শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

পদ্মা সেতুর পঞ্চম স্প্যান

যথাসময়ে নিমার্ণকাজ শেষ হোক
নতুনধারা
  ৩০ জুন ২০১৮, ০০:০০

পদ্মা সেতুর নিমার্ণকাজ এগিয়ে চলেছে। পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবরের মাধ্যমে জানা গেল, প্রমত্তা পদ্মা নদীতে সেতুর পঞ্চম স্প্যানও বসেছে। তথ্য মতে, শুক্রবার বেলা পৌনে ১টার দিকে নদীর দক্ষিণ প্রান্তে ৪১ ও ৪২ নম্বর খুঁটির ওপর স্প্যানটি বসানো হয়। ফলে এর মধ্য দিয়ে মানুষের আশাজাগানিয়া সেতুর পৌনে এক কিলোমিটার দৃশ্যমান হলো, যা অত্যন্ত সুখকর বলেই প্রতীয়মান হয়। সেতুর এই পঞ্চম স্প্যানটি বসানো হয়েছে শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার নাওডোবা এলাকায়। স্প্যানটি জাজিরা প্রান্তের তীরের দিকের শেষ স্প্যান। পদ্মা সেতু প্রকল্পের সংশ্লিষ্ট কমর্কতার্ জানিয়েছেন, ১৫০ মিটার দীঘর্ এই স্প্যানটি ৪১ ও ৪২ নম্বর পিলারের (খুঁটি) ওপর বসানো হওয়ায় পদ্মা সেতুর ৭৫০ মিটার দৃশ্যমান হলো।

প্রসঙ্গত বলা দরকার যে, ২০১৭ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর ৩৭ ও ৩৮ নম্বর খুঁটিতে প্রথম স্প্যানটি বসানোর মধ্য দিয়ে দৃশ্যমান হয়েছিল পদ্মা সেতু। এরপর এ বছরের ২৮ জানুয়ারি ৩৮ ও ৩৯ নম্বর খুঁটিতে বসানো হয় দ্বিতীয় স্প্যান। গত ১১ মাচর্ ৩৯ ও ৪০ নম্বর খুঁটির ওপর বসে তৃতীয় স্প্যান। এরপর ১৩ মে ৪০ ও ৪১ নম্বর খুঁটির ওপর চতুথর্ স্প্যান বসানো হলে সেতুর ৬০০ মিটার দৃশ্যমান হয়। আমরা বলতে চাই, একটা সময়ে পদ্মা সেতু নিয়ে নানা ধরনের অনিশ্চয়তা সৃষ্টি হলেও আজ আর এই সেতু স্বপ্নে আটকে নেই, যা সামগ্রিকভাবেই ইতিবাচক। সঙ্গত কারণেই সাবির্ক পরিস্থিতি পযের্বক্ষণ সাপেক্ষে সংশ্লিষ্টদের কতর্ব্য হওয়া দরকার, যথাসময়েই সেতুর কাজ যেন শেষ করা সম্ভব হয় সেই প্রচেষ্টাকে সামনে রেখে কাযর্কর পদক্ষেপ অব্যাহত রাখা। সংশ্লিষ্টদের বলতে চাই, সেতুর কাজ এগিয়ে চলেছে এটা বলার অপেক্ষা রাখে না। ফলে কোনোভাবেই কাজে যেন ধীরগতি বা বাধাগ্রস্ত না হয় সেটিও আমলে নিতে হবে। কেননা যথাসময়ে শেষ করতে না পারার দরুন ব্যয় বৃদ্ধিসহ নানা ধরনের অনাকাক্সিক্ষত পরিস্থিতির আশঙ্কা থাকে, যা কাম্য নয়। কাযর্কর পদক্ষেপ এবং সঠিক ব্যবস্থাপনার মধ্যদিয়ে নিদির্ষ্ট সময়েই পদ্মা সেতুর কাজ যথাযথভাবে শেষ হবে এমনটি কাম্য।

আমরা উল্লেখ করতে চাই, ২০০১ সালের ৪ জুলাই পদ্মা সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হলেও এই সেতু নিয়ে নানা ধরনের বিলম্ব প্রক্রিয়া চলতে থাকে। আর ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ আবার ক্ষমতায় আসার পর ফেব্রæয়ারি মাসে পদ্মা সেতুর নকশার জন্য পরামশর্ক নিয়োগ করা হয়। প্রকল্পে প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকার ঋণ সহায়তার প্রস্তাব নিয়ে আসে বিশ্বব্যাংক। এরই অংশ হিসেবে সেতুর পরামশর্ক নিয়োগে ২০১১ সালে দুনীির্তর অভিযোগ তোলে বিশ্বব্যাংক। বিশ্বব্যাংকের দেখাদেখি অন্য দাতাসংস্থাগুলো এক এক করে মুখ ফিরিয়ে নেয়। সৃষ্টি হয় নানা ধরনের আশঙ্কা। কিন্তু সব আশঙ্কা দূর করে এবং বাধাকে মোকাবেলা করে ২০১৫ সালের ১২ ডিসেম্বরে ১১টা ১৬ মিনিটে মুহুমুর্হু করতালির আওয়াজের সঙ্গে বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী হাইড্রলিক হ্যামারে নদীর তলদেশে গভীর থেকে গভীরে প্রোথিত হতে থাকে পদ্মা সেতুর মূল পাইল। এর পর আর পেছনে তাকাতে হয়নি, এগিয়ে চলেছে পদ্মা সেতুর নিমার্ণকাজ।

সবোর্পরি আমরা বলতে চাই, পদ্মা সেতুর যথাযথ বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে সামগ্রিক পদক্ষেপ অব্যাহত রাখতে হবে। মনে রাখা দরকার, সেতুটির নিমার্ণকাজ শেষ হলে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের ২২ জেলার সঙ্গে সড়ক ও রেলপথে সরাসরি যুক্ত হবে রাজধানী ঢাকা। অথর্নীতিবিদরাও মনে করেন, পদ্মা সেতু চালু হলে দেশের আথির্ক প্রবৃদ্ধিও বাড়বে। ফলে যথাসময়ের মধ্যেই পদ্মা সেতুর কাজ শেষ হোক এমনটি আমাদের প্রত্যাশা।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে