শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

সবজির দামে অতিষ্ঠ সাধারণ মানুষ

ক্রেতাদের অভিযোগ বাজারে কার্যকর মনিটরিং না থাকায় মাসের পর মাস চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে সবজি
যাযাদি রিপোর্ট
  ০৯ নভেম্বর ২০১৯, ০০:০০
আপডেট  : ০৯ নভেম্বর ২০১৯, ১০:২৭
সবজি

শীতের আগাম শাক-সবজির সরবরাহ বাড়লেও রাজধানীর বাজারে কমছে দাম। উল্টো সপ্তাহের ব্যবধানে কিছু সবজির দাম বেড়েছে। সব ধরনের শাক-সবজির চড়া দামে অতিষ্ঠ ক্রেতারা। কিন্তু বাড়তি দামের হাত থেকে তাদের রক্ষা পাওয়ার কোনো উপায় নেই। ফলে সবজি বাজারে ক্রেতাদের হাহুতাশ বাড়ছে। ক্রেতাদের অভিযোগ বাজারে কার্যকর মনিটরিং না থাকায় মাসের পর মাস চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে সবজি। এতে সাধারণ মানুষের পকেট কাটা গেলেও, মুনাফা লোভি এক শ্রেণির পকেট ভারি হচ্ছে। বাজারে যে হারে সবজির সরবরাহ রয়েছে তাতে সংশ্লিষ্টদের কড়া নজরদারি থাকলে দাম কমে যাবে। রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ছয়টি সবজির কেজি ১০০ টাকা বা তার বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। পেঁপে বাদে বাকি সবজির কেজি ৫০ টাকা স্পর্শ করেছে। ৫০ টাকার নিচে থাকলেও সপ্তাহের ব্যবধানে পেঁপের দাম কেজিতে ১০ টাকা বেড়েছে। শুক্রবার (৮ নভেম্বর) রাজধানীর কারওয়ান বাজার, রামপুরা, মালিবাগ হাজীপাড়া, খিলগাঁও এলাকার বিভিন্ন বাজার ঘুরে এ তথ্য পাওয়া গেছে। সবজির চড়া দামের কারণে ক্রেতাদের একটি অংশ সবজি খাওয়া কমিয়ে দিয়েছেন। সরবরাহ বাড়ার পরও দাম না কমায় বিক্রিতারাও অবাক হচ্ছেন। খুচরা বিক্রেতাদের অভিমত, আড়তে গেলে পছন্দমতো সব ধরনের সবিজ পাওয়া যাচ্ছে। কিন্তু দাম বেশি। বেশি দামে কেনার কারণে বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। আর পাইকারি বিক্রেতাদের অভিমত, যে হারে সবজির সরবরাহ বাড়ছে, চাহিদা তার থেকে বেশি। এ কারণে দাম তুলনামূলক বেশি। কারওয়ান বাজারের ব্যবসায়ী আলী হোসেন বলেন, শীতের সব ধরনের আগাম সবজির সরবরাহ বেড়েছে এটা সত্য। তবে সবজি যে হারে আসছে, চাহিদা তার থেকে অনেক বেশি। চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম থকায় দাম চড়া। তিনি আরও বলেন, অন্য পণ্যের মতো কাঁচামাল মজুদ রেখে বাজারে সংকট বাড়ানো যায় না। কারণ কাঁচামাল মজুদ করলে পচে যায়। তাই সিন্ডিকেট করে কাঁচামালের দাম বাড়ানোর সুযোগ নেই। সরবরাহ বাড়লে স্বাভাবিকভাবেই সবজির দাম কমে যাবে। বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, বাজারে নতুন আসা গোল আলুর কেজি বিক্রি হচ্ছে ১০০-১২০ টাকা। ১০০ টাকা কেজির এ তালিকায় রয়েছে- পাকা টমেটো, শিম, গাজর, শশা, বরবটি। পাকা টমেটো ১০০-১২০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে, যা গত সপ্তাহে ছিল ১৪০-১৬০ টাকা। আর শিম, গাজর, শশা ও বরবটির কেজি বিক্রি হচ্ছে ৮০-১০০ টাকা। এর মধ্যে সরবটি ও শসার দাম বেড়েছে। সপ্তাহের ব্যবধানে দাম বাড়ার তালিকায় রয়েছে শীতের আগাম সবজি ফুলকপিও। গত সপ্তাহে ২০-২৫ টাকা পিস বিক্রি হওয়া ফুলকপির দাম বেড়ে ৩০-৪০ টাকা হয়েছে। একই দামে বিক্রি হচ্ছে বাঁধাকপি। আর গত সপ্তাহে ১৫-২০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া পেঁপের দাম বেড়ে হয়েছে ৩০-৩৫ টাকা। তবে সপ্তাহের ব্যবধানে বেগুনের দাম কিছুটা কমেছে। গত সপ্তাহে ৮০-১০০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া বেগুনের দাম কমে ৪০-৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। মুলার কেজি আগের সপ্তাহের মতোই ৪০-৫০ টাকা কেজি রয়েছে। মাঝারি আকারের লাউ বিক্রি হচ্ছে ৭০-৮০ টাকা পিস। করলা ৬০-৭০ টাকা কেজি। চিচিংগা, ঝিঙা, ধুনদলের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫০-৭০ টাকার মধ্যে। এ সবজিগুলোর দাম সপ্তাহের ব্যবধানে অপরিবর্তিত রয়েছে। সবিজর দামের বিষয়ে রামপুরার বাসিন্দা মিলন বলেন, প্রায় এক বছর ধরে সব ধরনের সবজি চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে। সবজির দাম শুনতেই মন খারাপ হয়ে যায়। কোনো সবজির দামই মন ভালো করার মতো না। কচুর লতির কেজিও ৮০ টাকা। ৫০ টাকার নিচে কোনো সবজি পাওয়া যাচ্ছে না। বেশিরভাগ সময় এক পোয়া (২৫০ গ্রাম) করে সবজি কিনি। শুধু আমি একা নয়, বাজারের বেশিরভাগেরই এ অবস্থা। কারওয়ান বাজার থেকে বাজার করা মো. আলম বলেন, এক মাসের বেশি সময় ধরে শুনছি শিগগির সবজির দাম কমবে। কিন্তু সপ্তাহ ঘুরে বাজারে তার কোনো প্রতিফল দেখতে পাই না। প্রতি সপ্তাহেই সবজির দাম শুনে হতাশ হই। সবকিছুর দাম চড়া। তিনি বলেন, এমন চড়া দামে নিম্ন আয়ের মানুষের পক্ষে পছন্দ মতো সবজি কিনে খাওয়া কষ্টকর। আপনি নিজেই দেখেন ১০০ টাকা কেজি টমেটো, গাজর, শসা কেনা কয়জনের পক্ষে সম্ভব। সবজির এমন দামে মানুষ অতিষ্ঠ হবে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু কারও কিছু করার নেই। কারণ সবজি এমন বস্তু কিনতেই হবে। সেটা কম হোক বা বেশি। এদিকে সবজির পাশাপাশি চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে সব ধরনের শাক। পালন শাকের আটি বিক্রি হচ্ছে ২০-৩০ টাকা। লাল শাক ১৫-২০ টাকা আটি। একই দামে বিক্রি হচ্ছে মুলা শাক, সরিষা শাক, সবুজ শাক।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে