শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

খালেদা জিয়ার জামিন আবেদনের শুনানি আজ

যাযাদি রিপোর্ট
  ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ০০:০০
আপডেট  : ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ০০:১৮
খালেদা জিয়া

জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জামিন আবেদনের শুনানির দিন আজ রোববার ধার্য করেছেন হাইকোর্ট। জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জামিন আবেদনটি বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ও বিচারপতি একেএম জহিরুল হকের হাইকোর্ট বেঞ্চের রোববারের কার্যতালিকার এক নম্বর ক্রমিকে রয়েছে। ওই মামলায় গত মঙ্গলবার খালেদা জিয়ার জামিন চেয়ে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখার আবেদন করেন তার আইনজীবীরা, যা বুধবার আদালতে তুলে ধরা হয়। ওইদিন আদালতে খালেদা জিয়ার পক্ষে ছিলেন আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন, জয়নুল আবেদীন, কায়সার কামাল প্রমুখ। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পক্ষে ছিলেন আইনজীবী খুরশীদ আলম খান। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, জামিন আবেদনে খালেদা জিয়ার গুরুতর অসুস্থতার কথা উলেস্নখ করা হয়। এতে বলা হয়, তার উন্নত চিকিৎসা প্রয়োজন। চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে, তথা যুক্তরাজ্যের মতো দেশে তার অ্যাডভান্সড ট্রিটমেন্ট বা বায়োলজিক এজেন্ট নামের থেরাপি নেওয়া প্রয়োজন। দেশের বাইরে মডার্ন অ্যাডভান্সড থেরাপি ট্রিটমেন্ট নিতে এই জামিন আবেদন করা হয়। কিন্তু খালেদা জিয়ার জামিন, নাকি প্যারোলে মুক্তি, তা নিয়ে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপির নেতাদের মধ্যে বিতর্ক চলছে। সরকারি দলের মন্ত্রী ও নেতারা বিএনপিকে প্যারোলে মুক্তির ব্যাপারে উৎসাহ দেখাচ্ছেন, যাতে বিএনপি এ প্রক্রিয়ায় আবেদন করে। কিন্তু বিএনপি সেদিকে যেতে চায় না, তারা আইনি প্রক্রিয়ায় জামিন চায়। এর আগে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় হাইকোর্টে জামিন চেয়ে বিফল হয়ে গত বছরের ১৪ নভেম্বর আপিল বিভাগে জামিন চেয়ে আবেদন করেছিলেন খালেদা জিয়া। ১২ ডিসেম্বর আপিল বিভাগ খালেদা জিয়ার জামিন চেয়ে করা আবেদন পর্যবেক্ষণসহ খারিজ করে দেন। তখন আদালত বলেছিলেন, যদি আবেদনকারী (খালেদা জিয়া) প্রয়োজনীয় সম্মতি দেন, তাহলে মেডিকেল বোর্ড দ্রম্নত তার অ্যাডভান্স ট্রিটমেন্টের জন্য পদক্ষেপ নেবে, যা বোর্ড সুপারিশ করেছে। এর দুই মাসের মাথায় গতকাল জামিন আবেদন হলো। ২০১৮ সালের ২৯ অক্টোবর জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় খালেদা জিয়াকে সাত বছরের কারাদন্ড ও ১০ লাখ টাকা অর্থদন্ড দেন আদালত। খালেদা জিয়ার জামিন চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করা হলে গত বছরের ৩১ জুলাই তা খারিজ হয়। এর আগেই জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রম্নয়ারি খালেদা জিয়ার পাঁচ বছরের কারাদন্ড ও অর্থদন্ড হয়। এর বিরুদ্ধে খালেদা জিয়া হাইকোর্টে আপিল করেন। অন্যদিকে দুদক তার সাজা বৃদ্ধি চেয়ে আবেদন করে। শুনানি শেষে হাইকোর্ট খালেদা জিয়ার সাজা বাড়িয়ে ১০ বছরের কারাদন্ড দেন। এর বিরুদ্ধে গত বছরের ১৪ মার্চ লিভ টু আপিল করেন খালেদা জিয়া। সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে দুর্নীতি, হত্যা, নাশকতা, রাষ্ট্রদ্রোহ, মানহানি ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতিসহ ৩৭টির বেশি মামলা রয়েছে। জিয়া অরফানেজ ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ১৭ বছর দন্ডিত হয়ে খালেদা জিয়া কারাবন্দি আছেন। শারীরিক অসুস্থতা বেড়ে গেলে গত বছরের এপ্রিলে চিকিৎসার জন্য তাঁকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি করা হয়। সেই থেকে তিনি বঙ্গবন্ধু মেডিকেলে আছেন।

খালেদার জামিন শুনানি: বিএনপির জ্যেষ্ঠ নেতাদের ৪ ঘণ্টার বৈঠক

উচ্চ আদালতে খালেদা জিয়ার জামিন আবেদনের শুনানির আগের দিন চার ঘণ্টার বৈঠক করলেন বিএনপির সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম স্থানীয় কমিটির সদস্যরা।

শনিবার বিকাল ৪টা থেকে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এই বৈঠকে স্কাইপের মাধ্যমে লন্ডন থেকে যুক্ত হন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

তার সভাপতিত্বে বৈঠকে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মওদুদ আহমদ, জমিরউদ্দিন সরকার, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খান ও আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠকের পর আলোচনার বিষয়বস্তু সম্পর্কে মির্জা ফখরুল সাংবাদিকদের কিছু বলেননি। তবে বৈঠকে অংশ নেওয়া একাধিক নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, রোববার হাইকোর্টে যে মামলায় খালেদা জিয়ার জামিন আবেদনের শুনানি হবে, সেই জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলার বিষয়বস্তু নিয়ে পর্যালোচনা করা হয়েছে।

এই মামলায় জামিন হলে দুই বছর ধরে কারাবন্দি খালেদা জিয়ার মুক্তিতে আর বাধা থাকবে না বলে আশা করছেন বিএনপির আইনজীবীরা।

রোববার হাইকোর্টের বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ও বিচারপতি কে এম জহিরুল হকের বেঞ্চে খালেদার এই জামিন আবেদনের শুনানি হবে। গত বুধবার খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা এ আবেদন করেন।

অসুস্থতা ও বয়স বিবেচনায় ‘মানবিক কারণে’ খালেদা জিয়ার জামিন চেয়ে আবেদনে বলা হয়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে তার উন্নত চিকিৎসা হচ্ছে না। জামিন পেলে তিনি চিকিৎসা জন্য বিদেশে যেতে চান।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে