শিশুরা শিক্ষার আলোয় আলোকিত হোক
শিশুরা নিষ্পাপ। তারা আগামীর সম্ভাবনা। এ দেশে আজো আশপাশে অনেক শিশু অনাহারে-অর্ধাহারে দিন অতিবাহিত করছে। তাদের যেমন ঠিকমতো খাদ্য জোটে না তেমনি জোটে না একটি ভালো পোশাকও। ছেঁড়া পোশাক পরে অনেক সময় ডাস্টবিনে ফেলে দেয়া পচা খাবার সংগ্রহ করে দেহের ক্ষুধা মেটানোর চেষ্টা করে।
কিছু শিশু আমাদের সমাজের ধনী শ্রেণীর চোখে পড়লেও না দেখার ভাব করে এড়িয়ে চলে। কিন্তু যে শিশুগুলো আজ ভাগ্যাহত বা সুবিধাবঞ্চিত তারাও ভালোভাবে গড়ে উঠতে পারত। কিন্তু জন্মস্থানের একটু পার্থক্যের কারণে আজ অনেক নিচে নেমে গেছে। সমাজের বিবেকবান মানুষের আচরণ দেখে মনে হয় জন্মই তাদের আজন্ম পাপ। কিন্তু সহযোগিতা করতে না পারলেও অন্তত আমরা একটু ভালো ব্যবহার করতে পারি এসব ভাগ্যাহত শিশুদের সঙ্গে। আবার কোনো কোনো সময় সামর্থ্য হলে তাদের সাহায্যও করতে পারি।
মানুষ মানুষের জন্য। মরে গেলে কেউ তার ধন-সম্পদ নিয়ে যায় না। আমাদের অর্জিত অর্থ থেকে এ দেশের সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের সহায়তা করলে তারা একটু ভালোভাবে জীবন অতিবাহিত করতে পারবে। তাদের শিক্ষার মতো মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত না রেখে আমরাই পারি শিক্ষিত করে গড়তে। তাই নিজ নিজ অবস্থান থেকে আমাদের চেষ্টা করতে হবে শিশুরা যেন আর ডাস্টবিনে পশু-পাখির সঙ্গে পালস্না দিয়ে খাদ্য সংগ্রহ না করে। তারা যেন আমাদের ছেলেমেয়েদের মতো সুবিধা পায় এবং শিক্ষার আলোয় নিজেকে আলোকিত করতে পারে।
শাহাদাত হোসেন
শিক্ষার্থী
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়
বন্যপ্রাণী রক্ষার উপায় কী?
বনের প্রাণীরা বনেই সুন্দর কিন্তু কাঙ্ক্ষিত বনই যদি না থাকে তবে এদের আবাস মিলবে কোথায়? আর আবাস না থাকলে তাদের জীবনবৃত্তিই বা ঘটবে কীভাবে? আজ বনবিহীন বন্যপ্রাণীদের বংশ বিস্তার থেকে শুরু করে স্বাভাবিক বিচরণের কোনো নিশ্চয়তা নেই। অথচ প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষায় বনরক্ষা ভিন্ন অন্য কোনো বিকল্প নেই। আগে বাংলাদেশের অধিকাংশ গ্রামে জঙ্গল দেখা যেত। সেখানে সাপ, ব্যাঙ, বেজি, বনবিড়াল, খরগোশ, কাঠবিড়ালিসহ বিচিত্র প্রাণীর দেখা মিলত। কিন্তু বসতি ও কৃষিজমি বিস্তারের সঙ্গে সঙ্গে বনজঙ্গল উধাও হয়ে গেছে। তাছাড়া সরকারি বনাঞ্চল যেভাবে দখল হয়ে যাচ্ছে সেখানে এদের আশ্রয় কতদিন মিলবে তা প্রশ্নসাপেক্ষ। তবে বন্যপ্রাণীদের সংরক্ষণের উপায় কী? বন্যপ্রাণী শিকারের প্রবণতা দূর করা দরকার। এজন্য সবাইকে সচেতন হতে হবে। পাশাপাশি সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগে বন সৃজনের কার্যক্রম হাতে নেয়া যেতে পারে। বন থাকলেই কেবল বন্যপ্রাণীদের আশ্রয় মিলবে।
সুমন আহমেদ
দত্তপাড়া, নরসিংদী
অপসংস্কৃতির জয়গান বন্ধ হোক
নব্বই দশকের শেষের দিকে ক্যাবল নেটওয়ার্কের মাধ্যমে বৈপস্নবিক পরিবর্তন ঘটে আমাদের দেশে। হাঁটি হাঁটি পা পা করে এই নেটওয়ার্ক আজ শহর থেকে গ্রামেও শোভা পাচ্ছে। একটা সময় ছিল, যখন শহুরে মায়েরা তাদের ছেলেমেয়েদের সন্ধ্যা হলে পড়াতে বসতেন আর গ্রামের গৃহবধূরা সাঁঝের বেলায় সাংসারিক কাজ শেষ করে হাতের তৈরি রকমারী পণ্য বানাতে বসতেন বা গল্প করে সময় পার করতেন; কিন্তু আজ তাদের বিনোদিত করতে ডিশ ক্যাবলের বিকল্প বোধহয় খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। এখনকার সময়ে আমাদের দেশে ডেইলি সোপ-খ্যাত সিরিয়ালগুলো জায়গা করে নিয়েছে দর্শকদের হৃদয়ে। কিন্তু এগুলোর পাশাপাশি পাশ্চাত্য বা পাশের দেশ ভারতের অনুষ্ঠানগুলোও স্থান দখল করে নিচ্ছে। এসব অনুষ্ঠানের মধ্যে ডেইলি সোপ-খ্যাত সিরিয়াল অন্যতম। হোক সেটা বাংলা বা হিন্দি। এর মূল আকর্ষণ থাকে অগভীর কাহিনী, বাহারি পোশাক, কড়া মেকআপ, উগ্রজীবনবোধ, অশালীন সংলাপ, অশালীন দৃশ্যায়ন ও অশালীন পোশাক। আজকাল আমাদের দেশে তাদের প্রোগ্রাম বা ড্রেসের স্টাইল দিয়ে পোশাকের নামকরণ করা হয়। তাদের সাজপোশাকে এসব অশালীন ভাব দেখে মনে হয় 'যাত্রাপালা' দেখছি। কাহিনীর মধ্যে নেই কোনো গভীরতা। একমাত্র বিষয় 'প্রেম' ও প্রতিহিংসা। একজনের একাধিক স্বামী বা স্ত্রী থাকতে পারে। অনৈতিক সম্পর্কে জড়ানোটাও তাদের কাছে ছেলেখেলা এবং 'জারজ' সন্তানকেও তারা হাইলাইট করে গল্পে টুইস্ট আনার জন্য। আরো রয়েছে বিজ্ঞাপন বিরতি, যার দৈর্ঘ্য সেই এপিসোড এর সমান। এসব বিজ্ঞাপনের কিছু আবার অশালীন দৃশ্যে ভরপুর।
এতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে আমাদের শিশু-কিশোর তথা টিনএজার। কারণ স্বল্পবসনা এসব নারী তাদের পর্দায় যেভাবে উপস্থাপন করছে, তাতে নৈতিকতাবোধ বা মানসিক বিকাশ কেমন হবে তা বোদ্ধামাত্রই বুঝেছেন। মানসিক বিকৃতিপূর্ণ এসব সিরিয়াল বা ছবি দেখে স্বাভাবিক বিকাশই অস্বাভাবিক। আকাশ সংস্কৃতির নামে এই অপসংস্কৃতির জয়গান বন্ধ করা হোক।
মাহফুজা রহমান
ঢাকা