণ হয়ে গেছে।

দুই, অধিকাংশ এমপি বলেছেন, কোনো রকম চুক্তি ছাড়া ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বেরিয়ে আসা ঠিক হবে না। এ-সংক্রান্ত একটি সংশোধনীর পক্ষে মত দিয়েছেন তারা। এ ছাড়াও, আয়ারল্যান্ড সীমান্ত নিয়ে নতুন আলোচনার জন্য প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে ইউরোপীয় ইউনিয়নকে বলতে পারেন। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে, ইউরোপীয় ইউনিয়ন নতুন করে আলোচনা করতে চায় না এবং তারা নতুন আলোচনার কোনো কারণও খুঁজে পাচ্ছেন না। তারা বলছেন, সীমান্তের এ বিষয়টি এরই মধ্যে আলোচনার মাধ্যমে সমাধান হয়েছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য আয়ারল্যান্ডও এ বিষয়ে কোনো পরিবতর্ন চায় না।

অন্যদিকে, ইউরোপীয় ইউনিয়ন যদি নতুন আলোচনায় রাজি না হয় এবং ব্রিটিশ পালাের্মন্ট যদি বিষয়টি সুরাহা করতে না পারে, তখন একমাত্র উপায় হবে কোনো রকম চুক্তি ছাড়াই ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে যুক্তরাজ্যের বেরিয়ে আসা। এর অথর্ হবে কোনো রকম সময় ছাড়াই হঠাৎ করে বেরিয়ে যাওয়া। কিন্তু কোনো রকম চুক্তি ছাড়া যুক্তরাজ্য যদি ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বেরিয়ে যায়, তাহলে দেশটির জন্য ভালো হবে না। এর ফলে ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে খাদ্য এবং অন্যান্য জিনিসপত্র যুক্তরাজ্যে আসতে দেরি হবে। সে জন্য যুক্তরাজ্যের বাজারে কিছু পণ্যের দাম বেড়ে যাবে। যদিও ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বেরিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে আর দেরি করতে চান না ব্রিটিশ এমপিরা। ফলে ইউরোপ থেকে বেরুনোর পথ খঁুজে সত্যিই হয়রান যুক্তরাজ্য। সংবাদসূত্র : বিবিসি নিউজ

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<35043 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1