বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪, ১৮ বৈশাখ ১৪৩১

ডিম পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধি

দ্রম্নত কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে
নতুনধারা
  ০৭ জুলাই ২০১৯, ০০:০০
ডিম পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধি

ডিমের গুরুত্ব নতুন করে বলার কিছু নেই। প্রাণিজ আমিষের চাহিদা পূরণ, স্বাস্থ্যবান ও মেধাবী জাতি গঠনে ডিমের গুরুত্ব অপরিহার্য। তা ছাড়া ডিম সুস্বাদু ও মুখরোচক পুষ্টিসমৃদ্ধ খাবার। শিশুদের ডিম খুবই প্রিয়। কিন্তু দুঃখজনক বাস্তবতা হচ্ছে, আবারও বেড়েছে ডিমের দাম। রাজধানীর বাজারগুলোতে সপ্তাহের ব্যবধানে হঠাৎ বেড়েছে ডিমের দাম। বেড়েছে পেঁয়াজের ঝাঁজ। খুচরা বাজারে প্রতি ডজন ডিমের দাম বেড়েছে পাঁচ টাকা। একই সঙ্গে পেঁয়াজের দামও কেজিতে বেড়েছে পাঁচ থেকে আট টাকা। বাজারে প্রতি ডজন ডিম ১১৫-১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এক সপ্তাহ আগেও ডিমের ডজন বিক্রি করেছেন ১০৫-১১০ টাকায়। খুচরা পর্যায়ে মুদি দোকানে এক পিস ডিম বিক্রি হচ্ছে ১০-১১ টাকায়। আর হালি হিসেবে বিক্রি হচ্ছে ৪০-৪২ টাকা। সে হিসাবে তারা প্রতি ডজন ডিম বিক্রি করছেন ১২০-২৬ টাকা। অথচ এক সপ্তাহ আগেও খুচরা দোকানগুলোতে ১০৫ টাকা ডজন ডিম পাওয়া গেছে। এ ছাড়া সপ্তাহের ব্যবধানে পেঁয়াজের দামও কেজিতে বেড়েছে পাঁচ থেকে আট টাকা। বর্তমানে বাজারে প্রতিকেজি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৩৫ থেকে ৩৮ টাকায়। যা গত সপ্তাহে ছিল ৩০ থেকে ৩২ টাকা। বিক্রেতারা বলছেন, বাজারে এখন ডিমের চাহিদা অনেক। কারণ মাছ-মাংসের দাম বেশি। ফলে খামারিরা চাহিদা অনুযায়ী ডিম সরবরাহ করতে পারছেন না। চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম থাকায় দাম বেড়ে গেছে। এ ছাড়া বর্ষার মৌসুমে ডিমের উৎপাদনও কমে যায়। ডিমের উৎপাদন ও সরবরাহ কম থাকার কারণে এমন বৃদ্ধি ঘটেছে- এটা কতটা যৌক্তিক। ডিমের দামের বৃদ্ধি যেভাবেই ঘটুক এটা মেনে নেয়া যায় না। কারণ ডিম স্বল্প আয়ের মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে। বিশ্ব ডিম দিবসের প্রতিপাদ্য ছিল 'সুস্থ সবল জাতি চাই, সব বয়সেই ডিম খাই'। ডিমের চাহিদার কথা কোনোভাবেই অস্বীকার করার উপায় নেই। এতদিন অসচ্ছল পরিবার মাছ-মাংস কিনতে না পারলে এর বিকল্প হিসেবে খাদ্য তালিকায় ডিম রাখত। আর যারা সচ্ছল তারা প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় ডিম রাখে। আর রান্নায় পেঁয়াজের গুরুত্বের কথা তো বলাই বাহুল্য।

ডিম পেঁয়াজ যদি সাধারণ জনগণের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে যায় তা হলো এর চেয়ে খারাপ খবর আর কী হতে পারে? পণ্যের উচ্চ মূল্য এই ধরনের সংবাদ প্রায়ই প্রত্যক্ষ করতে হয় দেশের জনগণকে। আগামী দিনগুলোতে ডিম পেঁয়াজের দাম আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। অবশ্য এসব বাংলাদেশের মানুষের গা সওয়া হয়ে গেছে। আসলে মুক্ত বাজার অর্থনীতির নামে চলছে অরাজকতা আর খামখেয়ালিপনা। দাম বাড়ানোর সঙ্গে পণ্যের সংকট কিংবা সরবরাহের কোনো সম্পর্ক নেই। এটা হচ্ছে ব্যবসায়ীদের প্রতারণাপূর্ণ লোভী মানসিকতা। শুধু কি ডিম-পেঁয়াজ? বাজারে প্রতিটি পণ্যের মূল্যই চড়া। মাছের দাম এতটাই বেড়েছে, স্বল্প আয়ের মানুষের পক্ষে মাছ কেনা অসম্ভব হয়ে উঠেছে। আর গরু ও খাসির মাংসের বাজারে আগুন আগে থেকেই।

আমরা মনে করি, জনগণকে বারবার দুর্ভোগ ও অসহায়ত্বে ফেলে দেয়া কোনো গণতান্ত্রিক সরকারের কাজ নয়। সে জন্য সরকারকে দ্রম্নত কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। তবে বাজার পরিস্থিতি পাল্টানোর জন্য সবার আগে প্রয়োজন বিক্রেতাদের অসৎ, লোভী ও প্রতারণামূলক মানসিকতার পরিবর্তন। নিতে হবে দীর্ঘমেয়াদি উদ্যোগ ও পরিকল্পনা। যতদিন পাইকারি ও খুচরা ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে ফুটপাতের দোকানদারদের মানসিকতার পরিবর্তন না হবে, ততদিন বাজার নিয়ন্ত্রণহীন থাকবেই। আর এর শিকার হবে দেশের অসহায় জনগণ।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<56965 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1